হিন্দু ধর্মে চন্দ্র গ্রহণের, সূর্যগ্রহণকে ঘিরে রয়েছে নানান অভিমত ও কুসংস্কার। অনেক কিছুই করতে বাড়ন করা হয়, এই চন্দ্র গ্রহণের সময়। অনেকেই এগুলো কুসংস্কার বলে উড়িয়ে দেন।
কিন্তু কিছু কিছু বিষয় কিন্তু নেহাতই কুসংস্কার বলে উড়িয়ে দেওয়া উচিত নয়। কারন এগুলো কোনও কুসংস্কার নয়। এর পিছনে কিছু বৈজ্ঞানিক কারন ও রয়েছে। তাই কোন কাজ গুলো এইসময় করা একদমই উচিত না দেখুন। দিল্লীর প্রখ্যাত জ্যোতিষী মিনা মহাজনের বিশেষ কিছু কথা পড়ে নিন।
চন্দ্র গ্রহণের সম্পর্কে বিশেষ কথা
চাঁদের সাইকেলের সাথে আমাদের শরীরের কিছু সম্পর্ক রয়েছে। সেই জন্যই গ্রহণের সময় খেতে বারন করা হয়। এইসময় বিভিন্ন ক্ষতিকর গ্যাস, ও নানারকম ক্ষতিকর তরঙ্গ বিকিরন হয় ।
বাতাসে নানাপ্রকার ক্ষতিকর পদার্থের বিকিরন হয়। তাই এইসময় খোলা খাবারেও সেইসব ক্ষতিকর পদার্থ মিশতে পারে। যেগুলো শরীরের জন্য ভালো নয়। তাই খাবার খেতে বারন করা হয়।
তবে খাবার ফেলে দেওয়া বা অন্যান্য আরও যেসব নিয়ম প্রচলিত, সেগুলো কুসংস্কার ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই বৈজ্ঞানিক যুক্তি অনুযায়ী, কি কি করা উচিত ও উচিত নয় দেখুন।
কি কি করবেন না এইসময়
গ্রহনকালে কোন নতুন কাজ শুরু করা উচিত নয়। গ্রহনের সময় নতুন কাজের সূচনা করলে তা শুভ হয় না বলে প্রাচীনকাল থেকে মনে করা হয়। তা মেনে চলাই উচিত।
রান্না করা খাবার খাওয়া উচিত নয় এইসময়। এমনকি চন্দ্রগ্রহণের কিচ্ছুক্ষণ আগেও না। কারন আগেই বললাম যে, বাতাসে ক্ষতিকর পদার্থের বিকিরন হবার কারনে, খাবারেও ব্যাকটেরিয়া আসতে পারে। তাই এই গ্রহণের সময়টা না খাওয়াই ভালো।
গ্রহনের সময় বাচ্চাদের বিশেষ করে ১৫ বছরের নীচের শিশুদের জন্য বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। এমনকি যদি যে জেদ করে বাইরে যাওয়ার তাকে ঘরের বাইরে যেতে দেবেন না। শিশুদের এই সময় ছুরি বা অন্য কোন ধাতব বস্তুর সঙ্গে খেলা করতে দেবেন না।
গ্রহনকালে দেবী মূর্তি বা ছবির ফ্রেম স্পর্শ করবেন না। এমনকি আপনার আঙ্গিনা মধ্যে তুলসি গাছ থাকলে তা স্পর্শ করবেন না।
যাদের জন্ম কুণ্ডলীতে চন্দ্র দোষ আছে তারা এই সময় সাবধান থাকবেন।
এইসময় শরীরে তেল মালিশ একদম নয়। এতে স্কিনের ক্ষতি হতে পারে। তবে চন্দ্রগ্রহণের আগে অর্থাৎ কয়েক ঘণ্টা আগে স্নান করে নিতে পারেন।
এইসময় বাইরে কোথাও না যাওয়াই ভালো। এক জায়গায় দাড়িয়ে যান। গ্রহণ দেখুন।
এইসময় শারীরিক মিলনও না করাই ভালো। কারন শারীরিক মিলনের একটা উপযুক্ত সময় আছে। আর এই সময়টা শারীরিক মিলন, শরীরের জন্য ঠিক স্বাস্থ্যকর নয়। কারন আগেই বলেছি, চাঁদের সাইকেলের সাথে আমাদের শরীরের সম্পর্ক রয়েছে।
প্রেগন্যান্ট মহিলাদের ওই সময় ঘরে থাকাই ভালো, তাদের বাচ্ছার ভালোর জন্য। আসলে বৈজ্ঞানিক মত অনুযায়ী, গ্রহণের সময় নানান ক্ষতিকর তরঙ্গের বিকিরন হয়। এই বিকিরন যেন আপনার শরীরে না লাগে। যেটা আপনার বাচ্ছার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই ঘরে থেকেই চন্দ্রগ্রহন দেখুন।
কি কি করতে পারেন এই সময়
বাড়িতে যদি রান্না করা খাবার থাকে। তাহলে সেগুলি ফেলে দেবেন না। ফেলে না দিয়ে তাতে কয়েকটা তুলশি পাতা রাখুন। বৈজ্ঞানিক ভিত্তি অনুযায়ী, তুলশি অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল রূপে কাজ করে। তাই খাবারকে রাখবে ব্যাকটেরিয়া মুক্ত।
বিজ্ঞান মতে, সৌরজগতের ঝুলন্ত পাথর গ্রহাণুপুঞ্জের সাথে এদের সংঘর্ষ হয়ে পৃথিবীর দিকে নেমে আসে। কিন্তু বায়ুমণ্ডলে এসে সেই ছোট ছোট পাথর খণ্ড ভস্মীভূত হয়ে যায়। কিন্তু পাথরখণ্ড খুব বড় হলে সেটা ভস্মীভূত হবার সম্ভবনা থাকে না।
গ্রহনের সময়, চাঁদ পৃথিবী ও সূর্য একই সরলরেখায় থাকে বলে, গ্রহাণুপুঞ্জের সেই বড় পাথরগুলির ধেয়ে আসার সম্ভবনা থাকে। যেটা পৃথিবীকে ধ্বংসের দিকেও ঠেলে দিতে পারে। তাই এইসময় প্রার্থনা করতে বলা হয়। যাতে ঈশ্বর পৃথিবীকে রক্ষা করেন। সবকিছু ঠিকঠাক মত হয় ও কোনও বিপদ যেন না হয়।
যেহেতু গ্রহনের সময় স্নান, তেলমালিশ স্কিনের জন্য ভালো নয়। তাই গ্রহনের আগে বা পরে স্নান করতে পারেন। অর্থাৎ গ্রহনের সময় বাতাসের নানারকম ক্ষতিকর পদার্থ আপনার ত্বকে লাগলো সেগুলো পরিষ্কার হয়ে যাবে।
এটা অত্যন্ত রোমাঞ্চকর দৃশ্য তাই মন দিয়ে দেখুন। বাড়ির যে জেয়গা থেকে ভালো দেখা যাচ্ছে, সেই জেয়গা থেকে বসে দেখুন। মনের একাগ্রতা বাড়ান। মন দিয়ে উপভোগ করুণ এই দুর্লভ দৃশ্য।
এই দিন খুব কমই আসে। এটা একটা ভালো দিন। তাই ধর্মীও মত অনুযায়ী এইদিন কিছু দানধ্যান করতে পারেন।
এগুলো সবই বৈজ্ঞানিক যুক্তি। এরসাথে প্রচলিত কুসংস্কারের কোনও সম্পর্ক নেই। প্রচুর কুসংস্কার প্রচলিত। যেগুলোর বৈজ্ঞানিক যুক্তি আছে কিনা সেটা বিচার করে দেখুন। বৈজ্ঞানিক যুক্তি দিয়ে বিচার করে তবেই নিয়মকানুন মানবেন। কোনও কুসংস্কারে বিশ্বাস করবেন না।
লাল চাঁদ ও দীর্ঘতম চন্দ্র গ্রহণ দেখবেন ২৭শে জুলাই ২০১৮
শ্রাবণ মাসে শিব ভক্তরা এই তিনটি খাবার এড়িয়ে চলুন – জানুন বিস্তারিত
মন্তব্য করুন