চুল পড়া কমাতে নানা রকম স্পেশাল তেল তো ব্যবহার করছেন। কিন্তু সেই তেলকে কতটা স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করছেন? চুল পড়া কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে হেয়ার ম্যাসাজ। যেকোনো তেলই ভালো করে ম্যাসাজ করে না লাগালে, কিন্তু তেমন কোন লাভ পাওয়া যায় না। শুধু কি চুল পড়া কমাতে! হেয়ার ম্যাসাজের আছে আরও অনেক গুণ। আসুন, তাহলে জেনে নেওয়া যাক হেয়ার ম্যাসাজের গুণ ও কীভাবে করবেন হেয়ার ম্যাসাজ।
চুল পড়া কমাতে হেয়ার ম্যাসাজের উপকারিতা
চুল তো সবারই একটু আধটু পড়ে। কখনও চিরুনিতে, কখনও বালিশে, আবার কখনও বাথরুমেও একগুচ্ছ চুল। অনেক স্পেশাল শ্যাম্পু থেকে তেল অনেক কিছুই ব্যবহার করেও তেমন লাভ হয়নি। আপনারও কি এই অবস্থা? এর একটা কারণ হল, আপনি আপনার স্পেশাল তেলটিকে ভালোভাবে ম্যাসাজ করছেন না। তার ফলে তেল স্ক্যাল্পের ভেতরে ঢুকছে না। আর তাই কোন কাজও হচ্ছে না।
কিন্তু এই তেলকে যদি আপনি ভালো করে ম্যাসাজ করেন, তাহলে কিন্তু ফল পাওয়া যাবে। কারণ হেয়ার ম্যাসাজ স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। স্ক্যাল্পের প্রতিটি দিকে, হেয়ার ফলিকলসেও রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। চুলের পি.এইচ. ভারসাম্যকে ঠিক রাখে। যেটা হেলদি চুলের একটা গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। আর যেটা চুল পড়া কমাতেও সাহায্য করে, আবার চুলের বৃদ্ধিও ঘটায়।
চুলের অন্যান্য সমস্যা
হেয়ার ম্যাসাজ কিন্তু শুধু চুল পড়া কমায় না। হেয়ার ম্যাসাজ চুলের অন্যান্য যাবতীয় সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। যেমন অনেকেরই স্ক্যাল্প খুব ড্রাই হয়। তাদের জন্য তেল দিয়ে ম্যাসাজ খুব উপকারী। স্ক্যাল্পের এই ড্রাইনেস থেকে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও চুলের একটা খুব সাধারণ সমস্যা হচ্ছে, চুল ফেটে যাওয়া। এটা থেকে মুক্তি পাওয়া যে কতটা কঠিন সেটা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। এটা থেকে সহজেই মুক্তি দিতে পারে হেয়ার ম্যাসাজ। এছাড়া খুশকির সমস্যা দূর করতেও কিন্তু খুব উপকারী হেয়ার ম্যাসাজ।
অন্যান্য উপকারিতা
আপনি কি খুব স্ট্রেসে ভুগছেন? বা কাজে মনোযোগের অভাব? তাহলে হেয়ার ম্যাসাজ করিয়ে নিন। কারণ হেয়ার ম্যাসাজ স্ট্রেস থেকে মুক্তি দিতে অনেকটাই সাহায্য করে। এটা আপনার মন ও শরীরকে রিল্যাক্স করতে সাহায্য করে। মাথা ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে। তার ফলে কাজেও মনোযোগ আসে। একটা হেয়ার ম্যাসাজের পর, নিজেরই একটা সুন্দর টেনশন ফ্রী অনুভূতি আসে। এছাড়াও যাদের রাত্রে ঘুমের সমস্যা, তাঁরা দিনে করে নিন হেয়ার ম্যাসাজ। দেখবেন রাত্রে কত ভালো ঘুম হচ্ছে!
হট অয়েল ম্যাসাজ
হেয়ার ম্যাসাজের উপকারিতা তো জানলেন, কিন্তু কীভাবে করবেন হেয়ার ম্যাসাজ? চুল ভালো রাখতে যদি স্পেশাল তেল ব্যবহার করেন, তাহলে সেটা দিয়েই করতে পারেন। না হলে নারকেল তেল বা অলিভ তেল বা আমণ্ড তেল ব্যবহার করতে পারেন।
পদ্ধতি
তেল ম্যাসাজ করার আগে শুধু একটু গরম করে নেবেন। একটা পাত্রে জল ফোটাতে থাকুন। এরপর এই ফুটন্ত জলে, তেলের জায়গাটা দিয়ে তেলটা গরম করুন। হালকা গরম তেল ম্যাসাজ আরও ভালো কাজ করবে। তেল গরম হলে, এবার আঙুলের টিপ দিয়ে স্কাল্পে ম্যাসাজ করুন। সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করবেন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট ম্যাসাজ করুন। এরপর এটা একঘণ্টা রেখে দিন। এরপর চাইলে একটা তোয়ালে গরমজলে ভিজিয়ে, সেটা মাথায় জড়িয়ে রাখতে পারেন। সেক্ষেত্রে ম্যাসাজটা আরও ভালো হবে।
তাহলে জানলেন তো কীভাবে করবেন হেয়ার ম্যাসাজ? আর এটা যে কতটা উপকারী আপনার চুলের জন্য এটা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। তাহলে এবার থেকে একটু সময় করে, সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন করে ফেলুন হেয়ার ম্যাসাজ। ব্যাস, তাহলে শুধু চুল পড়া কমবেই না, স্ট্রেস কমিয়ে রাত্রে দেখবেন জমিয়ে ঘুম হচ্ছে।
মন্তব্য করুন