আমাদের বাঙালিদের জীবনে আর কিছু থাকুক না থাকুক, এই একটি জিনিস আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। সেটা হল গ্যাস আর অম্বলের সমস্যা। অনেক কিছু করেও আমরা এই সমস্যা থেকে কিছুতেই মুক্তি পেতে পারি না। তা আমি বল কি, এতদিন তো অনেক কিছুই ব্যবহার করলেন।
অনেক টাকাই তো ওষুধের পিছনে খরচা করলেন। না, আমরা ওষুধের বিরুদ্ধে নই। কিন্তু আজকের আর্টিকেল পড়ে একটু ঘরোয়া কিছু উপাদান যদি ব্যবহার করে দেখেন, তাহলে খুবই ভাল হবে আপনাদেরই। আসুন, ঘরেই আপনি কীভাবে গ্যাস থেকে মুক্তি পাওয়ার মুশকিল আসান উপায় পেতে পারেন দেখে নিই।
১. জোয়ান ব্যবহার করুন
জোয়ান আমাদের গ্যাস বা অম্বলের সমস্যা মেটানোর জন্য খুবই উপকারী। গবেষণা করে দেখা গেছে যে জোয়ানের মধ্যে থাইমল নামের একটি জিনিস রয়েছে যা আমাদের হজমের ক্ষেত্রে খুবই উপকারী। আর হজম ভাল ভাবে হলে গ্যাসের সমস্যাও অনেকটা কমে যায়। তাই রোজ জোয়ান খান।
কীভাবে খাবেন
জোয়ান যে কোনও ভাবে খাওয়া যায়। তবে খুব ভাল হয় যদি দুপুরে ও রাতে খাবারের পর খানিক জোয়ান চিবিয়ে খেয়ে জল খেয়ে নেন। এতে উপকার পারেন। আর ছুটির দিনে মশলাদার খাবার খাওয়ার পর তো এটা করবেনই।
২. জিরে খান রোজ
জিরের মধ্যে এমন কিছু এসেনশিয়াল অয়েল বা মৌলিক তেল রয়েছে যা স্যালিভারি গ্ল্যান্ডকে আরও সক্ষম করে। তার ফলে খাবার ভাল করে হজম হয় আর অতিরিক্ত গ্যাসও তৈরি হয় না।
কীভাবে খাবেন
এক টেবিল চামচ জিরে নিয়ে দু কাপ জলের মধ্যে দিয়ে ১০ মিনিট মতো ফুটিয়ে নিন। তারপর ওই জল ঠাণ্ডা করে নিন। এবার খাবার পর ওই জলটা খেয়ে নিন। দেখবেন অনেক উপকার পাবেন।
৩. হিংয়ের কামাল দেখুন
কচুরি বানানোর সময়ে আপনি যে হিং দেন, সেই হিং যেমন স্বাদ বাড়ায় খাবারের, তেমনই আবার কিন্তু গ্যাসের সমস্যা থেকেও মুক্তি দেয়। হিং বায়ুর প্রকোপ কমায় এবং পাকস্থলীতে এমন কিছু ব্যাকটেরিয়া থাকে যাদের জন্য অতিরিক্ত গ্যাস তৈরি হয়, সেইসব ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিও কমায়। আয়ুর্বেদে ‘বাত দোষ’ কমাতে হিং এর ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
কীভাবে খাবেন
নিয়মিত রান্নায় ব্যবহার করের পাশাপাশি আপনি জলের মধ্যে হিং ভিজিয়ে রাখুন। তার মধ্যে সামান্য সৈন্ধব লবন যোগ করতে পারেন যা স্বাদ বাড়াবে। এবার যখনই আপনার খুব গ্যাসের সমস্যা হবে তখনই আপনি এই জল অল্প অল্প করে খেয়ে নিন। দেখবেন কিছু ক্ষণের মধ্যে উপকার পাবেন।
৪. আদায় ভরসা রাখুন
আদা নিয়ে নতুন করে সত্যিই বলার কিচ্ছু নেই। আয়ুর্বেদে আদাকে একটি অত্যন্ত উপকারী উপাদান হিসেবে দেখা হয়েছে। আদার মধ্যে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান পাকস্থলীকে সুস্থ রাখে। আদা নিয়মিত খেলে অতিরিক্ত গ্যাস তৈরি হয় না।
কীভাবে খাবেন
খানিকটা আদা কুড়িয়ে নিন। তারপর সেই আদা এক চামচ লেবুর রসের সঙ্গে মিশিয়ে খেয়ে নিন। এছাড়া আদা জলে ফুটিয়ে সামান্য নুন যোগ করেও খেতে পারেন। দেখবেন নিয়মিত খেলে ফল পাবেনই।
৫. লেবুর রস দেবে উপশম
লেবুও গ্যাস ও অম্বলের সমস্যা দূর করতে অত্যন্ত উপকারী। হঠাত খুব গ্যাসের সমস্যা হলে লেবু কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে আরাম দেয়।
কীভাবে খাবেন
এক কাপ জলে এক টেবিল চামচ লেবুর রস, হাফ চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে ভাল করে নাড়ুন। এই জল এবার আপনার খাবার খাওয়ার পর খান নিয়ম করে। তারপর জানান কেমন আছেন। উপকার পাবেনই।
৬. ত্রিফলাই শেষ কথা
আপনারা অনেকে পেট ঠাণ্ডা রাখতে ত্রিফলার জল খেয়ে থাকেন। ত্রিফলা কিন্তু গ্যাসের জন্যও খুব ভাল। বিশেষত গবেষণা করে দেখা গেছে, ত্রিফলা গ্যাস্ট্রিক আলসার হওয়ার প্রবণতা অনেক কমিয়ে দেয়। তাই নিশ্চিন্তে ত্রিফলা খান।
কীভাবে খাবেন
এক চা চামচের অর্ধেক ত্রিফলা গুড়ো নিয়ে তা জলে ভাল করে ফুটিয়ে নিন। এবার ঘুমোতে যাওয়ার আগে সেই জল খেয়ে নিন। তবে মনে রাখবেন ত্রিফলা কিন্তু খুব বেশি পরিমাণে নেবেন না।
এই ছটি ঘরোয়া পদ্ধতি মেনে চলুন। সঙ্গে মশলাদার খাবার খাওয়া কমান, নিয়ম করে জল খান। আর অনেক ক্ষণ পেট খালি রাখা বন্ধ করুন। তাহলেই দেখবেন গ্যাসের সমস্যা আপনার কাছেই আসছে না আর।
বাসি রুটি খাবার ১০টি উপকারিতা জেনে রাখলে এবার থেকে আর রুটি ফেলবেন না
রাতে ঘুমানোর সময় চুলের খেয়াল নেওয়ার সহজ ৭টি টিপস – চুল ফাটা বন্ধ
মন্তব্য করুন