চুলে তেল লাগানো খুবই দরকার। তেল আমাদের চুলের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনী। তেল চুলে পুষ্টি যোগায় এবং চুল গজানোর জন্যও খুবই কার্যকরী। তেলের সব পুষ্টি পাওয়ার জন্য আমাদের মাথার তালুতে খুব ভালো করে আঙুল দিয়ে তেল মালিশ করা জরুরি। খুব ভালো করে মালিশ করার ফলেই কিন্তু তেল আমাদের চুলের গোড়ায় পৌঁছাতে পারে। তেল আমাদের হেয়ার ফলিকেল্সের জন্য পুষ্টি যোগায় যার ফলে খুব তাড়াতাড়ি আমাদের চুল বেড়ে ওঠে।
কতবার চুলে তেল লাগানো উচিত?
বিভিন্ন ধরণের ত্বকের জন্য বিভিন্ন রকমের তেল লাগানোর প্রয়োজন। চুলে কতবার তেল দিতে হবে তা সম্পূর্ণ চুলের ধরণের উপর নির্ভর করে।যাদের শুষ্ক চুল তাদের চুল পড়ে যাওয়া এবং ভেঙে যাওয়ার বেশি সম্ভাবনা থাকে। তাদের সপ্তাহে বেশি তেল লাগানো উচিত। সপ্তাহে ২-৩ বার তেল লাগানো খুবই প্রয়োজনীয় এই ধরণের চুলের জন্য।
তৈলাক্ত চুলঃ
যাদের তৈলাক্ত চুল, তাদের সপ্তাহে একবার তেল লাগালেই যথেষ্ট। তৈলাক্ত চুলে আবার বেশি তেল লাগানো একদম উচিত না। বেশি তেল লাগালে তা আমাদের চুলকে তেলতেলে করে তোলে যা একদমই দেখতে ভালো লাগেনা। তাই যাদের তৈলাক্ত ত্বক তাদের সপ্তাহে একদিনের বেশী তেল লাগানো উচিত না।
স্বাভাবিক চুলঃ
যাদের স্বাভাবিক চুল তাদের খুব সহজেই সামলানো যায়। তাদের চুল খুবই স্বাস্থ্যকর হয়। তাই খুব বেশি তেল লাগানোর প্রয়োজন নেই। তাও মোটামুটি সপ্তাহে দুবার তেল লাগাতে হবে তাদের।এইটাও মনে রাখতে হবে যে যেধরনেরই ত্বকই হোক না কেন সপ্তাহে অন্তত একবার তেল লাগানো উচিত।
অন্যান্য কারণ
আমাদের চারিদিক দূষণে ভরে উঠেছে। দূষণ আমাদের চুলের ক্ষতি করছে। এই সমস্যার উপকার পাওয়ার জন্য চুলে তেল লাগানো খুবই জরুরি।
চুলে যদি আয়রন বা ক্ষতিকারক কেমিক্যাল না লাগানো হয় তাহলে সপ্তাহে দুবার তেল লাগানো যথেষ্ট। আবার যদি চুলের স্টাইলিং এর জন্য প্রচন্ড গরম আয়রন বা চুলের জেল লাগানো হয় তাহলে প্রথমে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেটা চুল থেকে সম্পূর্ন ধুয়ে ফেলা। তারপর সপ্তাহে ২-৩ বার চুলের গোড়ায় ভালো করে তেল দেওয়া প্রয়োজন।
আমরা আগেই জেনেছি চুলে তেল লাগানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খেয়াল রাখতে হবে যে তেল চুলে অন্তত আধ ঘন্টা যেন লাগিয়ে রাখা হয়। আবার ২৪ ঘন্টার বেশি সময় চুলে তেল দিয়ে রাখা একেবারেই উচিত না।
কারণ বেশি সময়ের জন্য চুলে তেল লাগিয়ে রাখলে আমাদের চুলের সাথে ময়লা,ধুলো বালিও লেগে যায় যা আমাদের চুলের জন্য ক্ষতিকারক। এর ফলে আমাদের চুল সঠিক ভাবে বাড়তে পারেনা এবং চুলের ক্ষতিও হয়ে যায়। তাই খেয়াল রাখতে হবে যে খুব বেশিক্ষণ যেন চুলে তেল না লাগানো থাকে।
যদি সারা রাত চুলে তেল লাগিয়ে রাখা যায় তাহলে সেইটা আমাদের চুলের জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারী। সারা রাত তেল লাগানো থাকলে তা আমাদের চুলের গোড়া পর্যন্ত পৌঁছায়। নারকেল তেল বা অন্য কোনো চুলের তেল গরম করে চুলে লাগাতে পারলে সেইটা আরো বেশি কার্যকরী। কারণ গরম তেল চুলের একদম গোড়া অবধি পৌঁছায় এবং চুলের যত্ন করে।
কোন ধরণের চুলের জন্য কোন ধরণের তেল সবচেয় উপকারি
- শুস্ক চুলের জন্য বাদাম তেল, নারকেল তেল, সরিষার তেল ইত্যাদি।
- তৈলাক্ত চুলের জন জলপাইয়ের তেল, তিলের তেল, জোজোবার তেল ইত্যাদি।
- সাধারণ চুলের জন্য আমলার তেল,জোজোবার তেল,বাদাম তেল ইত্যাদি।
- খুশকিতে ভরা চুলের জন্য ভৃঙ্গরাজ তেল।
তাহলে আমরা জানতে পারলাম যে কতবার চুলে তেল দেওয়া দরকার তা সম্পূর্ণই নির্ভর করছে চুলের ধরণের উপর। তাই প্রথমে আমাদের চুলের ধরণ নির্ধারণ করতে হবে এবং তারপর ঠিক করতে হবে যে কতবার সপ্তাহে তেল লাগানো উচিত।চুলে তেল মালিশ করার সময় শুধু মাত্র আঙুলেরই ব্যবহার করা প্রয়োজনীয়। কোনোভাবেই যেন জোরে হাত দিয়ে মাথার তালুতে চাপ না দেওয়া হয়। মাথার তালুতে চাপ দিলে আমাদের চুল গোড়া থেকে ভেঙে যায় যা একটা বড় অসুবিধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
তাহলে আজ এত অবধিই থাক। আমি বরং চুলে চট করে তেলটা লাগিয়ে নিয়ে আসি। চুলে ব্যাপারে লেখার সাথে সাথে চুলের স্বাস্থ্যের দিকেও তো নজর রাখতে হবে -তাই না?
মন্তব্য করুন