চা প্রেমীদের জন্য চা খাওয়ার কোনও সময় হয় না। সকাল-বিকেল-রাত এমনকী অনেককে শুনি দুপুরের খাবার খাওয়ার পরও চা পান করেন। মাথা ধরায় আদা চা, গলা খুশখুশ করলে মশলা চা, স্বাস্থ্য সচেতম মানুষের কাছে লেবু দিয়ে লিকার চা- চায়ের এই নানা প্রকারভেদ চা-প্রেমীদের কাছে খুবই পছন্দের কিন্তু জানেন কি এই চায়ের এমন আরও রকমফের হয় যা হয়তো আপনারা অনেকেই জানতেন না।
শহর কলকাতায় আজকাল চকোলেট চা খুবই জনপ্রিয়। কিন্তু এছাড়াও সম্প্রতি আর এক প্রকার চা-এর কথা সকলের মুখে মুখে ঘুরছে তা হল তন্দুরি চা।
তন্দুরি নাইটস বা তন্দুরি চিকেনের কথাই এতদিন শুনেছেন। কিন্তু তন্দুরি চা-ও কিন্তু আজকাল খুবই ট্রেন্ডি। দেশজুড়ে সমস্ত বড় বড় রাজ্যের পাশাপাশি এখন শহর কলকাতার একাধিক জায়গাতে মেলে তন্দুরি চা।
তন্দুরি চা!
চায়ের নাম শুনেই বুঝতে পারচেন যে, এই চা তৈরিতে একটি প্রয়োজনীয় উপকরণ হল তন্দুর। তন্দুর থাকলে এই চা তৈরি করা খুবই সহজ হয়। কিন্তু বাড়িতে তো আর তন্দুর থাকে না, কিন্তু তাই বলে বাড়িতে যে তন্দুরী চা তৈরি করতে পারবেন না একথা কিন্তু ভুল।
ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়। তাই আজ আপনাদের বলব তন্দুর ছাড়াই বাড়ি বসে তন্দুরি চা বানানোর সহজ রেসিপি। যার ধাপগুলি মেনে চললেই আপনি কিন্তু বাড়ি বসেই পেয়ে যেতে পারেন দোকানে পেশাদারিভাবে তৈরি তন্দুরি চা।
তন্দুরী চা বানাতে যা যা লাগবে
- ১ কাপ জল
- চা পাতা
- আদা, দারচিনি, এলাচ গুঁড়ো, কেশর
- দুধ- দেড় কাপ
- মাটির ভাঁড়
তন্দুরি চা বানানোর পদ্ধতি স্টেপ বাই স্টেপ
- প্রথমে গ্যাসে এক কাপ জল ফুটতে দিন।
- এরপর জলে দুই থেকে আড়াই চামচ চা-পাতা দিয়ে দিন।
- এরপর যোগ করুন দেড় চা-চামচ চিনি।
- যেহেতু এটা তন্দুরি চা সেহেতু এটি মশলাদার হলে এর স্বাদ আরও জমবে। এর জন্য চায়ে যোগ করুন কুচোনো আদা, এক ইঞ্চি লম্বা দারচিনির টুকরো, ১/৪ চামচ এলাচ গুঁড়ো, এক চিমটে কেশর (চাইলে নাও দিতে পারেন) যোগ করুন।
- গোটা মিশ্রণটি ভালো করে মিশিয়ে নিন।
- চায়ের মধ্যে দেড় কাপ মতো দুধ মিশিয়ে নিন।
- চা খুব ভালো করে ফুটিয়ে নিন। চা ফুটে উঠলে গ্যাস বন্ধ করে নামিয়ে চা ছেঁকে নিন।
তন্দুরি চা বানাতে ফলো করুন পরের স্টেপগুলি
- তন্দুরি চা বানাতে লাগবে মাটির ভাঁড়।
- এই মাটির ভাঁড়কে গ্যাসের হাল্কা ফ্লেমে সেঁকে নিতে হবে। এর জন্য একটি চিমটে দিয়ে ভাঁড়টি বার্নারের ওপর বসান।
- এবার চিমটের সাহায্যে ভাঁড়টি আসতে আসতে ঘোরাতে থাকুন। ভাঁড়ের ভেতরের দিকটিও যাতে সমানভাবে সেঁকা হয় সেইদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
- দেখবেন আগুনের তাপে মাটির ভাঁড়টি ধীরে ধীরে তার রঙ পরিবর্তন করতে শুরু করে দিয়েছে। রঙ পরিবর্তন করতে শুরু করলে মাটির ভাঁড়টি একটি সাঁড়াশির সাহায্যে নামিয়ে নিন।
- এরপর আর অপেক্ষা না করে মাটির ভাঁড়টি একটি প্যানের ওপর বসান।
- ওই তপ্ত ভাঁড়ের মধ্যে গরম গরম চা ঢালতে থাকুন। ভাঁড় উপচে পড়লেও ঢালতে থাকুন।
- ভাঁড়ের মধ্যে আগ্নেয়গিরির মতো বুদবুদ দেখা যাচ্ছে। ভাঁড় তপ্ত হওয়ার কারণেই এই বুদবুদ দেখা দেবে। আর এই বুদবুদই তন্দুরি চায়ের বিশেষত্ব।
- সেই চা কাপে ঢেলে বা খুব ভালো হয় মাটির ভাঁড়েই পরিবেশন করুন।
ব্যাস। তাহলে বুঝে গেলেন তো তন্দুরি চা এমন কোনও কঠিন বিষয় নয়। তাহলে আর দেরি না করে আজই বাড়িতে বানিয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিন।
মন্তব্য করুন