একটু ঝাঁঝালো স্বাদের এই মশলাটি প্রায় সব বাঙালির ঘরেই পাওয়া যায়। এর স্বাদ যেমন ঝাঁঝালো তেমনই খাদ্য গুণও আছে প্রচুর। জোয়ানে আছে ভিটামিনস, মিনারেলস এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা শরীরের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে ও শরীরকে ভালো রাখতে প্রয়োজন।
আমরা জানি জোয়ান হজমের জন্য ভালো কিন্তু জোয়ানের আরও অনেক গুণ আছে যেমন হাঁপানির সমস্যা, কিডনির সমস্যা, বা হাঁটুর ব্যাথা এমনকি সর্দি কাশিতেও জোয়ানের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
২. হজম শক্তি বৃদ্ধি
জোয়ানের সব থেকে বড়ো গুণ আমরা সবাই জানি, সেটি হল এটি হজমে দারুন ভাবে সাহায্য করে। এটি হজম শক্তি বাড়ায় ও হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। গ্যাস অম্বলের সমস্যা থেকেও মুক্তি দেয়। এর জন্য এক চামচ জোয়ান, একচামচ মৌরি, ও একচামচ আদা গুড়ো বা আদা জলে ভালো করে ফুটিয়ে সেই জলটা খাওয়া যেতে পারে।
৩. সর্দি কাশি থেকে আরাম
সর্দি কাশিতেও জোয়ান বেশ উপকারী। এটি বুকে জমা সর্দি তুলতে সাহায্য করে। বন্ধ নাক থেকে আরাম দেয়। এছাড়াও সর্দি কাশি হলে মাথা যন্ত্রণা করে সেই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেয়। অনেকেরই আবার মাইগ্রেনের ব্যাথা হয় অসহ্য। সেটি থেকেও মুক্তি দেয় জোয়ান। এর জন্য জোয়ান গুড়ো করে, পাতলা একটা কাপড়ে নিয়ে সেটির গন্ধ নিতে হবে। একটু গরম জলের সঙ্গে একটু জোয়ান চিবলে কাশি থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
৪. কিডনির সমস্যা থেকে মুক্তি
কিডনির সমস্যা, বিশেষত কিডনি স্টোনের সমস্যায় সাহায্য করে জোয়ান। কিডনি স্টোন থেকে রিলিফ দিতে পারে জোয়ান। এর জন্য পেটে যে যন্ত্রণা হয় সেটিও কমাতে সাহায্য করে। আবার অনেক সময় পেটে অসহ্য গ্যাসের ব্যাথা হয় তাতেও জোয়ান কার্যকরী।
৫. ব্যাথা থেকে আরাম
হাঁটু ও কোমরের ব্যাথায় কার্যকরী জোয়ান। জোয়ানের তেল ব্যাথার জায়গাতে মালিশ করলে অনেকটা উপকার পাওয়া যায়।কানের ব্যাথা ও দাঁতের ব্যাথাতেও কার্যকরী জোয়ান। কানে ব্যাথার জন্য একটু জোয়ানের তেল কানে দু থেকে তিন ফোঁটা দিলে উপকার পাওয়া যাবে। এছাড়াও দাঁতে ব্যাথা হলে গরম জলে একটু জোয়ান আর একটু নুন দিয়ে গারগেল করলে ব্যাথা কমে যাবে। এছাড়াও এটি ভালো মাউথ ওয়াশেরও কাজ করে। মুখের ভেতর পরিষ্কার রাখতে জোয়ান সাহায্য করে।
৬. ব্রণও থেকে মুক্তি
মুখে ব্রনর যে লাল দাগ থাকে যেগুলি যেতেই চায় না। তা ধীরে ধীরে হালকা করে জোয়ান। জোয়ানের পেস্ট ওই জায়গাতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। উপকার পাবেন। এছাড়াও জোয়ান ওজন নিয়ন্ত্রণ করতেও সাহায্য করে। অতিরিক্ত ওজনের কারণে হাওয়া ওবেসিটিকেও নিয়ন্ত্রণ করে। সকালে খালি পেটে একটু গরম জলে জোয়ান ফুটিয়ে সেই জলটা খেলে কাজ হবে।
৭. মশা তাড়ায়
বাড়িতে খুব মশা? এই অতিরিক্ত মশা তাড়াতেও সাহায্য করবে জোয়ান। একটু জোয়ান এর সঙ্গে একটু সরষের তেল ভালো করে মিশিয়ে সেটি একটি কার্ডবোর্ডের ওপর রেখে বা একটু কার্ডবোর্ডের টুকরো ওই মিশ্রণে ভিজিয়ে ঘরের এক কোনে রেখে দিন বা বোর্ডটি ঝুলিয়ে দিন।
৮. রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়
জোয়ান শরীর থেকে টক্সিন বার করে শরীরকে পরিষ্কার রাখে। রক্তকে পরিষ্কার করে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। যার ফলে শরীরের অনেক সমস্যা থেকেই মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও যারা অতিরিক্ত অ্যালকোহল নেন এবং ছাড়তে পারছেন না, তারা রোজ জোয়ান খান। তাদের এই অভ্যাস থেকে মুক্তি দিতেও জোয়ান সাহায্য করে। অতিরিক্ত অ্যালকোহলের জন্য পেটেও অনেক সময় ব্যাথা হয়। সেই জন্য একচামচ জোয়ান গরম জলে ফুটিয়ে সেই জল খাওয়া যেতে পারে।
তাহলে দেখলেন তো জোয়ানের উপকারিতা! তাই এবার থেকে রোজ একটু করে জোয়ান কিন্তু খেতেই হবে।
মন্তব্য করুন