অভিনেত্রী করিনা কাপুর সর্বদা তাঁর পুষ্টিবিদ এবং ডায়েটিশিয়ান রুজুতা দিওয়েকর এবং যোগব্যয়াম প্রশিক্ষক নম্রতা পুরোহিত-এর পরামর্শ অনুসরণ করে চলেন। এমনকি গর্ভাবস্থায় করিনা তাঁদের ডায়েট এবং যোগ টিপস অনুসরণ করে চলেছিলেন।
এর ফলাফল আপনাদের সবার চোখের সামনে। গর্ভাবস্থায় করিনার ১৮ কেজি ওজন বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই আপনারা করিনার সেই আগের ফিট এবং গ্লোয়িং চেহারা দেখতে পেয়েছিলেন। আসুন জেনে নিই কীভাবে গর্ভাবস্থায় বেড়ে যাওয়া ওজন সহজেই কমিয়ে ফেলেছিলেন করিনা। আর তাতে ঘি-ও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছিল, আমরা সেই বিষয়েও কথা বলব।
এখন যাঁরা মা হয়েছেন, তাঁরা বেড়ে যাওয়া ওজন কম করার ক্ষেত্রে করিনা কাপুরের দেওয়া এইসব টিপস অবশ্যই মেনে চলতে পারেন।
১) ক্র্যাশ ডায়েট ভুলে যানঃ
করিনা কাপুরের বিষয়ে যে বিষয়টি আমার সবথেকে ভালো লেগেছিল, তা হল, ওজন কমানোর ক্ষেত্রে তিনি কোনওরকম তাড়াহুড়ো করেননি। পাশাপাশি তাড়াতাড়ি ওজন কমানোর চক্করে কোনওরকম ভুল, শর্ট-কাট পদ্ধতিও অবলম্বন করেননি।
এক্ষেত্রে তাঁক ডায়েটিশিয়ান রুজুতার একটা বড় ভুমিকা ছিল। করিনা তাঁর মোটা চেহারা দেখে খুবই নার্ভাস হয়ে পড়েছিলেন। আর সেই কারণেই তিনি ক্র্যাশ ডায়েট ফলো করে ওজন কমাতে চেয়েছিলেন, ঠিক যেমনটা করে তিনি করেছিলেন ‘টশন’ ছবির আগে ওজন কমিয়েছিলেন। কিন্তু রুজুতাই তাঁকে সঠিক পথ দেখিয়েছিলেন।
রুজুতার কথায়, গর্ভবস্থায় শরীরে বিরাট পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। আর এক স্ট্রোকে এর পরিবর্তন করাটা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক হতে পারে। ‘সংযমী হতে হবে, ওজন হ্রাস পাবে এবং স্বাস্থ্যেরও কোনওরকম ক্ষতি হবে না।’
- বাচ্চার জন্মের পর অনেক মহিলাই ওজন কমানোর জন্য ক্র্যাশ ডায়েটের দিকে ঝোঁকেন। আর এটি কিন্তু একাধিক রোগের উৎপত্তি ঘটাতে পারে- যেমন থাইরয়েড।
- ক্র্যাশ ডায়েটে ক্যালোরি খুব কম থাকে, যার ফলে শরীরে বিপাক ক্রিয়া খুবই ধীর গতিতে হয়ে থাকে। কিন্তু পরে যখন আপনি খাবার খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে থাকেন, তখন ওজনও কিন্তু অপরিমিতভাবে বাড়তে থাকে।
- ওজন কমানোর পাশাপাশি পেশীর ঘনত্বও (muscle density) বাড়ানো প্রয়োজন। একটি বিষয় বুঝতে হবে যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তা হল আমাদের লক্ষ্য ওজন হ্রাস করা নয়, বরং স্বাস্থ্যবান, সুন্দর দেখতে লাগা। আর এই লক্ষ্য কিন্তু কেবল ওজন কমিয়ে অর্জন করা সম্ভব নয়। এতে আপনাকে কেবল রোগা দেখাবে, স্বাস্থ্যবান বা সুন্দর নয়।
২) ঘি খানঃ
রুজুতা এবং করিনা দুজনেই ঘি খাওয়ার পক্ষে। একটি ভিডিওতে দুজনেই নিয়মিত ঘি খাওয়ার কথা বলেছিলেন, গর্ভাবস্থাকালীন, এবং গর্ভাবস্থার পরেও।
রুদুতা বলেন, ‘ঘি কেবল অ্যান্টি ফাংগাল এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল নয়, এটি ত্বকতে উজ্জ্বল করতে এবং ওজন কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।’
একটি ভিডিওতে যখন করিনাকে একটি খাবারের নাম বলতে বলা হয়, তখন তিনি ঘ-এর নাম বলেন। তিনি এও বলেন যে, ‘আমি তো ডালের সঙ্গেও একটু ঘি অবশ্যই খাই।’
ওজন কমাতে করিনা এই নিম্নলিখিত বিষয়ের উল্লেখ করেছেন
১) করিনা নিয়মিত চিনি খান
তিনি সকাল এবং সন্ধেবেলা চা-কফি কিংবা দুধে চিনি দিয়ে খান। রুজুতা বিশ্বাস করেন যে, গর্ভাবস্থার সময় থেকে প্রায় পাঁচ বছর পর্যন্ত একজন মহিলার শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি থাকতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় চিনি দিয়ে দুধ খেলে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি আবার পূরণ হয়ে যেতে পারে।
২) সঠিক পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন
করিনা নিয়মিত পুষ্টিকর এবং নিরামিষ খাবার যেমন দুধ, পনির, রুটি, মসুর ডাল, পরোটা, সালাদ, মুয়েসলি, স্যুপ ইত্যাদি খেতেন। নিয়মিত ফলমূল এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ শেক খেলেও ওজন বৃদ্ধি রোধ হয়।
৩) পর্যাপ্ত জল খান
করিনা গর্ভাবস্থায় এবং তারপরেও নিয়মিত প্রায় ৮-১০ গ্লাস জল পান করতেন, যা তার শরীরকে সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর রেখেছিল।
৪) এক্সসারসাইজ এবং যোগা
শরীরকে নমনীয় ও চটপটে রাখতে করিনা তাঁর যোগ প্রশিক্ষক নম্রতা পুরোহিতের পরামর্শ নিয়ে গর্ভাবস্থার পরেও নিয়মিত এক্সসারসাইজ- যোগব্যায়াম করতেন।
৫) কার্ডিও এবং হাঁটা
গর্ভাবস্থার পরে, কারিনা নিজেকে ফিট এবং সুস্থ রাখতে এবং অতিরিক্ত ওজন কমাতে নিয়মিত কার্ডিও এবং হাঁটাচলা করতে।
অনুবাদিকাঃ ইন্দ্রাণী মুখার্জ্জী
মন্তব্য করুন