ফ্যাশনও হতে পারে হালাল কিংবা হারাম!
হালাল খাবার, হালাল মেকাপ ইত্যাদির কথা আমরা শুনেছি। কিন্তু হালাল পোশাকের কথা আপনি শুনেছেন কি? আসুন তাহলে আজ আমরা জেনে নেই হালাল ফ্যাশন বলতে আসলে কী বুঝায় আর কোনগুলোকে হালাল ফ্যাশন বলা হয়!
হালাল ফ্যাশন বলতে কী বুঝায়?
হালাল-হারাম ইসলাম ধর্মের আদেশ-নিষেধ সংক্রান্ত শব্দ হলেও আমরা প্রায় সব ধর্মাবলম্বীর মানুষজনই এই শব্দ দুটির সাথে পরিচিত। ইসলাম ধর্মের নিয়মানুযায়ী হালাল বলতে বুঝায় সেসব জিনিসকে যা ইসলামে অনুমোদনযোগ্য অর্থাৎ সেগুলো ব্যবহার করা যাবে। অন্যদিকে হারাম বলতে বুঝায় অননুমোদিত বিভিন্ন জিনিস, যেগুলো ব্যবহার করা ইসলামে নিষিদ্ধ। তবে, কোন ধরণের ফ্যাশন করা হালাল- সে বিষয়ে বিতর্কটি সম্ভবত একেবারেই নতুন। হালাল ফ্যাশন বলতে সে ধরনের ফ্যাশনকে বুঝায় যেগুলো ইসলামের দৃষ্টিতে অনুমোদিত। সেটা হতে পারে পোশাকে, কিংবা হতে পারে সাজসজ্জায়।
মুসলিম নারীদের কাছে প্রিয় হয়ে উঠছে হালাল পোশাক
সম্প্রতি মুসলমান নারীদের কাছে হালাল পোশাকের জনপ্রিয়তা বেশ অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। আজকাল পাকিস্তানি পোশাকের আদলে বড় বড় কুর্তি, কামিজ আর ঢিলেঢালা পায়জামার প্রচলন বাংলাদেশ ও ভারতবর্ষে ভালোভাবেই লক্ষ্য করা যায়। সেই সাথে তুমুল জনপ্রিয়তা বেড়েছে ইসলামি পোশাক হিজাবেরও। আজকাল মুসলিম নারীরা পোশাকের সাথে মিল রেখে মাথায় নানা রঙের কাপড় পরছে, হিজাব নামে পরিচিত। এতে একদিকে যেমন ইসলামের রীতিও মেনে চলা হচ্ছে, তেমনি অপর দিকে ফ্যাশনেও আনছে বৈচিত্র!
হাল-ফ্যাশনের উপাদান ট্যাটু করা হারাম ইসলামের দৃষ্টিতে!
আপনি জানেন কি, শরীরের যে কোনো অংশে ট্যাটু করা ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণরূপে হারাম? ইসলাম ধর্মে আছে, দেহের কোনো অংশের বিকৃতি সাধন করা হলে অর্থাৎ ট্যাটু করা হলে তা বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না। তাই সমগ্র মুসলিম জাতিরই যে কোনো ধরনের ট্যাটু করা থেকে সাবধান হওয়া উচিত বৈ কী!
রুচিশীল, মার্জিত, হালাল ফ্যাশনকে প্রোমোট করে ইসলাম
বিভিন্ন আলেম-ওলামাগণের মতে, হালাল ফ্যাশন বলতে শুধুমাত্র ইসলামি পোশাককেই বুঝায় না। বরং ইসলামের দৃষ্টিতে যে কোনো মার্জিত পোশাককেই হালাল পোশাক বলা হয়ে থাকে, যেগুলো মানুষের শরীর পরিপূর্ণভাবে ঢেকে রাখতে সহায়তা করে। তাঁদের মতে, ইসলাম রুচিশীল, মার্জিত ও মর্যাদাশীল ফ্যাশনকে প্রোমোট করে।
তাহলে এই লেখাটির মাধ্যমে আজকে আমরা জেনে নিলাম, হালাল ফ্যাশন কী এবং তা মুসলমানদের জন্য কতখানি গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, ইন্দোনেশিয়ার তরুণ প্রজন্মের মধ্যে হালাল ফ্যাশনের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তবে বর্তমানে ইন্দোনেশিয়াকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানেও এই হালাল ফ্যাশনের জনপ্রিয়তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এমনকি বিভিন্ন অমুসলিম দেশ যেমন সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, হংকং, ফিলিপাইন ও যুক্তরাষ্ট্রেও হালাল ফ্যাশনের বিষয়টি অনেকের আলোচনা ও আগ্রহের বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে।
মন্তব্য করুন