রঙ ছাড়া জীবন অচল। রঙ আছে বলেই কিন্তু আমাদের চারপাশটা এতটা সুন্দর দেখায়। প্রত্যেকটি মানুষেরই কিছু বিশেষ রঙ পছন্দের। কিন্তু যদি মনে প্রশ্ন জাগে যে, কোন রঙটি আপনার জন্য মানানসই, তাহলে তা জানা যাবে রঙের বিশ্লেষণ (colour analysis)-এর মাধ্যমে।
তবে কোনও ফ্যাশন স্টাইলিস্টের পরামর্শ না নিতে চান, তাহলে কীভাবে বুঝবেন যে, কোন রঙটি আপনার জন্য উপযোগী বা মানানসই? ভয় পাবেন না, সেটাও সম্ভব। আপনার চেহারার প্রাকৃতিক রঙ বজায় রেখে কোন রঙে সেজে নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে পারবেন, তার সমাধান আপনাকে দেবে দাশবাস।
কালার অ্যানালাইসিস কী? কীভাবে বিচার করবেন কোন রঙটি আপনাকে মানাবে?
কালার অ্যানালিসিস বা রঙ বিশ্লেষণ হ’ল কোন ব্যক্তির ত্বকের বর্ণ, চোখের রঙ এবং চুলের বর্ণের সঙ্গে পোশাক এবং মেকআপ শেডগুলির রঙগুলি মিলিয়ে তা নির্ধারণ করার একটি পদ্ধতি।
লন্ডনের ফ্যাশন রিটেল একাডেমির অধ্যাপক তথা সেলিব্রিটি স্টাইলিস্ট অ্যান্টনি ম্যাকগ্র্যাথ জানিয়েছেন, সর্বদা একটজন স্টাইলিস্ট বা পেশাদার রঙ বিশ্লেষকের কাছ থেকে কালার অ্যানালিসিস করাটা খুবউ জরুরী। সংক্ষেপে বলতে গেলে, আপনার স্কিন টোন (ত্বক, চুল এবং চোখ) ব্যবহার করে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনি ওয়ার্ম(warm)না কুল(cool) এবং সমগ্র কালারিং অর্থাৎ আপনার ত্বক কতটা ডার্ক বা লাইট তা নির্ধারণ করতে পারবেন।
সঠিক রঙ বাছাটা কেন দরকার?
আপনি আপনার পোশাকের প্রতি যত্নশীল হোন বা না হোন,আপনার গায়ে কোন রঙগুলি ভাল দেখাচ্ছে তা জেনে রাখা দরকার। কারণ আপনি যদি না চান যে সারাক্ষণ আপনাকে অসুস্থ দেখাক, তাহলে তো অবশ্যই দরকার। কারণ একটা রঙই আপনার চেহারা এবং সমগ্র লুকটাকে ডুবিয়ে দিতে পারে। আসুন জেনে নিন আপনার কমপ্লেকশন অনুসারে কীভাবে রঙ বাছবেন-
আপনার আন্ডারটোন(undertone) নির্ধারণ করুন
আপনার ত্বকের উপরিভাগ যতই কালো (dark) বা ফর্সা (light) হোক না কেন ত্বকের আন্ডারটোনটি হয় শীতল (cool),না হয় উষ্ণ(warm) আর তা না হলে নিরপেক্ষ (neutral) হবে। তবে আপনি কোন দলে রয়েছেন তা নির্ধারণের কয়েকটি উপায় রয়েছে।
আপনার কব্জি কাছের শিরাগুলি দেখুন। আপনার ত্বক যদি পর্যাপ্ত মাত্রায় হালকা হয় যে, আপনি আপনার শিরাগুলি দেখতে পাচ্ছেন তাহলে আপনার ত্বকের নীচে সেগুলি নীল বা সবুজ দেখাচ্ছে কিনা তা দেখুন। যদি প্রথমেরটা হয়, তাহলে বুঝতে হবে যে আপনার কুল আন্ডারটোন রয়েছে, আর যদি পরেরটি হয়, তাহলে আপনার ওয়ার্ম আন্ডারটোন।
আপনার ঘড়িটি দেখুন, সোনালী না রূপোলি
রূপোলি গয়নার প্রবণতা হল যে তা কুল আন্ডারটোনে ভাল দেখায়। আর সোনার গয়না সাধারণত ওয়ার্ম আন্ডারটোনে বেশি ভালোলাগে।
মৌলিক বিষয়গুলির খেয়াল করে দেখুন। আপনার আলমারির পোশাক সম্ভারে যদি আপনার বেশিরভাগ পোশাক কালো বা সাদা হয়ে থাকে, তাহলে আপনার কুল আন্ডারটোন। অন্যদিকে আইভোরি বা ব্রাউনের কোনও শেড বা ব্রাউন রঙের পোশাক ওয়ার্ম আন্ডারটোনকে ইঙ্গিত করে।
আপনার ত্বকের সঙ্গে সূর্যের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করুন
শীতল আন্ডারটোনযুক্ত লোকেরা উষ্ণ আন্ডারটোনযুক্ত ব্যক্তিদের চেয়ে খুব সহজে সানবার্ন হয়ে যায়, সেখানে ওয়ার্ম আন্ডারটোনযুক্ত ব্যক্তিরা সূর্য়ালোকে কেবল কালো হয়ে যান।
নিউট্রাল আন্ডারটোনে
এর পরও বিভ্রান্ত? এখন যদি আপনার মনে হয় যে, আপনি তো এর কোনও দলেই পুরোপুরিভাবে পড়ছেন না, তাহলে বুঝতে হবে যে আপনি নিউট্রাল আন্ডারটোনে পড়েন, এই ধরণের মানুষদের সঙ্গে কিন্তু অনেক রকমের রঙ মানানসই হয়।
আন্ডারটোন অনুসারে কোন রঙ মানানসইঃ
কুল আন্ডারটোনঃ
এক্ষেত্রে আপনার সঙ্গে যেকোনও জুয়েল টোন (যেমন উজ্জ্বল নীলা রঙের নীল, পার্পেল, সবুজ, হলুদ ইত্যাদি), কুল গ্রে, ক্রিস্প ওয়াইট এবং যেকোনও সি-শেড (সি-ব্লু, সি-গ্রিন) খুব ভালো দেখাবে।
ওয়ার্ম আন্ডারটোনঃ
যেকোনও আর্থ টোন কালার যেমন কমলা, হলুদ, হালকা তামাটে এবং অফ হোয়াইট রঙ আপনার ওপর দেখতে বেশ সুন্দর লাগে।
নিউট্রাল আন্ডারটোনঃ
বর্ণমালার বিভিন্ন রঙ কিন্তু আপনার সঙ্গে মানানসই হতে পারে,কিন্তু উজ্জ্বল রঙ বাছার ক্ষেত্রে আপনাকে একটু সতর্ক থাকতে হবে।
তবে এছাড়াও বিশুদ্ধ লাল, টিল কালার, ডার্ক পার্পেল এইসমস্ত রঙ কম-বেশি সকলকেই ভালোলাগে।
মন্তব্য করুন