মাথায় শ্যাম্পু তো করছেন কিন্তু ঠিক মতো করছেন কি? আমাদের চুলের ধরন সবার এক নয়, আলাদা। যেমন কারোর চুল রুক্ষ, কারোর চুল তৈলাক্ত কারোর চুল কোকরা তাহলে শ্যাম্পু একই ধরনের হবে কেন? চুলের ধরন আলাদা আলাদা হলে শ্যাম্পু করার ধরন ও আলাদাই হওয়া উচিত|
তৈলাক্ত চুল
আপনার চুল যদি তৈলাক্ত হয় বা আপনার লম্বা চুল ধুলো বালি লেগে বা তেলচিটে হয়ে যায় তাহলে কিন্তু শ্যাম্পু করার ধরনও সেই অনুযায়ী হওয়া উচিত| বাজারে অনেক রকমের শ্যাম্পু পাওয়া যায় প্রথমে ভালো কোনো ব্রান্ডের শ্যাম্পু বেছে নিন যা তৈলাক্ত চুলের জন্য আপনি ব্যবহার করতে পারেন| তবে শ্যাম্পু করার আগে চুল ভালো করে ভিজিয়ে নেওয়া দরকার| শ্যাম্পু করার পর হালকা গরম জলে মাথা ধুয়ে কন্ডিশনার লাগিয়ে ঠান্ডা জলে মাথা ধুয়ে নেওয়া উচিত|
সাধারণত তৈলাক্ত চুল হলে সপ্তাহে ৩ বার শ্যাম্পু করা উচিত| অতিরিক্ত শ্যাম্পু বা রোজ শ্যাম্পু করলে অনেক সময় আমাদের চুলের প্রোটেকটিভ অয়েল বা স্বাভাবিক তেল নষ্ট হয়ে যায়। ফলত চুল রুক্ষ হয়ে যায়| এছাড়া তৈলাক্ত চুলের জন্য ড্রাই শ্যাম্পুও পাওয়া যায়| তবে ড্রাই শ্যাম্পু খুব সাবধানে চুলের গোড়ায় ভালো করে ম্যাসাজ করা উচিত|
রুক্ষ চুল
রুক্ষ চুলের সমস্যা আজকাল প্রায় সকলকেই অসুবিধায় ফেলছে| আপনার চুল যদি রুক্ষ হয় তবে সবার প্রথমে শ্যাম্পু নির্বাচন সঠিক হওয়া উচিত| প্রোটিন যুক্ত শ্যাম্পু আপনার রুক্ষ চুলের জন্য ভালো| রুক্ষ চুলের জন্য শ্যাম্পু করার আগে ভালো করে হট অয়েল ম্যাসাজ করে ১ থেকে ৩ ঘন্টা অপেক্ষা করুন কারণ শ্যাম্পু রুক্ষ চুল বেশি রুক্ষ করে দিতে পারে| এরপর ভালো করে চুল আচরে নিন এতে চুলে জট থাকলে তা ছেড়ে যাবে| তা না হলে শ্যাম্পু করার সময় চুল পরে যেতে পারে| এবার প্রথমে মাথার চুল হালকা গরম জলে ভিজিয়ে নিন| এরপর রুক্ষ চুলের জন্য নির্বাচিত শ্যাম্পু ভালো করে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন এবং চুলের ডগা পর্যন্ত ভালো করে শ্যাম্পু লাগিয়ে নিন|
শ্যাম্পু করার সময় কখনই চুল মুখের সামনের দিকে আনবেন না আপনার মাথা পেছনের দিকে বেকিয়ে আপনার আঙ্গুলের সাহায্যে ম্যাসাজ করুন| এবার ভালো করে ঠান্ডা জলে মাথা ও চুল ধুয়ে নিন| একটি তাওয়াল দিয়ে মাথার অতিরিক্ত জল মুছে নিয়ে কন্ডিশনার লাগিয়ে আবার ভালো করে মাথা ধুয়ে মুছে ফেলুন| সাধারনত সপ্তাহে ২-৩ বার শ্যাম্পু করা উচিত|
কোকরা চুল
কোকরানো চুল হলে শ্যাম্পু করার আগে চুল ভালো করে ভিজিয়ে নিন| কোকড়ানো চুলের জন্য SLS ফ্রি এবং এলকোহল ছাড়া শ্যাম্পু বেছে নেওয়া উচিত এতে আপনার চুলের কোকরা ভাবটি বজায় থাকে| শ্যাম্পু করার সময় চুল দুই বা তিন অংশে ভাগ করে ভালো করে আঙ্গুলের সাহায্যে প্রথমে চুলের গোড়া থেকে শুরু করে সমগ্র চুলে শ্যাম্পু করে নিন| কন্ডিশনার নির্বাচন সঠিক হওয়া উচিত| চুল যদি কোকরা হওয়ার সাথে সাথে রুক্ষ হয় তবে কন্ডিশনারের সাথে অল্প দই মিশিয়ে নিলে ভালো ফল পাওয়া যাবে| যদি অতিরিক্ত ঘন ও কোকরা চুল হয় তবে সপ্তাহে ১ থেকে ২ বার শ্যাম্পু করলে ভালো। আর তা না হলে ৩ বার সপ্তাহে শ্যাম্পু করা যেতে পারে| তবে কন্ডিশনার ব্যবহার জরুরি|
পাতলা চুল
আমদের অনেকেরই চুল খুব পাতলা হয়| সেক্ষেত্রে শ্যাম্পু করার ধরন ও কিন্তু আলাদা হওয়া জরুরি| শ্যাম্পু করার আগে চুল আঁচরে নিতে হবে এতে শ্যাম্পু করার পর চুল কম পরে| এবার হালকা গরম জলে চুল ভিজিয়ে নিন| হাতে অল্প শ্যাম্পু নিয়ে ভালো করে চুলের গোড়া থেকে ম্যাসাজ করে চুলের ডগা অবধি শ্যাম্পু লাগিয়ে নিতে হবে| ম্যাসাজ করার সময় হাতের আঙ্গুল ব্যবহার করুন| শ্যাম্পু সবসময় ওপর থেকে নিচের দিকে লম্বালম্বি ভাবে লাগানো উচিত| এবার মাথা ধুয়ে নিন| কোনো ভাবেই আপনার চুল সামনের দিকে এনে মাথায় জল ঢালবেন না| চুল ধোয়া হলে কন্ডিশনার চুলের ডগায় ভালো করে লাগিয়ে ২ মিনিট রেখে মাথা ধুয়ে ফেলুন| অতিরিক্ত জল হাত দিয়ে চেপে বের করে দিন। এবার নরম তাওয়াল দিয়ে চেপে চেপে মাথা মুছে ফেলুন|
তাহলে দেখতেই পাচ্ছেন যে আপনার চুল যেমন ধরণের সেই অনুযায়ী শ্যাম্পু করার নিয়মটি হওয়া দরকার| তা না হলে শ্যাম্পু করার ফল উল্টো হয়ে যায়| যদি এতদিন ভুল পন্থা অবলম্বন করে থাকেন তবে এখনো সময় আছে নিজেকে শুধরে নিন| নিজের চুলের যত্ন নিতে অবিলম্বে সঠিক শ্যাম্পু করার পদ্ধতিটি বেছে নিন|
ডেড সেল থেকে মুক্তি আর মুখের কাল ছোপকে দূর করতে মাখুন মুসুর ডাল
মন্তব্য করুন