আর কয়েকটা দিনের অপেক্ষা মাত্র। ১২ ই মার্চ চলেই এলো বলে। মানে, বুঝতেই পারছ মাধ্যমিক পরীক্ষার কথা বলছি। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় বসতে চলেছো এবার যারা, স্বাভাবিক ভাবেই তাদের মধ্যে একটা চাপা টেনশন তো কাজ করছেই। এমনিতেই পরীক্ষা মানেই টেনশন, তারপর আবার এত বড় পরীক্ষায় বসার অভিজ্ঞতা এর আগে হয়নি। আর তার পাশাপাশি দিন যত এগোচ্ছে, শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতিও নিশ্চয় ততই জোরদার হচ্ছে তোমাদের। অপশনাল বিষয় ধরে তোমাদের মোট বিষয় ৮ টা। প্রতিটা বিষয়ই সমান গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে তোমাদের। কিন্তু বাংলা মাধ্যমের স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের ইংরেজি নিয়ে একটা বাড়তি ভীতি কাজ করে। তাই আজ এই শেষ মুহুর্তে আমরা ইংরেজিতে কীভাবে ভালো নম্বর তুলবে, সেই বিষয়েই কিছু টিপস দেবো। এসো, দেখে নেওয়া যাক।
১. প্রশ্নের ধরণ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখো
যে কোনো পরীক্ষার প্রশ্নের একটি সুনির্দিষ্ট প্যাটার্ন থাকে। পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে থেকে দরকার ওই একই ধরণের প্রশ্নে বাড়িতে বসে বারবার পরীক্ষা দেওয়া। তবেই তোমার প্রশ্ন সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট হবে। মাধ্যমিকের ইংরেজি পরীক্ষায় পুরো প্রশ্নটি চারটি ভাগে বিভক্ত থাকে- সিন (Seen), আনসিন (Unseen), গ্রামার অ্যান্ড ভোকাবুলারি (Grammar and Vocabulary) আর রাইটিং স্কিল (Writing Skill)।
মোট নম্বর থাকে এ ক্ষেত্রে ৯০। সারা বছর তোমরা যে টেক্সট বই পড়েছ, সেখান থেকে সিন অংশের জন্য থাকবে ২০ নম্বর। এই ২০ নম্বরের মধ্যে আবার ১২ থাকবে গদ্য বা Prose অংশ থেকে। আর বাকি ৮ নম্বর থাকবে কবিতা বা Poetry অংশ থেকে। Prose অংশের ১২ নম্বরের মধ্যে ১ নম্বরের মাল্টিপল চয়েস করতে হবে ৫ টি, অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ১ নম্বরের থাকবে ৩ টি আর ২ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে ২ টি। এ ছাড়া Poetry অংশের ৮ নম্বরের মধ্যে ১ নম্বরের মাল্টিপল চয়েস ৪ টি আর ২ নম্বরের সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন লিখতে হবে ২ টি।
Unseen অংশের জন্য মোট থাকবে ২০ নম্বর। যার মধ্যে ৬ টি ১ নম্বরের মাল্টিপল চয়েস থাকবে। এ ছাড়া ২ নম্বরের অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন থাকবে ৩ টি। এই অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির ১ নম্বর করে দুটি ভাগ থাকবে। বাকি ৮ নম্বর থাকবে ২ নম্বর করে ৪ টি প্রশ্নে। এভাবে মোট ২০ নম্বরের Unseen এর উত্তর করতে হবে তোমাদের।
এরপর আসা যাক Grammer and Vocabulary অংশে। এখানেও মোট ২০ নম্বরের প্রশ্নের উত্তর করতে হবে তোমাদের। যার মধ্যে থাকবে আর্টিকেল, প্রিপোজিশন, ন্যারেশন ও ভয়েস চেঞ্জ, ফ্রেজাল ভার্ব– এগুলো। আর রাইটিং স্কিলের ৩০ নম্বরের মধ্যে রিপোর্ট রাইটিং, প্যারাগ্রাফ ও নোটিস রাইটিং-এর প্রতিটিতে থাকবে ১০ নম্বর করে। সবার আগে এই প্রশ্নের ধরণটা জেনে নিতে হবে, যাতে প্রশ্নের মান অনুযায়ী সময় ভাগ করে নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধায় না পড়তে হয়।
২. সময় সম্পর্কে সচেতন থেকো
ইংরেজি পরীক্ষায় আসলে অনেক সময় বাড়তি পাওয়া যায়। কারণ, পরীক্ষা দিতে খুব বেশী সময় লাগে না। এর একটা সুবিধা হল তোমার হাতে ভেবে লেখা ও লেখার পরে রিভিশনের জন্য যথেষ্ট সময় থাকে। আর তাই তাড়াহুড়ো না করে যথেষ্ট সময় নিয়ে লেখো। প্রথমে এই হিসেবটা মাথায় রেখো যে, তোমায় পুরো ৩ ঘন্টার পরীক্ষায় ১ নম্বরের প্রশ্ন করতে হয় ৩৬ টা, ২ নম্বরের প্রশ্ন করতে হয় ২৪ টা এবং ১০ নম্বরের ৩ টি রাইটিং স্কিল লিখতে হয়। ফলে ২ ও ১ নম্বরের প্রশ্নের ক্ষেত্রে সিন অংশে খুব বেশী সময় লাগে না, কারণ এ ক্ষেত্রে তোমার টেক্সটটি আগে থেকে পড়া থাকছে।
৩. আনসিন মন দিয়ে করবে
ভাবতে হয় আনসিন অংশের ক্ষেত্রে । কারণ এ ক্ষেত্রে প্যাসেজটি ভালো মতো পড়ার জন্য বাড়তি সময়ের অনেকটা কাজে লেগে যায়। তাই ১ নম্বর হোক বা ২ নম্বর, উত্তর লেখার ক্ষেত্রে আনসিন অংশে সিনের থেকে সময় অনেক বেশী লাগে। তাই এ ক্ষেত্রে রাইটিং স্কিল ও আনসিনের ক্ষেত্রেই হাতে বাকি অংশগুলির থেকে সময় বেশী রেখো। কারণ আনসিনের ক্ষেত্রে তোমায় গোটা একটা প্যাসেজ পড়ে নিতে হবে আগে। তবে পরীক্ষায় তোমাকে প্রশ্ন পড়ার ক্ষেত্রে ১৫ মিনিট সময় অতিরিক্ত দেওয়া হবে। সেই সময়কে কাজে লাগিয়ে বাকি প্রশ্ন বেছে ফেলার কাজটি আগে সেরে রাখতে পারো। সে ক্ষেত্রে আনসিন পড়া ও তা ভেবে উত্তর লেখের ক্ষেত্রে সময় অনেক বেশী পাবে। তবে কোন অংশে কত সময় দেবে, এই ব্যাপারটি কিন্তু শুধু মাত্র হিসেব করে রেখে দিলেই হবে না, সেই মতো প্রশ্নপত্রে ঘরে বসে প্র্যাকটিসও দরকার।
➡ মাধ্যমিকে ভূগোলে এবার দারুণ নম্বর উঠবেই
৪. বাড়িতে প্র্যাকটিস ও প্রশ্নপত্র সমাধান কর
গ্রামার আর আনসিনের ক্ষেত্রে অভ্যাসটা থাকা খুবই দরকার। মানে, তোমার যদি ইংরেজি পরে মানে বুঝে উত্তর লেখার অভ্যাস না থাকে, তাহলে পরীক্ষার হলে গিয়ে আনসিনের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়বে। তাই টেস্ট পেপার, প্রশ্ন বিচিত্রা, গত বছরের প্রশ্নপত্র– এগুলো সংগ্রহে রেখে রীতিমত ঘরে বসে পরীক্ষা দাও সময় ধরে। এভাবে পরীক্ষা দেওয়ারও ট্রায়াল হয়ে যাবে। এই অভ্যাস যত বেশী করবে, তোমার আত্মবিশ্বাসও ততই বাড়তে থাকবে।
এই বিষয়গুলো মাথায় রাখলে আশা করা যায় খুব একটা সমস্যা হবে না তোমাদের। সারা বছর তো পড়েইছ, এখন শেষ মুহুর্তে বিশেষ কিছু পড়ার নেইও। ফলে বাকি বিষয়গুলোতে সমান গুরুত্ব দিয়ে সেগুলোর মতো ইংরেজিতেও সময় দাও। ভালো মতো প্রস্তুতি নাও সকলে, পরীক্ষা ভালো হবেই। আগাম শুভেচ্ছা রইলো।
মন্তব্য করুন