ভারতের প্রাচীন সময়ের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে যে, শাড়ি পরার চলন বহুযুগ আগের। সময়ের সাথে সাথে অনেক কিছুর বদল ঘটেছে মানব সমাজে। কিন্তু শাড়ি পরার চলন কমেনি। বিশেষ করে বাংলায়। বাঙালী ধীরে ধীরে বং হয়ে উঠেছে। তাই বলে বং- নারী থুরি বঙ্গনারী শাড়িকে বাতিল করে দেয়নি। এই ঐতিহ্যকে খেসের শাড়ি অনেকটা বাঁচিয়ে রেখেছে নির্দ্বিধায় বলা যায়।
খেসের শাড়ি মূলত সুতির শাড়ি। খেস কাপড় সুতো দিয়ে বুনে বুনে তৈরি হয়। খেসের শাড়ি তৈরি হতে একটু সময় লাগে।তবে বিক্রি হতে বেশি সময় লাগেনা। বোলপুরে খেসের শাড়ি প্রধানত তৈরি হয়ে থাকে। খেসের শাড়ি নানা রঙের সুতো দিয়ে বোনা হয়। খেসের কাপড় দিয়ে শুধু শাড়ি নয় কুর্তি, ব্যাগ, আর অনেক কিছু তৈরি হয়।
খেসের শাড়ি তাঁতে বোনা শাড়ির মধ্যে পরে। শাড়ির দুনিয়া শেষ ১০ বছর খেসের চল প্রচুর পরিমানে হয়েছে। এই শাড়ি বহু পুরন। কিন্তু চল ছিল না। আজকালের মেয়েদের কাছে সুতির শাড়ি মানেই খেস। যা স্টাইল বজায় রাখে সাথে শাড়ির ঐতিহ্য। বোলপুরের গ্রামে ঘরে ঘরে তাঁতের শাড়ি বানায়। গ্রামীণ মহিলারা মূলত বানান।
খেসের শাড়ি যে কোনও উৎসবে পরা যায়। নানা রঙের শাড়ি বাজারে পাওয়া যায়। তবে খোয়াইয়ের হাট থেকে সস্তায় খেসের ভালো ভালো শাড়ি পাওয়া যায়। এই শাড়ির দাম ৫০০ টাকা থেকে শুরু হয়।
সম্পূর্ণ সুতির কাপড় দিয়ে খেসের শাড়ি তৈরি হয় বলে এই শাড়ি পরতে আরামদায়ক। যারা নিয়মিত শাড়ি পরে না। তাদের শাড়ি পরা ও তা সামলানো একটু কষ্টকর মনে হয়। কিন্তু সুতির শাড়ি পরলে এই সমস্যা থেকে একটু নিজেকে সামলানো যায়। সেক্ষেত্রে খেসের শাড়ি যাকে বলে একদম পারফেক্ট। খেসের শাড়িতে একটু ভারী ধরনের সুতির কাপড় থাকে। তাই এই শাড়ি পরলে সহজে তা অনেক্ষন আরামসে সামলানো যায়।
দুদিন পরেই দোলউৎসব। হলুদ তাঁতের শাড়ি না পরে খেসের শাড়ি পরে দেখতে পারেন। বেশ অন্য রকম লুক আসবে। এই শাড়ি সহজে খুলে যাওয়ার ভয় থাকে না। শাড়ি অনেক সময় ধরে পরে থাকলেও শাড়িতে খুব একটা ভাঁজ পরেনা। মনে হয় সবে যেন পরা হয়েছে। খেসের শাড়ি একই সাথে স্টাইল ও বাঙালীয়ানা দুই বজায় রাখে।
খেসের শাড়ি মুলত একরঙা কাপরের হয়। বাকি সারা শাড়ি জুড়ে সুতোর সামিয়ানা থাকে। এখন খেস কাপরে কাঁথাস্টিচ করা শাড়িও তৈরি হচ্ছে। তাছাড়া খেস কাপরের উপর প্রিন্ট করা স্টাইল’এর শাড়ি বাজারে চলে এসেছে।
মন্তব্য করুন