একটা সময় ছিল যখন নায়িকা মানেই সরু ছিপছিপে শরীর। শরীরের মেদের লেশমাত্র নেই। আর পর্দায় লাস্যময়ী দেখাতে বিরাট শারীরিক কসরত করে জিরো ফিগার তৈরি করার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেন। কিন্তু অবাক করা বিষয় এটাই যে, এমন অনেক নায়িকা রয়েছেন যাঁরা আক্ষরিক অর্থেই জিরো ফিগারের ধার ধারেন না। তাঁরা কথাকথিত রোগা-পলকা চেহারায় নয়, বরং তাঁরা যেমন ঠিক তেমনভাবেই ধরা দেন দর্শকদের সামনে। তাঁরা তাদের ফিগার নিয়ে বড় একটা চিন্তিতও নন, বরং খুশিই বটে। রইল এমনই কয়েকজন নায়িকার খোঁজ।
১) অপরাজিতা আঢ্য-

অপরাজিতা আঢ্য বাংলা সিনেমা জগতের এক অন্যতম নাম। সিরিয়ালের পাশাপাশি সিনেমাতেও তিনি সমান দক্ষতার সঙ্গে অভিনয় করে গিয়েছেন। কিন্তু তিনি তথাকথিত স্লিম অ্যান্ড ট্রিম নন। তবে অপরাজিতা একবার একটি সাক্ষাতকারে জানিয়েছিলেন যে, স্লিম হওয়াটা খুবই দরকার, সবরকম চরিত্রে অভিনয় করার জন্য। কিন্তু তিনি খেতে খুবই ভালোবাসেন, তার জন্য তাঁর আর রোগা হয়ে ওঠা হয়নি, কিন্তু শরীরের আকার-আকৃতির ঘেরাটোপে নিজেকে আটকে না রেখে তিনি তিনি সবরকমের পোশাক পরা শুরু করেন। নিজে কনফিডেন্ট থাকাটাই তাঁর কাছে আসল। অপরাজিতা বলেন, তিনি ২দিন ডায়েট ফলো করলে তিন নম্বর দিন তিনি মনের মতো খাবারই খাবেন। তাই তাঁর কথায় রোগা নয়, বরং যেমন আছো সেইভাবেই সুস্থ থাকাটা জরুরী।
২) শ্রীলেখা মিত্র-

জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রও নিজেকে কখনও রোগা ভাবতেই পারেন না। তিনি মনে করেন, বাঙালি দর্শকরা রোগা-সোগা নায়িকা পছন্দ করেন না। তিনি এও মনে করেন বাঙালি অভিনেত্রী একটু মোটা-সোটা হওয়াই ভালো। সঠিক জায়গায় সঠিক মাত্রায় মেদ থাকলে বাঙালি অভিনেত্রীর যৌন আবেদন বেড়ে যায় বলেই মনে করেন শ্রীলেখা। এখটি সাক্ষাতকারে শ্রীলেখা জানিয়েছিলেন, তিনি যেমন দর্শক তাঁকে তেমনভাবেই গ্রহণ করেন। তবে শ্রীলেখার কথায়, তিনি যেধরণের চরিত্রে অভিনয় করেন তাতে তিনি যথেষ্ট মানানসই। তবে ছবির জন্য অবশ্য তিনি ওজন কমাতে চান বটে, কিন্তু অভুক্ত থেকে ওজন কমানোর টেকনিক তাঁর একেবারেই না-পসন্দ।
৩) স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়-

স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ,ময়ে বডি শেমিং হয়ে থাকে। একবার এক জনৈক তাঁর স্তনের আকৃতি নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু স্বস্তিকাও তাঁকে একহাত নিয়েছিলেন। সোশ্যাল প্লাটফর্মেই তাঁকে উচিত জবাব দিয়েছিলেন। তাঁর কথায় তিনি কখনওই করিনা কাপুরের মতো রোগা হতে পারবেন না। শরীরের যে অংশে মেদ জমে, সেই অংশের মেদ কমাতে তিনি শরীরচর্চা করেন। যাতে তিনি ওয়েস্টার্ন ওয়্যার হোক, শাড়ি হোক কিংবা বিকিনা- সমানভাবে ক্যারি করতে পারেন।
৪) বিদ্যা বালন-

জন্মসূত্রে দক্ষিণী হলেও অভিনেত্রী বিদ্যা বালনের মধ্যে কিন্তু একটা নির্ভেজাল বাঙালিয়ানা রয়েছে। তাঁর অভিনয়-চলন-বলন সবেতেই যেন একটা বাঙালি হাবভাব রয়েছে। বিদ্যা বালনের প্রথম বলিউড ডেবিউ ছিল পরিণীতা, তার আগে ২০০৩ সালে বিদ্যা ‘ভালো থেকো’ নামে একটি বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। এরপর ‘ভুল ভুলাইয়া’, ‘ইশকিয়া’, ‘কাহানি’র মতো একের পর এক ছবিতে দর্শক মনে জায়গা করে নিয়েছেন বিদ্যা।
সেই বিদ্যা বালন পরবর্তীকালে তিনি কিন্তু যথেষ্ট ওজন বাড়িয়ে ফেলেছিলেন। এমনকি ‘ডার্টি পিকচার’ ছবিতে সিল্ক চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি খাওয়া-দাওয়া করে যথেষ্ট ওজন বাড়িয়ে ফেলেছিলেন। নায়িকা হতে গেলে ছিপছিপে ফিগার প্রয়োজন এমনটা কখনওই মনে করেননি বিদ্যা। বলাবাহুল্য ডার্টি পিকটার ছবির জন্যই কিন্তু জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন বিদ্যা।
৫) কনীনিকা বন্দোপাধ্যায়-

কনীনিকা বন্দোপাধ্যায় সিনেমা সিরিয়াল দুই পর্দায় এখনও নায়িকা সুলভ দাপটের সাথে কাজ করে চলেছেন। তার চেহারার ভারিক্কি ভাব তাকে কখনই পিছনে টেনে রাখে নি। মোটা হলে যে নায়িকা হওয়া যায় না এই ধারনাকে ভুল প্রমাণের আর একজন কাণ্ডারি তিনিও। অভিনয় দক্ষতা দিয়ে যে জনপ্রিয়তার মুকুট পরা যায় তা তিনিও প্রমাণ করেছেন আমাদের।
মন্তব্য করুন