অনেক সময়েই এমন হয় যে আপনি হয়তো কোনও মিটিং-এ গেলেন। ঘরে যেই আপনি ঢুকে বসলেন, অমনিই সবার নজর পড়ল আপনার দিকেই। তা হবেই তো, আপনি ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই তো ঘরে সবাই পেতে শুরু করল বাজে গন্ধ। আবার ধরুন আপনি বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করছে। সেখানেও সবার গল্প থামিয়ে পালিয়ে যাওয়ার উপক্রম।
এর কারণ? আপনার পা থেকে আসা দুর্গন্ধ। আমাদের অনেক সময়েই এই সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়, কিন্তু আমরা বুঝি না যে কি ঠিক করা উচিৎ। তাই অগত্যা আমরা আবারও হাজির হয়েছি আপনাদের সমস্যার সমাধান করতে। আজকের আর্টিকেল পড়ুন আর পায়ের গন্ধ থেকে মুক্তি পান চিরতরে।
১. রোজ পা ধুয়ে নিন
আমাদের অনেকেরই অভ্যেস থাকে না ভালো করে পা ধোয়ার। আমরা শরীরের অন্য অংশে সাবান দিই, নানা রকম বডি ওয়াশ দিই, কিন্তু পায়ের দিকে সেরকম যত্ন নিই কী? সত্যি বলতে কি নিই না। কিন্তু রোজ স্নানের সময়ে আর বাইরে থেকে এসে পা ধুতে হবে কোনও অ্যান্টি সেপটিক সাবান দিয়ে। এতে পায়ে ব্যাকটেরিয়া আর থাকবে না, গন্ধও আর হবে না।
২. ফুট ডিওড্রেন্ট ব্যবহার করুন
চমকে উঠবেন না এটা শুনে। যদি গায়ের গন্ধ দূর করতে ডিওড্রেন্ট ব্যবহার করতে পারেন তাহলে পায়ের ক্ষেত্রে নয় কেন? যখন গায়ে বডি স্প্রে দেবেন তখন খানিক বডি স্প্রে পায়ে দিয়ে দিন। তারপর মোজা পরে নিন। এতে দেখবেন সাড়া দিন পা বেশ ফ্রেস থাকবে।
৩. ফুট পাওডার দিন
পায়ে গন্ধ হওয়ার মূলে কিন্তু আছে ব্যাকটেরিয়া আর ফাঙ্গাসের আক্রমণ। ব্যাকটেরিয়া তো সাবান ব্যবহার করে দূর করে দিলেন। এবার ফাঙ্গাসের পালা। এর জন্য কিন্তু আপনাকে পা যাতে শুকনো থাকে তার দিকে নজর দিতে হবে। কারণ পা বেশি ঘেমে গেলেই ফাঙ্গাস হবে। তাই পা যাতে বেশি ঘেমে না যায় সে জন্য ফুট পাওডার ব্যবহার করুন। পা পরিষ্কার করার পর অর্থাৎ স্নানের পর আর বাইরে থেকে এসে, দুই বারই পাওডার ব্যবহার করুন। আপনি আমাজনে পেয়ে যাবেন।
ইজি স্টেপ অ্যান্টি সোয়েট শু পাওডার | Eazy Step Anti Sweat Shoe Powder
এটি পা শুকনো রাখে সারা দিন। তাই পায়ে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ কম হয়। পায়ে র্যা শ বা চুলকানিও কম হয় এই পাওডার ব্যবহার করলে।
কিনতে হলে ছবিতে ক্লিক করুন।
ডঃ কল’স অরিজিনাল ফুট পাওডার কুলস অ্যান্ড সুদেস | Dr. Scholl’s Original Foot Powder Cools And Soothes
নামেই বুঝতে পারছেন, এটি মেডিকেটেড। তাই নিশ্চিন্তে ভরসা করতে পারেন। এটি পা ঠাণ্ডা রাখে। তাই গরমে ব্যবহার করুন। আরাম পাবেন। আর এটি কিন্তু আমেরিকার প্রোডাক্ট।
৪. পায়ে অ্যালকোহল ব্যবহার করুন
এটা আপনারা এর আগে শোনেননি। অ্যালকোহল খাওয়ার পাশাপাশি একটু পায়েও ব্যবহার করুন। অ্যালকোহল পায়ের পোর্স যাতে খুব বেশি বড় না হয় সেদিকে খেয়াল রাখে। খুব বড় হলে তার থেকে বেশি ঘাম হতে পারে। সপ্তাহে দু দিন পায়ে একটু অ্যালকোহল দিয়ে খানিক ঘষুন। তারপর পা ধুয়ে নিন। এতে বেশ উপকার পাবেন।
৫. বেকিং সোডা দিন পায়ে
জুতো খোলার পর জুতোর মধ্যে খানিক বেকিং সোডা ছড়িয়ে দিন। এই বেকিং সোডা জুতো থেকে অতিরিক্ত ময়েশ্চার শুষে নেবে। জুতো ফ্রেস হবে আর আপনি পরের দিন সেই জুতো পরলে পা স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে থাকবে না। বিশেষ করে বর্ষাকালে এটি অবশ্যই করবেন।
৬. ঠিক জুতো বাছুন
জুতো বেছে নেওয়া কিন্তু বেশ যত্নের কাজ। এমন জুতো কিনতে হয় যা খুব টাইট নয়, এতে খাওয়া খেলে ভালো। এর সঙ্গে দেখতে হবে জুতোর মধ্যে যেন অতিরিক্ত জায়গা থাকে খানিক যেখান দিয়ে পায়ে হাওয়া লাগতে পারে। এর ফলে ঘাম কম হবে। তাই জুতো দেখে কিনুন।
৭. রোদে দিন জুতো, মোজা
দেখুন রোজ তো নতুন জুতো পরা যায় না। কিন্তু রোজের মোজা রোজ ধুয়ে দেওয়া যায়। তাই মোজা রোজ পালটে পালটে পরুন আর আগের মোজা ধুয়ে রোদে দিন। এতে মোজার মধ্যে ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাস হবে না, মোজার ভিতরের আর্দ্রতা আর থাকবে না। এর পাশাপাশি সপ্তাহে এক দিন জুতো ভালো করে ধুয়ে রোদে দিন আর খুব ভালো করে, পারলে টানা দু দিন ধরে রোদে রাখুন। বর্ষাকালের জন্য অন্তত তিন জোড়া জুতো রাখুন। ভিজে জুতো একদমই পরা ঠিক নয়।
৮. অ্যাপেল সিডার ভিনিগারের প্রয়োগ
ত্বকের নানা সমস্যার এর আগে অ্যাপেল সিডার ভিনিগারের কথা বারবার বলেছি। এবার না হয় পায়েও এটি ব্যবহার করুন। এটি পা থেকে ব্যাকটেরিয়ার সমস্যা দূর করবে, সুন্দর গন্ধ আসবে পা থেকে, পা ফ্রেস থাকবে।
উপকরণ
১ চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার, জল, বেকিং সোডা।
পদ্ধতি
তিনটে উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে নিন। পায়ে এই মিশ্রণ লাগিয়ে রাখুন আর ২০ মিনিট রেখে দিন শুকিয়ে যাওয়ার জন্য। তারপর ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে দু দিন অবশ্যই করুন।
আসলে সত্যি কথাটা হল, আমরা পায়ের দিকে একদমই নজর দিই না। কিন্তু এই পাই সব ময়লা সহ্য করে। তাই আপনার পাকে একটু প্যাম্পার করুন এবার। তাহলেই হবে সব সমস্যার সমাধান।
মন্তব্য করুন