আপনি কি হাজা‘র চুলকানির জ্বালায় একেবারে অস্থির? মানে রাস্তা ঘাটে, ট্রেনে বাসে, অফিসে বাজারে যখন তখন আপনাকে সকলের সামনে অপ্রস্তুত হতে হচ্ছে কি এই চুলকানির জ্বালায়? এদিকে আবার লজ্জায় ডাক্তারের কাছেও যেতে পারছেন না| এখন কি উপায়| যদিও এসব বিষয়ে ডাক্তারের কাছে যেতে একেবারেই গাফিলতি করা উচিত নয়, তবুও আপনি যদি এই জ্বালা ভোগ করে থাকেন এবং এখনো ডাক্তারের কাছে না গিয়ে থাকেন, তাহলে আজকের ‘দাশবাসে’র টিপস শুধুমাত্র আপনারই জন্য| কারণ হাজা’র জ্বালা কে ঠান্ডা করতে ৫ টি ঘরোয়া উপায় নিয়ে আমি আজ হাজির হয়েছি|
হাজা আমাদের সকলেরই অল্প বিস্তর হয়ে থাকে| এটি একধরনের চর্ম রোগ যা সময় মত সারিয়ে না তুললে কিন্তু বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে| এর ফলে আমাদের ত্বক রুক্ষ, শুষ্ক হয়ে যায়| কখনো ফোস্কা মত হতে দেখা যায়, এছাড়া চামড়া শুষ্ক ফ্লেক্সের মত উঠে আসে| অতিরিক্ত জল বা সাবান ব্যবহার করলে বা ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাসের ফলে এই ধরনের স্কিন প্রবলেমে রুক্ষম হয়ে থাকে| যদি এর থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে আজকের লেখা পড়ে নিন|
১. নারকেল তেল
নারকেল তেল আমাদের ত্বকের সব রকম সমস্যার জন্য একটি ম্যাজিক উপাদান| এতে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে, তাই ত্বকের যে কোনো রকম সমস্যা হলে নির্ভয়ে এবং নিঃসন্দেহে নারকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন|
পদ্ধতি
হাজা কম করার জন্য আপনার শরীরের যে অংশে হাজা সংক্রমন হয়েছে সেখানে সরাসরি নারকেল তেল লাগান দিনে অন্তত ২ বার করে| যতদিন না আপনার হাজা একেবারে কম হচ্ছে তত দিন প্রয়োগ করুন| এছাড়া আপনি দিনে ২-৩ চামচ করে নারকেল তেল খেতে পারেন বা নারকেল তেলে রান্না করা খাবার খেলেও কিন্তু এই ধরনের চর্ম রোগের সংক্রমন কে রোধ করতে পারা যায়|
২. নিমপাতা
নিমপাতা এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা আপনার শরীরে হাজা নামক সংক্রমন কে একেবারে নির্মূল করে দেবে| নিমপাতাতেও অ্যান্টি- ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে যা এই ধরনের চর্ম রোগ গুলির নির্মূলে অত্যন্ত কার্যকরী|
পদ্ধতি ১
নিমতেল বানানোর প্রক্রিয়া আমি আপনাদের আগেই জানিয়েছি। সেই নিমতেল ২ থেকে ৩ ফোঁটা একবালতি হালকা গরম জলে মিশিয়ে সেই জল দিয়ে স্নান করুন| এরপর গা হাত পা মুছে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন| এতে আপনার হাজা কমে যাবে|
পদ্ধতি ২
এছাড়া নিমপাতা আর কাঁচা হলুদ একসাথে বেটে হাজা যেখানে হয়েছে সেখানে প্রয়োগ করুন| পুরোপুরি শুকিয়ে যাওয়া অবধি অপেক্ষা করুন| শুকিয়ে গেলে হালকা গরম জলে ধুয়ে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ভালো করে মুছে নিন| দিনে একবার করে এই মিশ্রণ লাগালে ১ মাসের মধ্যেই হাজা নির্মূল হবে|
৩. চন্দন পাউডার
ত্বকের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করার জন্য চন্দন পাউডার নিশ্চই লাগান। এবার হাজার জ্বালা থেকে মুক্তি পেতেও এই প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার শুরু করুন| কারণ এতে আছে অ্যান্টি-ইন্ফ্লেমেটেরি উপাদান, এর ফলে হওয়া চুলকানি, ফোস্কা, চুলকানির পর হওয়া জ্বালা থেকে খুব তাড়াতাড়ি আরাম দেয়| এটি আমাদের ত্বক ঠান্ডা করে এবং হাজা’র প্রভাব কে কম করে একে গোড়া থেকে নির্মূল করে|
পদ্ধতি
১ চামচ চন্দন পাউডার, ১ চামচ কর্পুর পাউডার এবং গোলাপজলের পেস্ট বানিয়ে সংক্রামিত অংশে লাগান।১০ মিনিট অপেক্ষা করে হালকা গরম জলে ধুয়ে ফেলুন| দিনে ১ বার করে ১ মাস ব্যবহার করলেই আপনি ভালো ফল পাবেন|
৪. হলুদ
হলুদ তার অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদানের জন্য চর্ম রোগের চিকিৎসার জন্য আয়ুর্বেদ মতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে| তাই আপনিও হাজা থেকে মুক্তি পেতে এই উপাদানটি চোখ বন্ধ করে ব্যবহার করতে পারেন|
পদ্ধতি
কাঁচা হলুদ ও দুধের পেস্ট বানিয়ে যেখানে হাজা হয়েছে সেখানে লাগান| শুকিয়ে গেলে হালকা গরম জলে ধুয়ে ফেলুন| জলদি ফল পেতে দিনে ২ বার করে প্রয়োগ করুন|
৫. অ্যালোভেরা
আপনার কাছে যদি পতঞ্জলির অ্যালোভেরা জেল না থেকে থাকে তাহলে কিন্তু কিনে ফেলুন| আর যদি বাড়িতে অ্যালোভেরা গাছ থাকে তাহলেও হবে| কারণ অ্যালোভেরা জেল হাজা’র যন্ত্রণার জ্বালা ঠান্ডা করতে খুব উপকারী| এছাড়া নিয়মিত প্রয়োগের ফলে এর প্রভাব কম হয়ে যায়|
পদ্ধতি
অ্যালোভেরা পাতার থেকে অ্যালোভেরা জেল বের করে নিয়ে বা পতঞ্জলি অ্যালোভার জেল থাকলে তা সরাসরি হাজা হওয়া অংশে লাগান| শুকিয়ে গেলে হালকা গরম জলে তুলো ভিজিয়ে মুছে ফেলুন| এটি কিন্তু খুব বেশি মাত্রায় কার্যকরী হাজা’র প্রভাব কে একেবারে নির্মূল করতে|
এগুলি সব গুলি প্রাকৃতিক উপাদান, তাই এর ফলে আপনার উপকার হওয়া কিন্তু নিশ্চিত| তাই শরীরের যে কোনো অংশে হাজার লক্ষণ দেখা মাত্র এগুলির প্রয়োগ করুন| এতে লজ্জা পাওয়ার কিছুই নেই। তবে অতিরিক্ত বেশি মাত্রায় এর সংক্রমন ঘটলে কিন্তু অবশ্যই সময়মত চিকিৎসার প্রয়োজন|
https://dusbus.com/bn/chuli-theke-mukti-pan-ghoroya-upaye/
মন্তব্য করুন