পদবী আমরা জন্মসূত্রে পেয়ে থাকি। তখন সেটি পাওয়ার উপর আমাদের হাত থাকে না। কিন্তু পরবর্তী কালে আমাদের তো ইচ্ছে হতেই পারে পদবী পরিবর্তন করার। আর মেয়েরা তো এখনও বিয়ের পর পদবী হয় পরিবর্তন করেন, নাহলে নিজের পদবীর সঙ্গে স্বামীর পদবী যোগ করে নেন। কিন্তু এই সবই করতে হয় খুব নিয়ম মেনে, আইনি পদ্ধতি অনুযায়ী।
তবে অনেকেই জানেন না পরিষ্কার ভাবে কী সেই পদ্ধতি। দাশবাস আজ আপনাদের সেই নিয়মের খুঁটিনাটি জানিয়ে দেবে। খুব সহজেই মাত্র তিনটি ধাপে আপনারা এই পদবী পরিবর্তন করতে পারেন।
১. এফিডেফিট করাতে হবে
ক. এটি হল প্রথম ধাপ। আপনার কাছের কোনও নটারি, অর্থাৎ যে ব্যক্তি এই আইনি কাজ করার জন্য উপযুক্ত, অনেক দিন ধরে আইনের পেশায় রয়েছেন, তাঁর কাছে যান আর তাঁকে পদবী পরিবর্তনের কথা বলুন।
খ. তিনি একটি নন- জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপার দেবেন যার মধ্যে এই পদবী পরিবর্তন হবে।
গ. এই স্ট্যাম্প পেপার পেলে আপনাকে তিনটে জিনিসের উল্লেখ করতে হবে, যেমন আপনার বর্তমান পদবী আর নতুন পদবী, আপনার ঠিকানা, পদবী পরিবর্তনের কারণ।
ঘ. একবার সব কিছু উল্লেখ করে স্ট্যাম্প পেপার প্রিন্ট হয়ে গেলে তাতে দু’জনের সাক্ষ্য লাগবে অর্থাৎ সই। সেই দু’জনকে অবশ্যই গেজেটেড অফিসার হতে হবে। তার সঙ্গে লাগবে রাবার স্ট্যাম্প।
ঙ. আপনি যদি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী হন তাহলে মিনিস্ট্রি অফ হোম অ্যাফেয়ার্স থেকে সই লাগবে।
চ. আপনি যদি বিবাহের পর পদবী পরিবর্তন করতে চান সেক্ষেত্রেও তিনটি তথ্য লাগবে, বাবার পদবী এবং বাবার ঠিকানা, স্বামীর পদবী এবং স্বামীর ঠিকানা, বিবাহের তারিখ।
ছ. এই স্ট্যাম্প পেপার এবার আপনি নটারিকে দিয়ে দিন বা আপনি নিজে গিয়েও ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গিয়ে দিতে পারেন।
মনে রাখবেন আপনাকে কিন্তু এই স্ট্যাম্প পেপারের একটি ফটোকপি নিজের কাছে অবশ্যই রাখতে হবে, কারণ পরবর্তী কালে এটি আপনার বারবার কাজে আসতে পারে।
২. কাগজে বিজ্ঞাপন
এফিডেফিট জমা দেওয়ার পরের কাজ হল খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়া। আপনাকে দুটি কাগজ বেছে নিতে হবে, একটি আপনার মাতৃভাষার আর আরেকটি ইংরেজিতে। বাংলার ক্ষেত্রে আপনি যেমন একটি বিজ্ঞাপন দিতে পারেন আনন্দবাজার পত্রিকা বা এই সময় কাগজে। আর ইংরেজির ক্ষেত্রে বেছে নিতে পারেন দ্য টেলিগ্রাফ বা টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে।
মনে রাখবেন, সবচেয়ে জনপ্রিয় কাগজগুলোর মধ্যেই বিজ্ঞাপন দেওয়া উচিৎ। বিবাহের কারণে পদবী পরিবর্তন করলে আপনাকে আপনার স্বামীর নাম আর ঠিকানাও দিতে হবে। যখন এই বিজ্ঞাপন কাগজে ছাপা হবে, চেষ্টা করবেন বেশি করে কপি আপনার কাছে সংগ্রহ করে রাখতে। এটি ভবিষ্যতে আপনাকে সাহায্য করবে।
৩. গেজেট নোটিফিকেশন
এটি হল নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে শেষ ধাপ।
ক. স্টেট গভর্নমেন্ট পাবলিকেশন অফিসে গিয়ে আপনাকে একটি কপি নিতে হবে যেটি হল, ‘ডিড চেঞ্জিং নেম ফর্ম’।
খ. এটি পূরণ করে এর সঙ্গে কয়েকটি জিনিস আপনাকে পাঠাতে হবে। সেগুলি হল।
বাংলা এবং ইংরেজি কাগজের বিজ্ঞাপনের আসল প্রতিলিপি
দুটি অ্যাটেস্টেড ফটো।
অ্যাড্রেস আর আইডেন্টিটি প্রুফ। এটি যেন আপনার এফিডেফিটে দেওয়া ঠিকানার সঙ্গে অবশ্যই মেলে।
গ. এই সব কিছু আপনাকে একটি খামের মধ্যে নিয়ে পাঠাতে হবে কন্ট্রোলার অফ পাবলিকেশন দফতরে। আপনাকে হয়তো কিছু টাকা দিতে হতে পারে। সেটা নিয়ম অনুযায়ী আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
আপনাকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকাশ হওয়া গেজেট বই আপনার ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আর এখানেই আপনার পদবী পরিবর্তন অফিসিয়ালি সমাপ্ত হবে।
এর পর আপনি অন্যান্য দফতরে গিয়ে এই এফিডেফিট, বিজ্ঞাপন আর গেজেটের প্রমাণ দেখিয়ে নাম পরিবর্তনের আবেদন করতে পারেন। পদ্ধতি সংশ্লিষ্ট দফতরই আপনাকে জানিয়ে দেবে।
যুবশ্রী প্রকল্পঃ যুব উৎসাহ প্রকল্পের মাধ্যমে স্বনির্ভর হোন সহজেই
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের গীতাঞ্জলী আবাস যোজনা স্কিম। নিজের বাড়ি বানান সহজে
মন্তব্য করুন