খাওয়ার পরে নিশ্চই জোয়ান খাওয়ার অভ্যেস আছে আপনার| কোনো রেস্তোরা তে গেলেও খাওয়ার পর জোয়ান দেওয়া হয়| জোয়ানের স্বাদ বেশ ভালো এবং খাওয়ার পর বেশ ভালো মাউথ ফ্রেসনারের কাজ করে| শুধু কি এই কারণেই জোয়ান খাওয়া হয় নাকি এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে? আমাদের আজকের আর্টিকেল জোয়ান খাওয়ার আসল কারণ আপনাদের কাছে তুলে ধরবে।
আপনি কি জানেন যে প্রাচীন চিকিৎসাশাস্ত্রে জোয়ানের বিপুল উল্লেখ আছে। আমাদের শরীরের অনেক রোগ যা পরবর্তী কালে বেশ যন্ত্রণা দায়ক হতে পারে তা কিন্তু জোয়ানের নিয়মিত সেবনে আমাদের শরীরে বাসা বাঁধতে পারেনা। তাই আপনার সুস্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে ‘দাশবাস’ আজ জানাবে আপনাদের জোয়ানের জলবা।
অ্যাসিড
অ্যাসিডের সমস্যায় ভুক্তভুগী নয় এমন কেউ নিশ্চই নেই| সময় মত না খাওয়া, অসময়ে উল্টোপাল্টা ভাজা পোড়া খাওয়া, অনেকটা সময়ের ব্যবধানে খাওয়া- এগুলো আমরা প্রায়সই করে থাকি। তারপর আমাদের পেট মুখ ভার করে বসে থাকে। এছাড়া গলা যন্ত্রণা, বুক যন্ত্রণা, এছাড়া সেই বিচ্ছিরি ঢেকুর গুলো উঠে, সব মিলিয়ে জীবনটাই বিষিয়ে তোলে। আমাদের আজকালের খাওয়ার ব্যাড হ্যাবিটের ফলে এই ধরনের এক্সপিরিয়েন্স আমাদের প্রায়শই হয়ে থাকে। এই সমস্ত থেকে বাঁচার বা এই ধরনের সমস্যা যাতে আপনাকে ব্যতিব্যস্ত না করে তার জন্য কিন্তু আপনাকে প্রতিদিন জোয়ান খেতেই হবে। আমাদের শরীরে যে এনজাইম গুলো খাবার হজম করাতে সাহায্য করে জোয়ান তাদের কাজ করার ক্ষমতা কে বাড়িয়ে দেয়। ফলে খাবার হজম করাতে জোয়ান কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি কাজ করে।
পদ্ধতি
অ্যাসিডের জ্বালাকে চিরতরে ঠান্ডা করার জন্য প্রতিদিন ১ চামচ জোয়ান, ১ চামচ লবন একগ্লাস উষ্ণ গরম জলে মিশিয়ে খেয়ে ফেলুন| এতে অ্যাসিডের সমস্যা দূর হবে|
গ্যাস
আপনার গ্যাসের সমস্যায় কষ্টের কথা আর নতুন করে কি বলব| এতে যত আপনি শারীরিক ভাবে কষ্ট, এর ফলে হওয়া শব্দদূষণ ও বায়ুদূষণ কিছু সময়ের জন্য আপনার আশেপাশের মানুষেরও যন্ত্রণার কারণ হয়ে ওঠে| আর আপনার সামাজিক লজ্জায় পরার কথা নয় বাদ ই দিলাম| অতিরিক্ত গ্যাসের সমস্যা থাকলে তা কিন্তু পরবর্তী কারণে মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে| এছাড়া বুকে পিঠে ব্যথা,মাথাব্যথা, পেটে ব্যথা ইত্যাদি তো আছেই| অনেক সময় এর ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে দেখা যায়| এত গম্ভীর সমস্যার সমাধান কিন্তু শুধুমাত্র জোয়ানের নিয়মিত সেবন| জোয়ান আমাদের শরীরে গ্যাস ফর্ম হতে দেয় না, এবং হলেও চটপট তার থেকে রেহাই দেয়| তাই কষ্ট পাবার থেকে গ্যাস হতে না দেওয়াই বুধিমানের কাজ|
পদ্ধতি
দুপুরে ও রাতে খাওয়ার পর প্রতিদিন একটু করে জওয়ান খান| এছাড়া আধ লিটার জলে ৩-৪ চামচ জোয়ান দিয়ে সেই জল ফোটান| জল অর্ধেক হয়ে আসলে ছেঁকে উষ্ণ উষ্ণ খেয়ে ফেলুন খালি পেটে| দেখবেন গ্যাসের সমস্যা চিরতরে বিদায় নেবে|
ঘন ঘন ঠান্ডা লাগা
এই রোগ অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায়| ইমিউনিটি কম থাকার কারণে একটু ঠান্ডা লাগলেই বা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গেলে পরিবেশ বা আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে বা সিজিন চেঞ্জের সময় ঠান্ডা লেগে জ্বর, সর্দি-কাশি হতে দেখা যায়| আমাদের চারপাশে আমরা এমন অনেককেই দেখতে পাই যারা সারাবছর সর্দি কাশিতে ভোগেন| এটিও কিন্তু একধরনের রোগ| এর ফলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়| এই ধরনের রোগীর ক্ষেত্রে জোয়ান বেশ আরামদায়ক| প্রতিদিন জোয়ান খেলে এইধরনের ঠান্ডা লাগা কমে যায়|
পদ্ধতি
১ চামচ জোয়ান প্রতিদিন উষ্ণ গরম জলের সাথে চিবিয়ে খান| শুকনো করে ভেজে তা প্রতিদিন খান| এতে ঠান্ডা লাগা বা ঘন ঘন সর্দি কাশি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে|
এখন বুজতেই পারছেন নিশ্চই ঠাকুমা দিদিমারা কেন খাওয়ার পর আপনাকে জোয়ানের বোতল টি এগিয়ে দেয়| এতদিন যদি তাদের না বলে এসে থেকেছেন তাহলে এখন থেকে নিজের অভ্যেস বদলে ফেলুন| কারণ জোয়ান নিয়মিত খাওয়ার এই ছোট্ট অভ্যেস কিন্তু আপনাকে অনেক বড়সড় রোগের প্রভাব থেকে রক্ষা করে|
Thanks dada