মেয়েদের মাঝে মাঝেই অবাঞ্ছিত লোম তুলতে হয়। এক্ষেত্রে তাঁরা ভেবে পান না কোন পদ্ধতি আসলে ঠিক হবে। কখনও শেভিং করা ঠিক মনে হয়, আবার কখনও ওয়্যাক্সিং। আর ওয়্যাক্সিং করলেও কীভাবে করা বেস্ট সেই নিয়েও অনেক সময়ে দ্বিধা কাজ করে। দাশবাসের আজকের আর্টিকেল সেই সব সমস্যার ওয়ান স্টপ সলিউশন।
একটি বিশেষ আলোচনা
![শেভিং, ওয়্যাক্সিং](https://dusbus.com/wp-content/uploads/2020/09/Woman-Waxing-Shaving.jpg)
অনেকের মনেই এই দ্বিধা কাজ করে যে শেভিং ভালো না ওয়্যাক্সিং। শেভিং করলে নাকি বেশি করে লোম ওঠে। দেখুন, বিজ্ঞান বলছে মেয়েরা যদি অবাঞ্ছিত লোম তুলতে শেভ করেন মাঝে মাঝে তাহলে লোম ওঠার কোনও ভয় নেই। আর যদি লোম ওঠেও সেটা এতো মোটা হবে না যে নজরে আসবে। কিন্তু অনেকেই শেভিং করে দেখেছেন এই দুটো কথাই খাটছে না। শেভিং করার পর অনেক সময়ে লোম উঠছে। আর শুধু লোম উঠছেই না, বেশ মোটা বা পুরু লোম উঠছে।
তাহলে কী করবেন? দেখুন এমনিতেও সাধারণ ভাবে আমরা দেখি ন্যাড়া হলে বেশ তাড়াতাড়ি চুল গজায়। এটা কিন্তু ছোটবেলা মেয়েদেরও করা হয়। তাই শেভিং বা চুল কাটার পর ধর্মই হচ্ছে আবার গজানো। আর সেই গজানো লোম বা চুল কত পুরু হবে সেটা নির্ভর করছে আপনার চুলের গ্রোথ কেমন তার ওপর। আমরা বলব, আপনার যদি জরুরি পরিস্থিতে লোম তুলতে হয় তাহলে শেভিং করুন। আর শেভিং করুন মাঝে মধ্যে। শেভিংকে অভ্যেস করে ফেলবেন না। আর মুখে তো শেভিং করবেনই না মেয়েরা। অনেক ভালো উপায় হল ওয়্যাক্সিং।
ওয়্যাক্সিং কেন ভালো?
শেভিং-এর বিপরীতে যদি ওয়্যাক্সিং রাখি তাহলে দেখব এর উপকারই উপকার। প্রথমত ওয়্যাক্সিং করলে লোম আবার গজানোর ভয় থাকে না কারণ ওয়্যাক্স করলে লোম ভেতর থেকে উঠে আসে। এক জায়গায় বারবার ওয়্যাক্স করলে সেখান থেকে লোম ওঠা বন্ধই হয়ে যায়। আর সবচেয়ে ভালো জিনিস হল, ওয়্যাক্স নিয়ম করে করলে মুখ ভালো এক্সফলিয়েট করা হয়। ব্ল্যাকহেডস বা এই জাতীয় সমস্যা অনেক কম হয়। আর ওয়্যাক্স করলে চুলকুনি হয় না যেটা শেভিং করলে হয়।
কীভাবে ওয়্যাক্স করবেন?
আজকাল দুই ধরণের ওয়্যাক্স হয়, সফট ওয়্যাক্স আর হার্ড ওয়্যাক্স। আগে শুধু সফট ওয়্যাক্স পাওয়া গেলেও এখন হার্ড ওয়্যাক্সও পাওয়া যায়। হার্ড ওয়্যাক্স মুখের জন্য, আন্ডার আর্ম বা সেনসিটিভ অংশের জন্য বেশি ভালো। সফট ওয়্যাক্স মূলত সারা শরীরের জন্য নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারেন।
স্টেপ ১
প্রথমে হার্ড ওয়্যাক্স বিনস নিয়ে নিন পরিমাণ মতো। আপনি হার্ড ওয়্যাক্স বিনস ভালো কোনও দোকানে পেয়ে যাবেন। অনেক রকম ভ্যারাইটি পেয়ে যাবেন। এবার এটি একটি ওয়্যাক্স হিটারের মধ্যে নিয়ে নিন। যদি আপনার ঘন ঘনওয়্যাক্স করতে হয় তাহলে এই ওয়্যাক্স হিটার কিনে নিন। এটি খুব ভালো কাজ দেয়। হিটারে ওয়্যাক্স বিনস গলতে একটু সময় নেয়। একটু ঘন করে গলিয়ে নেবেন।
স্টেপ ২
এবার যেখান থেকে লোম তুলতে হবে সেই জায়গা আগে ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। তারপর চাইলে একটু পাউডার লাগিয়ে নিতে পারেন ওই অংশে। এবার একটা আইসক্রিমের কাঠি নিয়ে তার সাহায্যে ওই গলানো ওয়্যাক্স লাগিয়ে নিন। দেখবেন যেন আপনার শরীরের তাপমাত্রার কাছাকাছি এনেই আপনি লাগাচ্ছেন।
স্টেপ ৩
খানিক ক্ষণ রেখে যেদিকে চুলের বা লোমের ঢাল, তার বিপরীত দিক থেকে টান দিতে হবে। তাহলেই ওয়্যাক্স উঠে আসবে লোম সমেত। আর যেহেতু পাউডার দিয়েছিলেন তাই খুব একটা ব্যথা লাগবে না।
শরীরে অন্য অংশে ওয়্যাক্স
এবার আশা যাক মুখ, সেনসিটিভ অংশ আর আন্ডার আর্ম ছাড়া অন্য অংশের লোম তোলার প্রসঙ্গে। এক্ষেত্রে কিন্তু আপনারা সফট ওয়্যাক্স ব্যবহার করতে পারেন। আপনি বাজার থেকেও কিনতে পারেন বা বাড়িতে চিনি। লেবুর রস আর জল একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরিও করে নিতে পারেন। এটা এবার ওই ওয়্যাক্স হিটারে দিয়ে একটু গলিয়ে নিন। এবার আসবে ওয়্যাক্স করার পালা। কিন্তু সফট ওয়্যাক্স করার ক্ষেত্রে একটা ভালো টিপস হল ওয়্যাক্স করার দু’দিন আগে জায়গাটা ভালো করে স্ক্রাব করে নিন। স্ক্রাব করার ক্ষেত্রে ঘরে তৈরি স্ক্রাবই ভালো
ঘরে কীভাবে স্ক্রাব বানাবেন?
উপকরণঃ
- ২ চামচ চালের গুঁড়ো
- ১ চামচ অ্যালোভেরা জেল
- ১ চামচ অরেঞ্জ পিল পাউডার
- সামান্য রোজ ওয়াটার
![চালের গুঁড়ো, অ্যালোভেরা জেল, অরেঞ্জ পিল পাউডার, রোজ ওয়াটার](https://dusbus.com/wp-content/uploads/2020/09/Scrub-Ingredients.jpg)
পদ্ধতিঃ
এই সব উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে একটা খড়খড়ে পেস্ট করে নিন। যে জায়গায় ওয়্যাক্স করা হবে সেখানে ভালো করে ঘষুন। এর ফলে ওই জায়গার লোম নরম হয়ে থাকবে। জায়গাটাও পরিষ্কার হয়ে থাকবে। আর লোম তোলার সময়ে একবারে লোম উঠে আসবে, ব্যথাও কম লাগবে।
এবার ওয়্যাক্স করা
ওয়্যাক্স করার দিন আগে ভালো করে জায়গাটা পরিষ্কার করে নিন। মুছে নিয়ে চাইলে অল্প পাউডার দিতে পারেন। এবার গলানো ওয়্যাক্স ওই জায়গায় লাগিয়ে তার ওপর ওয়্যাক্স স্ট্রিপ চেপে ধরুন। খানিক ওপর ওপর রাব করুন আর লোমের বিপরীত দিক থেকে ধরে টেনে তুলুন। দেখবেন লোম উঠে এসেছে সহজেই। তারপর চাইলে একটা বরফ নিয়ে খানিক ওই জায়গায় ঘষতে পারেন, এতে আরাম হবে। আর একটা ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
তাহলে এই হল ওয়্যাক্সিং নিয়ে আপনার সব দ্বিধার অবসান। এবার ওয়্যাক্স করার সব উপকার পান কোনও ঝামেলা ছাড়াই।
মুখে কি ইলেক্ট্রিক ট্রিমার টাইপের যে জিনিসটা আছে লোম তোলার ওটা দিয়ে তোলা যাবে??