ফেসবুকে একখানা অ্যাকাউন্ট নিশ্চয়ই আপনার আছে? আর ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট যদি থেকে থাকে, তাহলে আপনার বন্ধুর মতো গুচ্ছ গুচ্ছ লাইক পাবার অধিকার আপনারও আছে। কিন্তু কি মুশকিল বলুন তো! আপনার বন্ধু যখন কোন ছবি আপলোড করলে বা পোস্ট দিলেই যেখানে মিনিটে ৪০ টা লাইক পড়ে, আপনার ফেসবুক সেখানে গড়ের মাঠ। পোস্ট দিলেন, বা প্রোফাইল পিকচার আপলোড করলেন, লাইক বা কমেন্টের অপেক্ষায় তাকিয়ে থাকতে থাকতেই হয়তো সারা দুপুর কেটে গেল!
আপনার বন্ধু যেখানে ফেসবুকে কমেন্টের উত্তর দিতে সুপার বিজি, আপনাকে সেখানে জুলজুল করে কেবলই তার প্রোফাইলের দিকে তাকিয়ে বসে থাকতে হয়, আর গালে হাত দিয়ে ফেসবুক লাইকের রহস্য ভেবে যেতে হয়! টেনশন, কান্নাকাটি, মুখ গোমড়া করে বসে থাকার দিন এবার খতম বন্ধুরা। এবার আমরা এসে গেছি ‘দাশবাসে’র তরফ থেকে ফেসবুকে অতিরিক্ত লাইকস পাবার গোপন রহস্যের ফাঁস করতে!
‘তুমি আমার বন্ধু হবে?’
আজ্ঞে হ্যাঁ। এটাই কিন্তু ফেসবুকে অতিরিক্ত লাইকস পাবার অন্যতম মূল মন্ত্র। আফটার অল এটা ফেসবুক। তাই সবার দিকেই আপনার বন্ধুত্বের উদার হাত বাড়িয়ে দিন। আপনার ফেসবুকে ধরুন ২০০ জন মোটে বন্ধু আছে। আপনি নিশ্চয়ই আশা করবেন না যে একটা নতুন ডি.পি. দিয়ে বা দারুণ একটা স্ট্যাটাস দিলেও ১০০ টা লাইক পাবার! মনে রাখবেন, যত বেশী বন্ধু, তত বেশী লাইক—এটাই কিন্তু ফেসবুকের মহা মন্ত্র। তাই দেরী না করে এবার সবাইকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাতে উঠে পড়ে লাগুন। দেখবেন আপনার ফ্রেন্ডের লিস্টি যত বাড়ছে, লাইকের হারও তত চড়চড়িয়ে বাড়ছে! তবে সাবধান। তুচ্ছ ফেসবুক লাইকের নেশায় আবার গুচ্ছ অজানা লোককে বন্ধু বানিয়ে বসবেন না।
সোশ্যালি অ্যাক্টিভ থাকুন
রাতদিন ফেসবুকে ‘অন’ থাকবেন না, অথচ গাদাগুচ্ছের লাইকও চাই—এ বললে কিন্তু হবে না। সোশ্যালি অ্যাক্টিভ থাকুন, বন্ধুদের ছবিতে লাইক, কমেন্ট করুন। তবেই না আপনিও লাইক পাবেন। মোটকথা কে কি করছে, কে কোথায় ঘুরতে যাচ্ছে, কার কটা বয়ফ্রেন্ড হল—এসবই চেক করে যান আর কি! মনে রাখবেন এ পৃথিবীতে লাইক বিনা কিন্তু লাইক নাহি মিলে!
বন্ধুদের সাথে গপ্প জুড়ুন
লাইক পেতে যদি চান, তাহলে লোকজনের সাথে গপ্পটি আপনাকে জুড়তেই হবে। নয়তো ফেসবুকে আপনি আছেন, আপনার বন্ধুরাও আছে। অথচ কারুর সঙ্গে আপনার কোনো কথাবার্তা হয় না, কেউ আপনাকে জন্মে চেনে না, হঠাৎ করে ছবি দিলেন, বা পোস্ট করলেন, আর এক্সপেক্ট করলেন সব্বাই ওতে পাগলের মতো লাইকও নাকি করবে! সে আশা কিন্তু গুড়ে বালি! তাই বন্ধুদের সাথে রীতিমতো গল্প জুড়ুন। কমেন্টে, পার্সোনাল চ্যাটে—যেখানে পারবেন। আর যত ভালো বন্ধুদের সাথে কথাবার্তায় পটু হবেন, আপনার ভক্তকুলও বাড়বে তরতর করে। আর সেইসাথে লাইকও!
যা করছেন, তারই ছবি দিন
যুগের হাওয়া! তাই লাইক যদি পাওয়ার অত শখ থাকে, তাহলে যত বেশী পারুন ছবি দিন। যা করছেন, যেখানে যাচ্ছেন—সব! কৌতূহল বড় জিনিস! আর ফেসবুকে আপনি লোকের হাঁড়ির খবর জানছেন, আপনাকেও তো আপনার হাঁড়ির খবর লোককে জানতে দিতে হবে।
ট্যাগান দেখি
ট্যাগ করুন বন্ধুদের। কির’ম ট্যাগ? যা করছেন, যাদের সাথে করছেন ছবিতে বা পোস্টে বা চেক ইনে তাদের ট্যাগ করে দিন। আপনার বন্ধু-বান্ধব কমেন্ট-লাইক তো করবেই, তাদের ট্যাগানোর ফলে দেখবেন তাদের বন্ধুরাও আপনার পোস্টে বা ছবিতে লাইক, কমেন্ট করছে। ধরুন আপনার ডি.পি.-টা আপনার কোনো এক বন্ধু তুলেছে। ব্যাস। ডি.পি. দেবার সময় তাকেও ‘ছবি কৃতিত্বে’ ট্যাগ করে দিন। বা ৬-৭ জন বন্ধুর সাথে রেস্তোরাঁতে খেতে গেছেন, বা দুগগা পুজোয় ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছেন, যাদের যাদের সাথে বেরিয়েছেন ট্যাগিয়ে দিন। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া আর কি!
মজাদার পোস্ট করুন
বড় বড় পোস্ট না একদম। আপনার ওই বড় পোস্ট পড়ার ধৈর্য কারুর থাকে না। তাই ছোট পোস্ট করুন। আর মজাদার পোস্ট করুন। দেখবেন আপনার পোস্টে ফটাফট লাইক পড়ছে।
তাহলে এবার লাইক হচ্ছে না বলে মন খারাপ করে লাভ কি? বরং আরও আরও লাইক কীভাবে পাবেন তার স্ট্র্যাটেজি সাজিয়ে ফেলুন। দেখবেন এবার আপনার প্রোফাইলে ভুরি ভুরি লাইক পাচ্ছেন। আর আপনিও ফেসবুক স্টার হয়ে উঠেছেন।
মন্তব্য করুন