চুলের আগা ফাটা কিন্তু খুবই বাজে একটা সমস্যা। বিভিন্ন কারণে চুলের আগা ফেটে যায়, তার মধ্যে একটি কারণ হলো চুলে অতিরিক্ত রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা। মাত্রাতিরিক্ত শ্যাম্পু, হেয়ার কালার, হেয়ার জেল ইত্যাদি ব্যবহার চুল ও মাথার ত্বকের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। নিয়মিত যারা এসব উপাদান চুলে ব্যবহার করেন তারা চুলের আগা ফাটার ছাড়াও আরও নানা গুরুতর সমস্যায় পড়ার ঝুঁকিতে আছেন। এজন্য চুলকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল রাখতে হলে ভালো করে চুলের যত্ন নিতে হবে।
চুলের আগা ফাটা
চুলের আগা ফেটে গেলে চুলের প্রান্ত লালচে ও আঁশের মত রূপ ধারণ করে। এটি দেখতে খুবই খারাপ লাগে। চুলের আগা ফেটে গেলে চুল লম্বা হওয়াও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। তাই চুলের আগা ফেটে গেলে মন খারাপ করে না বসে থেকে দ্রুত সমাধানের উপায় বের করা উচিত। যদিও চুলের আগা ফেটে গেলে তা আগের মত, আগের রূপে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।
ভয়ের কিছু নেই, চুলের যতটুকু অংশ ফেটে গেছে তা সামান্য কেটে ফেলে দিন। তারপর এর প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান সরবরাহ করতে থাকুন, দেখবেন আপনার চুল তরতর করে বাড়তে ও লম্বা হতে শুরু করবে। কিন্তু কীভাবে তা করবো, প্রশ্ন চলে আসে, তাই না? চলুন, এবার জেনে নেওয়া যাক কী কী উপায়ে আগা ফাটা রোধ করা যায়।
ডিম ও মধুর মালিশ
ডিমের সাদা অংশ চুলের জন্য উপকারী। তাই চুলে ডিম ও মধু ব্যবহার করলে উপকার পাবেন।
উপকরণ
ডিমের সাদা অংশ ১ টি, মধু ১ টেবিল চামচ, অলিভ অয়েল ২/৩ চামচ।
পদ্ধতি
ডিমের সাদা অংশ, অলিভ অয়েল আর মধু নিয়ে মেশান। চুলের বিভিন্ন অংশে মালিশ করে রেখে দিন। ২০/২৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। যারা ডিমের গন্ধ সহ্য করতে পারেন না তাঁরা এর সাথে কোনো সুগন্ধি মিশিয়ে নিতে পারেন ।
বিভিন্ন তেলের মালিশ
চুলের সবচেয়ে জন্য সবচেয়ে কার্যকরী উপায় চুলে বিভিন্ন তেলের মালিশ।নারকেল তেল, অলিভ অয়েল, কালো জিরার তেল, বাদামের তেল ইত্যাদি চুলের জন্য বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে।
পদ্ধতি
তেল হাতের তালুতে ঘষে চুলে ভালো করে মালিশ করুন। এভাবে সারা রাত রেখে সকালে ধুয়ে ফেলুন। এক্ষেত্রে সবগুলো তেল একসাথে মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন ।
জবা ফুলের রস
জবা ফুলের রস চুলের জন্য পুষ্টি উপাদান বহন করে। শুধু ফুলের রস অথবা তেলের সাথে তা মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়।
উপকরণ
জবা ফুল ২-৩ টি, নারকেল তেল পরিমাণ মতো।
পদ্ধতি
নারকেল তেল পাত্রে নিয়ে ২-৩টি জবা ফুল নিয়ে গরম করুন। পাতলা কাপড় দিয়ে ছেঁকে ঠান্ডা করে বোতলে সংগ্রহ করুন। জবা ফুলের রস চুলের আগা ফাটাসহ অন্যান্য সমস্যা দূর করে। যেমন খুশকি, চুল পড়া ইত্যাদি।
পেঁপে বাটা ব্যবহার
পেঁপে খাদ্য হিসেবে যেমন উপকারী, তেমনি চুলের জন্যও বেশ কার্যকর। এটি চুলের আগা ফাটা রোধ করে, সাথে সাথে চুলকে করে নরম করে।
উপকরণ
পেঁপে ১০০ গ্রাম, টক দই ২ টেবিল চামচ।
পদ্ধতি
মনের মত চুল পেতে যা করতে হবে, পেঁপের সাথে টক দই নিয়ে ভালো ভাবে মেশান। এরপর চুলের বিভিন্ন অংশে ভালো ভাবে ম্যাস্যাজ করুন। ২৫/৩০ অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন।
কলা থেরাপি
কলাতে থাকা পটাশিয়াম, জিঙ্ক, আয়রন, ভিটামিন ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান চুলের জন্য উপকারী, যা চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং আগা ফাটা রোধ করে।
উপকরণ
পাকা কলা ১ টা, টক দই ২ টেবিল চামচ, সামান্য গোলাপজল।
পদ্ধতি
পাকা কলা, টক দই, গোলাপজল (যদি ঘরে থাকে) একটি বাটিতে নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার তা চুলের সম্পূর্ণ অংশে লাগিয়ে অপেক্ষা করুন। ১ ঘন্টা পর ধুয়ে ফেলুন।
দেরী না করে এবার চটপট এগুলো মাথায় লাগাতে শুরু করুন। তারপর দেখবেন আপনার চুলের ডগা তো ফাটছেই না, উল্টে চুল আরও সিল্কি আর শাইনি হতে শুরু করেছে!
মন্তব্য করুন