শুষ্ক রুক্ষ চুল কেউই পছন্দ করে না। শুষ্ক চুল বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আসতে পারে যেমন চুলের ডগা ফেটে যাওয়া, ড্যানড্রাফ, চুল পরা ইত্যাদি। এরফলে চুল তার নিজস্ব উজ্জ্বলতা হারায়।
টিভিতে আমরা বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখে থাকি যে বেশ কিছু শ্যাম্পু বা তেল আমাদের চুলের অনেক উন্নতি করার দাবি করছে। আপনি যদি বাড়িতে বসে এমনই কিছু কার্যকরী হেয়ারপ্যাক বানাতে পারতেন যা সস্তাতো বটেই আবার আমাদের চুলের শুষ্কতা এবং রুক্ষতা সম্পূর্ন ভাবে সারিয়ে তুলতে উপযোগী তাহলে? আজ আমরা এমনই পাঁচটি ঘরোয়া হেয়ার প্যাক দেখে নেব যা আমাদের চুলের রুক্ষতা এবং শুষ্কতা কমায়।
আভাকাডোর হেয়ারপ্যাক
আভাকাডোতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ই আছে যা আমাদের চুলের শুষ্কতা কমায়। আভাকাডোতে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড আছে যা চুলের রুক্ষতা কমায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। আভাকাডোর হেয়ারপ্যাক বানানোর জন্য কয়েকটি আভাকাডোকে থেঁতো করে তারমধ্যে অলিভ তেল দিতে হবে। এই হেয়ারপ্যাকটি ভালো করে আমাদের চুলে এবং মাথার তালুতে মালিশ করার পর আধ ঘন্টা রাখতে হবে। তারপর শ্যাম্পু বা জল দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলতে হবে।
কলার হেয়ারপ্যাক
কলার হেয়ারপ্যাক চুলের রুক্ষ ভাব এবং শুষ্কতা দূর করার জন্য আদর্শ। কলাতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, পটাসিয়াম, লোহা ইত্যাদি থাকে যা আমাদের চুলের গোড়ার স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় এবং চুলের উজ্জ্বলতাও বাড়ায়।
কলার হেয়ারপ্যাকটি বানানোর জন্য একটি পাকা কলার সাথে ২ চামচ মধু এবং হাফ কাপ নারকেলের তেল মিশিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করতে হবে। এই হেয়ারপ্যাকটি সপ্তাহে একদিন চুলে লাগালেই আমরা আমাদের রুক্ষ চুলকে মসৃণ করে তুলতে পারি।
নারকেল তেলের সাথে ভিটামিন ই
নারকেল তেল এবং ভিটামিন ই দুটোই আমাদের চুলের জন্য খুবই উপকারী এবং দরকারী। ভিটামিন ই তে অ্যান্টি টক্সিডেন্ট আছে যা ফ্রি র্যাডিক্যালের সাথে লড়তে সাহায্য করে। আবার নারকেল তেল আমাদের চুলের গোড়াতে ঢুকে চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
এই হেয়ারপ্যাকটি বানানোর জন্য এক ভাগ ভিটামিন ই যুক্ত তেলের সাথে ৪ ভাগ নারকেল তেল মিশিয়ে একটা শিশিতে ভরে রাখতে হবে। সপ্তাহে ২-৩ বার ওই তেলের মিশ্রন আমাদের চুলে লাগিয়ে আধ ঘন্টার মত রাখতে হবে। তারপর শ্যাম্পু করে নিতে হবে বা জল দিয়ে চুল ধোয়াও যেতে পারে।
ঘৃতকুমারীর হেয়ারপ্যাক
ঘৃতকুমারী আমাদের চুলকে ময়শ্চারাইজ করে তোলে এবং তার ফলে আমাদের চুলের রুক্ষতা এবং শুষ্কতাও দূর হয়। আমাদের মাথার তালুতে ভালো করে ঘৃতকুমারী মালিশ করলে আমাদের চুলের ড্যানড্রাফ দূর হয়। একটা সুরক্ষার প্রলেপ তৈরি করে যা আমাদের চুলের ময়েশ্চার আটকে রাখে।
ঘৃতকুমারীর হেয়ারপ্যাক বানানো খুবই সহজ শুধু ঘৃতকুমারীর থেকে জেলটা বার করে নিতে হবে। ঘৃতকুমারীর জেলটি ভালো করে মাথায় মালিশ করে হেয়ারপ্যাকটি চুলে আধ ঘন্টার মতো সময়ের জন্য রেখে দিতে হবে। তারপর চুলে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে। এই পদ্ধতিটি সপ্তাহে ২ বার পালন করলেই আমরা পেতে পারি সুন্দর,মসৃণ, ময়শ্চারাইজ করা চুল।
বাদাম তেল এবং ডিমের হেয়ারপ্যাক
বাদাম তেল একটি প্রাকৃতিক কন্ডিশনার যা আমাদের চুলকে নরম, মসৃণ এবং ময়শ্চারাইজ করে তোলে। আবার ডিমে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন থাকে যা আমাদের চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে গোড়া থেকে। আমাদের চুলের শুষ্কতা কাটানোর জন্য সপ্তাহে একবার এই বাদাম তেল এবং ডিমের হেয়ারপ্যাকটি লাগাতে হবে।
কাঁচা ডিমের মধ্যে বাদাম তেল মিশিয়ে ভালো করে ফেটাতে হবে। তারপর এই মিশ্রণটি মাথার তালুতে এবং সম্পূর্ন চুলে লাগানোর পর ৪০ মিনিট রেখে দিতে হবে। ব্যাস আর কি! শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুলেই আমরা পেয়ে যাবো সুন্দর,উজ্জ্বল এবং মসৃণ চুল।
তাহলে আমরা কয়েকটি উপকারী এবং কার্যকারী ঘরোয়া হেয়ারপ্যাক জেনে নিলাম। কিন্তু আমাদের চুলকে মসৃণ এবং নরম করে তুলতে শুধু হেয়ারপ্যাক লাগালেই চলবে না। তার জন্য খেতে লাগবে প্রোটিন যুক্ত খাবার যেমন মাছ,গাজর ইত্যাদি। তার সাথে খাওয়া দরকার বিভিন্ন রকমের ফল,সবুজ সবজি ইত্যাদি। হেয়ারপ্যাকের সাথে এই সব খাবার খেলে আমাদের চুলের গোড়ার থেকে চুলের উন্নতি হবে।
মন্তব্য করুন