এখন বাড়িতে শুধু মা ঠাকুমাদের জি বাংলা, স্টার জলসা চলে না। সমান তালে নিত্যদিনের জীবনে জায়গা করে নিয়েছে আরেকটি চ্যানেলও। কি সেটা? কি আবার হইচই। মানে টিভি সিরিয়ালের সাথে ওয়েব সিরিজও পাল্লা দিয়ে ঘরে ঘরে জায়গা করে নিয়েছে। আর বাংলা ওয়েব সিরিজ বলতে প্রথমেই যেটা মাথায় আসে তা হল ‘হইচই’।
বাঙালীর বিনোদনের অন্যতম ভরসা ওয়েব সিরিজই। করোনাকালে বাইরের সমস্ত হইচই বন্ধ থাকলেও, মুঠো ফোনে কিন্তু দারুণ হইচই হয়েছে। আর সেই সঙ্গে ওয়েব দুনিয়ায় অনেক মুখই কিন্তু বেশ চেনা ও প্রিয় হয়ে উঠেছে। চলুন দেখেনি ওয়েব দুনিয়ার টপ অভিনেতাদের, যারা এই মুহূর্তে ওয়েব দুনিয়ার প্রধান মুখ হয়ে উঠেছেন।
সৌরভ দাস
প্রথমেই বলতে হচ্ছে সৌরভ দাসের কথা, কারণ বাংলা ওয়েব দুনিয়ায় সৌরভ দাসের জনপ্রিয়তা নিয়ে নতুন করে আর কিছু বলার নেই। একের পর এক মুক্তি পাচ্ছে তার ওয়েব সিরিজ থেকে শুরু করে নানান সিনেমা। চরিত্রহীন ওয়েব সিরিজ দিয়ে তার হইচই’এ পা রাখা। তারপর একের পর এক ওয়েব সিরিজ।

সম্প্রতি হইচই’তে মুক্তি পেয়েছে তার ওয়েব সিরিজ চরিত্রহীন৩। এছাড়াও মণ্টু পাইলট, রহস্য রোমাঞ্চের মত ওয়েব সিরিজগুলিতে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি শুধু কমেডিয়ান নন। যেকোনো চরিত্রে অভিনয়ের ক্ষেত্রে তিনিও যথেষ্ট সাবলীল। সম্প্রতি ‘মণ্টু পাইলটের’ জন্য হইচই এর তরফ থেকে তার ঝুলিতে পুরষ্কারও এসেছে সেরা অভিনেতার।
অনির্বাণ ভট্টাচার্য
গোয়েন্দা প্রেমী বাঙালীর ব্যোমকেশ বক্সির প্রতি টান বরাবরের। হইচই’এ ব্যোমকেশ বক্সির হাত ধরে অনির্বাণ ভট্টাচার্যের জনপ্রিয়তা এখন তুঙ্গে। হইচই’এ ব্যোমকেশ মানেই অনির্বাণ ভট্টাচার্য। ব্যোমকেশ নিয়ে ওয়েব সিরিজ হবে আর অনির্বাণ ভট্টাচার্য সেখানে নেই এটা যেন টিনএজের চোখ এখন মানতেই পারবে না।

২০১৭তে পরিচালক সায়ন্তন ঘোষালের হাত ধরে ব্যোমকেশ রূপে হইচই’তে পা দেন অনির্বাণ। ব্যাস প্রথম সিজনেই তার অভিনয় একেবারে বাজিমাত করে দেয়। তারপর পর পর সিজন। আর সদ্য মুক্তি পেয়ে গেল সিজন ৬ ও। ব্যোমকেশের সাফল্যের পর, শুধু ব্যোমকেশ নয় আরও অনেক ওয়েব সিরিজেই তাকে দেখা যাচ্ছে নিয়মিত।
অনির্বাণ চক্রবর্তী
ওয়েব দুনিয়ায় একেনবাবুকে চেনেনা এমন কেউ আছে কি? বোধহয় না। আর একেনবাবুর হাত ধরেই অনির্বাণ চক্রবর্তী আমাদের ঘরে ঘরে বাঙালীর মনে মনে ঢুকে পড়েছেন। যদিও একেনবাবু ওয়েব সিরিজের অনেক আগেই ‘ফড়িং’ ছবির মাধ্যমে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অভিষেক হয় তার। কিন্তু একেনবাবু তাকে একটা আলাদা পরিচিতি দিয়েছে।

পরিচালক অনির্বাণ মল্লিকের হাত ধরে হইচই’তে একেনবাবু প্রথম আসেন ২০১৮তে। প্রথম সিজনেই বাজিমাত করেন একেনবাবু ওরফে অনির্বাণ চক্রবর্তী। তারপর থেকে পর পর সিজন মুক্তি পাচ্ছে হইচইএ। এই অক্টোবরেই মুক্তি পেয়েছে সিজন৪। সেটাও এখন হাই রেটিংএ। তবে শুধু একেনবাবু নয়, সম্প্রতি আড্ডা টাইম্সে ‘ফেলুদা ফেরত’ ওয়েব সিরিজেও জটায়ুর ভূমিকায় দর্শক তাকে মনে রাখবে। এছাড়াও আরও ওয়েব সিরিজ মুক্তির অপেক্ষায়। সব মিলিয়ে অনির্বাণ চক্রবর্তী এখন ওয়েব দুনিয়ার বেশ প্রিয় মুখ বলা চলে।
বিক্রম চট্টোপাধ্যায়
সৌমিক চট্টোপাধ্যায় পরিচালনায় লকডাউনের সময় হইচই’এ মুক্তি পায় ওয়েব সিরিজ ‘তানসেনের তানপুরা’। এই ওয়েব সিরিজের হাত ধরেই হইচই’এ প্রবেশ ঘটে তার। আর প্রথম ওয়েব সিরিজেই তিনি মন জয় করে নিয়েছেন দর্শকদের। এরকম রোম্যান্টিক হিরোও যে এরম গোয়েন্দার চরিত্রকে এতো সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে তা বেশ সাবলীল ভাবেই করে দেখিয়েছেন বিক্রম।

প্রথম সিজনের সাফল্যের পর এই নভেম্বরেই মুক্তি পেয়েছিল সিজন ২। সেখানেও বিক্রম মন জয় করেছেন সকলের। সব মিলিয়ে বিক্রম চ্যাটার্জি নতুন মুখ হলেও, ইতিমধ্যেই কিন্তু অভিনয় ক্ষমতা দিয়ে ওয়েব দুনিয়ার প্রধান মুখ হয়ে উঠছেন।
অর্জুন চক্রবর্তী
২০১৯’এ ওয়েব সিরিজে অভিষেক হয় তার। তারপর ২০২০র জানুয়ারীতে মুক্তি পায় ওয়েব সিরিজ ‘বন্য প্রেমের গল্প’। যথেষ্ট সফল হয় এটি। এবং অর্জুন চক্রবর্তীর অভিনয় দর্শকের নজর কাড়ে।

দ্বিতীয় সিজনও হয় এই ওয়েব সিরিজের। এছাড়াও হইচই’এ সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া তার ছবি ‘লাভ আজ কাল পরশু’র জন্য হইচই এর তরফ থেকে তার ঝুলিতে আসে পুরষ্কারও। এছাড়াও তার আরও অনেক জনপ্রিয় ছবি হইচই এ দেখা যাচ্ছে। তিনিও যে হইচই তথা ওয়েব দুনিয়ার অন্যতম প্রধান মুখ হয়ে উঠতে চলেছেন সেটা বলাই বাহুল্য।
মন্তব্য করুন