সাম্প্রতিক বিশ্বে যে একটি নাম রীতিমতো আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে, তা হল করোনা ভাইরাস। সারা বিশ্বজুড়ে কার্যত মহামারির আকার ধারণ করেছে এই ভাইরাস। এই ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য এখনও কোনও ভ্যাকসিন আবিস্কার করা হয়নি।
ভয় পেয়ে বাড়ি বসে থাকা তো সম্ভব নয়। রুজি-রোজগারে নিত্যদিন আপনাকে বাড়ি থেকে বেরোতেই হবে। প্রতিদিনের সর্বাধিক ব্যবহৃত চারটি পাবলিক ট্রান্সপোর্ট যেমন বাস, ট্রেন, অটো মেট্রো-তে নিজের এবং নিজের আশেপাশের মানুষগুলির যত্ন নেবেন কীভাবে?
বাইক বা গাড়ি নেই সবার, বা নিত্যদিন ক্যাবে অফিস যাতায়াত করাও সম্ভব নয়। তাহলে কী করবেন?
বাস, ট্রেন, অটো, মেট্রোয় যাতায়াত করলে কি কি করবেন
- ঘন ঘন হাত ধুয়ে নিন। বিশেষত বাসে উঠে বাসের রড বা হ্যান্ডেল ইত্যাদি যাবতীয় আপনার হাতের সংস্পর্শে আসে।
- এর জন্য অফিসে পৌঁছে বা অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পর ভালো করে হাত ধুয়ে নিন।
- এক্ষেত্রে সাবান বা হ্যান্ড ওয়াশ যা-ই ব্যবহার করুন, তা যেন অ্যালকোহল সমৃদ্ধ হয়।
- অ্যালকোহল সমৃদ্ধ সাবান বা হ্যান্ডওয়াস হাতে থাকা ভাইরাস মেরে ফেলতে সাহায্য করে।
- সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার পাশাপাশি অ্যালকোহলযুক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। কেবল খাবার আগেই নয়।
- বাসের রড, ট্রেনের হাতল ধরার পর বাস থেকে নেমে একবার স্যানিটাইজারে হাত পরিষ্কার করুন।
- সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। পাশের মানুষটির থেকে নূন্যতম ১ মিটার বা ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন। এর জন্য হাতে সময় নিয়ে অফিসের জন্য বেরোন।
- অপেক্ষাকৃত কম ভিড় বাস বা মেট্রো ধরার চেষ্টা করুন।
- প্রয়োজনে ব্রেক জার্নি করে গন্তব্যে পৌঁছান।
- কারণ আগেই বলেছি অন্যের সংস্পর্শে এলেই এই রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে।
- মাস্ক অবশ্যই ব্যবহার করুন। একান্তই যদি আপনাকে ভিড় বাস বা মেট্রোয় উঠতে হয় তাহলে অবশ্যই মুখে মাস্ক লাগান।
- সামান্য কথাবার্তার বলার সময়েও যাতে মুখ থেকে থুতু না বেরোয় তার জন্য পাবলিক ট্রান্সপোর্টে মাস্ক ব্যবহার করা আবশ্যক।
- বাস বা মেট্রোয় উঠে একটা কর্নার দেখে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন। একসঙ্গে অনেক মানুষ বসে থাকলে, সেখানে না বসে বরং অপেক্ষাকৃত ফাঁকা জায়গাতে দাঁড়িয়ে ট্রাভেল করার চেষ্টা করুন।
- এইসময় সানগ্লাস এবং গ্লাভসও ব্যবহার করতে পারেন। ফলে চোখে কোনও ইরিটেশন হবে না।
- বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই সময়ে চোখ, নাক, মুখ ঘন-ঘন স্পর্শ করবেন না।
- হাতে থাকা ভাইরাস কিন্তু খুব সহজে শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
- পাবলিক ট্রান্সপোর্টগুলির মধ্য অটো অপেক্ষাকৃত সেফ। কারণ এখানে একবারে বেশি মানুষের সংস্পর্শ আসতে হয় না।
- একান্ত অসুবিধা না থাকলে অটোর সামনে বসার চেষ্টা করুন, কারণ সেক্ষেত্রে আরও কম সংখ্যক মানুষের সংস্পর্শে আসতে হয়।
- অটোয় ওঠার আগে অবশ্যই মুখে মাস্ক পরুন। কারন অটোর চারদিক খোলা থাকায় বাতাস থেকে ভাইরাস প্রবেশের সম্ভাবনা থাকতে পারে।
- নিজের সুস্থতা নিজের কাছে। বাস-মেট্রো-অটো যে পরিবহনই ব্যবহার করুন না কেন আপনি যদি নিজে সঠিক অভ্যাস মেনে চলেন তাহলে দেখবেন সকলেই সুস্থ রয়েছেন।
- যেকোনো পাবলিক ট্রান্সপোর্টে হাঁচি বা কাশি পেলে মুখে রুমাল চাপা দেওয়া বা কনুই-এর অংশ থেকে হাত ভাঁজ করে মুখে চাপা দেওয়া আপনার অবশ্য কর্তব্য।
- এরপর নিজের সেই ব্যবহৃত টিস্যু যত্র-তত্র না ফেলে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলুন।
- নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসের হাইজিন মেনটেইন করলেই COVID-19-এর ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
- জ্বর-সর্দি কাশি হলে সেই নিয়ে অফিস যাবেন না। বরং অবিলম্বে ডাক্তারের কাছে যান।
- খুব ভালো হয় যদি জ্বর-সর্দি-কাশি নিয়ে বাসে-ট্রামে না ওঠেন। আপনার একটি পদক্ষেপ অসংখ্য মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে।
- জ্বর সর্দি কাশি হলে ডাক্তারের দেওয়া পরামর্শ নিয়ম মেনে পালন করুন। প্রয়োজনে বাড়িতে বিশ্রাম নিন।
- পারলে একা ঘরে থাকুন। বাড়ির মানুষের সান্নিধ্য যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
- এতে ভাইরাস ছাড়াও অন্যান্য সংক্রমণ এড়িয়ে চলা সম্ভব।
সর্বপরি কোনও পরিস্থিতিতেই প্যানিক করবেন না বা ভয় পাবেন না। ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিন। সুস্থ থাকুন।
মন্তব্য করুন