জীবনের নানা ব্যস্ততা ও স্ট্রেসের মাঝে আমরা নিজেদের দিকে তাকাবার সুযোগই পাইনা ভালো করে। আপনি কি জানেন আপনার দেহাবয়ব ঠিক কেমন এখন? আয়নায় কেমন লাগে আপনাকে?
দৈহিক সুস্থতার জন্য প্রয়োজন সুষম খাবার খাওয়ার সাথে নিয়মিত শরীরচর্চা যাতে করে দেহের প্রতি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এর সঠিক সঞ্চালন ঘটে। আর আপনার দেহবিন্যাস হয়ে ওঠে যথার্থ ঈর্ষণীয়। আপনাদের জন্য রইল কিছু যোগাসন যা অবাঞ্ছিত চর্বি কমাতে সাহায্য করবে উরু ও নিতম্বের অংশগুলিতে।
উৎকটাসন:
দেহের বিশেষ ভঙ্গিমা ও পদ্ধতির কারণে এই আসনের এরকম নামকরণ করা হয়েছে(উৎকট + আসন)। এটি কেদারাসন নামেও পরিচিত।
পদ্ধতি:
- মেঝেতে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দুটো পা এর মাঝখানে ফাঁক রেখে দাঁড়ান।
- এবার শরীরের দুদিকে হাত দুটিকে সামনের দিকে সমান্তরাল ভাবে নিয়ে আসুন এবং আঙুলগুলোকে টানটান রাখুন।
- এবার আস্তে শরীরকে ঋজু রেখে চেয়ার এ বসার কায়দায় নিচু হতে থাকুন। সাধ্যমত নিচু হয়ে উরুর সাথে ভূমির কোন তৈরি করুন।
- শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখুন আর এই অবস্থায় নিজেকে রাখুন কমপক্ষে ১৫ সেকেন্ড।
- তারপর হাত দুটোকে ছেড়ে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনুন।
- এই পদ্ধতি ২-৩ বার অনুসরণ করে রিপিট করুন কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে। ৫ মিনিট রোজ এটি করুন নিয়মমাফিক।
উপকারিতা:
- এই যোগসনটি অভ্যাস করলে আপনার উরু ও নিতম্বের সংযোগস্থলের পেশী হয়ে উঠবে সুঠাম ও সবল। অতিরিক্ত চর্বি কমবে।
- বাতের ব্যাথা দূর হবে।
- কোমরের অংশকে সক্রিয় করে তোলে এবং পায়ের গোদ সারাতে সাহায্য করে এই আসনটি।
বীরভদ্রাসন:
এই আসন করার সময় দেহের আকার অনেকটা বীর যোদ্ধাদের মতো দেখায় বলে একে বীরভদ্রাসন বলা হয়।
পদ্ধতি:
- প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়ান। হাত দুটো জড়ো করে মাথার উপর তুলুন।
- এরকম অবস্থায় দেহের ভার নিয়ে আসুন নিজের ডান পায়ের উপরে এবং কোমর থেকে আস্তে আস্তে সামনের দিকে একটু ঝুঁকতে থাকুন।
- হাঁটু না ভেঙে বাম পা পেছনের দিকে প্রসারিত করে মাথা ও দৃষ্টি নিজের বামহাতের দিকে নিবদ্ধ করুন।
- এরপর হাত পা ও কোমর মাটির সাথে সমান্তরালে রেখে ৩০ সেকেন্ড এই পোজ ধরে রাখুন।
- ২-৩বার রিপিট করতে পারেন ও মাঝে শবাসন করলে ভালো হয়।
উপকারিতা:
সেতুবন্ধাসন:
এই আসনে দেহ উপরের দিকে তুলে সেতুর আকার দেওয়া হয় বলে এইপ্রকার নাম এই আসনের। খুবই উপকারি একটি আসন এটি শরীরের জন্য।
পদ্ধতি:
- কোনো শক্ত সারফেস যুক্ত স্থানে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন।
- পা দুটো হাঁটুর কাছে ভাঙ্গুন এবং আস্তে করে ওপরে তুলুন।
- হাত দুটো দেহের দু পাশে রেখে উপুড় করে রাখুন।
- এবার পিঠে চাপ দিয়ে সেটাকে উল্লম্ব অবস্থানে নিয়ে যান ফলে আপনার পিঠ, হাত ও পা মিলে সুন্দর একটা চতুর্ভুজ তৈরি করবে।
- নিঃশ্বাস রাখুন স্বাভাবিক। ১০সেকেন্ড ধরে রেখে আবার করুন।
উপকারিতা:
- ঘাড়ের স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি পায়।
- মাথায় রক্তসঞ্চালন স্বাভাবিক হয় এবং মানসিক চাপ কমে।
- উরুর স্নায়ুর কার্যকারিতা বাড়ে।
- মেরুদন্ড, কাঁধ, পিঠ ইত্যাদির নমনীয়তা বৃদ্ধি পায়।
শলভাসন:
শলভ শব্দের অর্থ হলো ফড়িং। এই আসন করার সময় বডির ধাঁচ অনেকটা ফড়িং এর পুচ্ছের মতো দেখতে হয় বলে এইরকম নামকরণ।
পদ্ধতি:
- থুঁতনি ম্যাট এ রেখে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাত দুটি র তালু আনুভূমিক রেখে শরীরের দুপাশে রেখে দিন।
- এরপর পা দুটোকে জড়ো করে আস্তে আস্তে উপরের দিকে তুলতে থাকুন এবং ৪৫° কোণ তৈরি করুন।
- এই অবস্থায় ৩০ সেকেন্ড থাকুন তারপর শবাসন করুন।
উপকারিতা:
- উরু ও নিতম্বের মেদ ঝরানো ছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
- কোমরের ব্যাথা দূর হয়। যৌনশক্তি বৃদ্ধি করে।
- স্পন্ডেলাইসিস ও বাতের সমস্যা মিটে যায়।