৩ বছর থেকে ৮০ বছর-সব বয়সের মানুষরাই আজকাল মোবাইলের নেশায় আক্রান্ত। কিছু একটা জানার হলেই আমরা মোবাইল বের করে দেখে নিই। সারাদিন মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকলে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে আমাদের শরীরে। যেমন মাথা ব্যাথা,চোখে ব্যাথা ইত্যাদি। বাচ্চাদের জন্য মোবাইল আরো বেশি ক্ষতিকারক। তাদের মধ্যে একবার মোবাইলের নেশা ঢুকে গেলে সহজ উপায়ে আমরা তা দূর করতে পারিনা। তাই আজ আমি কিছু পদ্ধতি তুলে ধরছি যার অনুসরণ করলেই আমরা খুব সহজে বাচ্চাদের মোবাইল থেকে দূরে রাখতে পারি।
বাচ্চাদের শুধু মাত্র একটি নির্দিষ্ট সময়তেই মোবাইল ব্যাবহার করতে দেওয়া হবে
মোবাইল ফোনের ব্যাবহার করার সময় কমিয়ে দিলে বাচ্চারা মোবাইলের নেশা থেকে মুক্তি পেতে পারে। বাচ্চাদের যদি বলা হয় যে শুধু মাত্র নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তারা মোবাইল ব্যাবহার করতে পারে। মোবাইলে গেম খেলার সময় বেঁধে দিতে হবে।
এমনও হতে পারে যে কোনো কোনো দিন খেলা শেষ না হলেও মোবাইল যেন নিয়ে নেওয়া হয়। খুব বেশী দিন এমন চললেই কম সময়ের ফলে, গেম শেষ না হওয়ার জন্য বাচ্চারা খেলার থেকে উৎসাহ হারায় এবং মোবাইলের নেশা ছেড়ে যায়।
খুব ছোট বাচ্চাদের মোবাইল দেওয়াই উচিত না
যতদিন না বাচ্চাদের বোধশক্তির সৃষ্টি হয় ততদিন তাদের মোবাইল দেওয়া একদমই উচিত না। মা বাবার থেকে মোবাইল নিলে বাচ্চাদের খুব বেশি নেশা হয় না কারণ তারা জানে যে একটা সময়ের পর তাদের মোবাইলটা তাদের মা বাবাকে ছেড়ে দিতেই হবে। বাচ্চাদের নিজেদের মোবাইল থাকলে তারা যতক্ষণ ইচ্ছা মোবাইল ঘাটতে পারে এবং তার ফলে তীব্র নেশার সৃষ্টি হতে পারে। সহজে মোবাইলের নেশা তাড়ানো সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই উচিত প্রথম থেকেই চেষ্টা করতে যাতে মোবাইলের নেশাই না হয়। নিজস্ব মোবাইল যেন তাদের না থাকে।
অন্য কাজে বাচ্চাদের ব্যস্ত রাখুন
বাচ্চারা অন্য কাজ করলে তাদের মোবাইলকে দেওয়া সময়ও কমে যাবে এবং এই ভাবে আস্তে আস্তে মোবাইলে গেম খেলার অভ্যাসও কমে যাবে। সেই সময় কোনো রকম শারীরিক খেলা খেললে বাচ্চারা উৎসাহ পাবে। নতুন বন্ধুদের সাথে খেলতে এবং তার সাথে সাথে শারীরিক কসরতের ফলে তাদের শরীর এবং মনও সুস্থ থাকবে। বই পড়ার অভ্যাস তৈরি করুন।
বাচ্চাদের মধ্যে বই পড়ার নেশাকে রপ্ত করান। দেখবেন নিজের থেকে মোবাইল থেকে দূরে থাকছে।
অভিভাবকদের নিজেদের সতর্ক থাকতে হবে
কোনো কিছু বাচ্চাদের শেখানোর আগে আমাদের নিজেদের সেইটা শিখতে হবে। তাই আমাদের সর্বপ্রথমে মোবাইলের থেকে দূরে থাকতে হবে এবং খুব দরকার ছাড়া মোবাইল ব্যাবহারই যেন না করা হয়। এর ফলে বাচ্চারাও মা বাবাদের দেখে মোবাইল থেকে দূরে থাকার প্রয়োজন শেখে। নাহলে যদি বাবা মায়েরা সমানে মোবাইল নিয়ে ব্যাস্ত থাকে তাহলে শত বার বলার পরেও তারা বাচ্চাদের মোবাইল থেকে দূরে রাখতে পারবে না।
মোবাইলে পাসওয়ার্ড লাগিয়ে রাখা
অনেক সময় অভিভাভকদের অবর্তমানে বাচ্চারা মা বাবাদের মোবাইল ব্যবহার করে থাকে। এই নেশাটি আটকানোর জন্য আমাদের উচিত আমাদের অনুপস্থিতে খেয়াল রাখা যে বাচ্চারা আমাদের মোবাইল যেন না ব্যাবহার করে। মোবাইলে পাসওয়ার্ড লাগিয়ে রাখলে সেটা বাচ্চাদের মোবাইল ব্যবহার করাকে আটকায়।
তাহলে বুঝতে পারছি যে বাচ্চাদের মোবাইলের থেকে দূর রাখা অতিআবশ্যক।মোবাইলের বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন বাচ্চাদের কচি মনের উপর প্রভাব ফেলে। যেমন আগেই লিখেছি সর্বপ্রথমে অভিভাবকের মোবাইলের নেশা দূর করতে হবে। বাচ্চারা কিন্তু বড়দের থেকেই শেখে তাই আমাদের আগে সতর্ক থাকতে হবে আর উল্লেখিত কয়েকটি পদ্ধতি মেনে চললেই খুব সহজেই আমরা বাচ্চাদের মোবাইলের নেশা থেকে মুক্ত করতে পারি।
মন্তব্য করুন