গোস্বামী তুলসীদাসের অসাধারণ সৃষ্টি হল হনুমান চল্লিশা। প্রতিটি হিন্দু ঘরে মঙ্গলবার করে হনুমান চল্লিশা পাঠের রেওয়াজ রয়েছে। বলা হয় যে গৃহে নিয়মিত হনুমান চল্লিশা পাঠ করা হয়, সেই পরিবার হনুমানজী তথা বজরঙ্গবলীর আশীর্বাদ লাভ করে।
ঘরে ঘরে সাধারণত মঙ্গলবার করেই বজরঙ্গবলীর পুজো করা হয়। মঙ্গলবার এবং শনিবার করেও অনেকে হনুমাল চল্লিশা পাঠ করেন। বলা হয় প্রতিদিন যদি বিশেষত রাতের বেলা হনুমান চল্লিশা পাঠ করেন, তাহলে তার অভূতপূর্ব ফলাফল পাওয়া যায়।
এই পৃথিবীতে যাবতীয় খারাপ, যা-ই পাপ তা দূর করতে হনুমান চল্লিশা পাঠ করা উচিত। যেকোনও বয়সের মানুষ, ছোট থেকে বড় যেকেউ হনুমান চল্লিশা পাঠ করতে পারেন। তবে এবার জেনে নিন হনুমান চল্লিশা পাঠ করার কিছু ভালো দিক, যাতে আপনি এবং আপনার পরিবারের সকলেরই মঙ্গল হবে।
১) সঙ্কট দূর করতে হনুমান চল্লিশা পাঠ
‘সঙ্কট মোচন শ্রী হনুমানুষ্টক’। হনুমান চল্লিশার একটি মন্ত্রেই বলা হয়েছে যে, বজরঙ্গবলীর মন্ত্র উচ্চারণ করলে কোনও ব্যক্তির সমস্ত বাধা বিপত্তি দূর হয়ে যায়। সমস্ত বাধা অতিক্রান্ত হয়ে চলার পথ সুগম হয়ে যায়। তাই যখনই কোনও বিপদে পড়বেন বা কোনওরকম বাধার সম্মুখীন হবেন, তখন অবশ্য মনে মনে এই ‘সঙ্কট মোচন শ্রী হনুমানুষ্টক’ মন্ত্র জপ করুন, সমস্ত বাধা-বিঘ্ন কেটে যাবে।
২) শনির প্রভাব দূর করতে হনুমান চল্লিশা পাঠ
কখনও যদি আপনার ওপর শনিদেবের নজর পড়ে, তখন জীবনে কোনওকিছুই ভালো ভাবে চলে না। শনির প্রভাব যদি জীবনের ওপর পড়ে, তাহলে সংসারে কারো কোনও মঙ্গল হতে পারে না। তাই এই প্রভাব থেকে মুক্ত হতে নিয়মিত হনুমান চল্লিশা পাঠ করুন। এর মন্ত্র জপে আপনার জীবনের ওপর থেকে শনির দশা দূর হতে শুরু করবে এবং জীবনে শান্তি নেমে আসবে।
৩) কর্মক্ষেত্রে উন্নতি করতে নিয়মিত হনুমান চল্লিশা পাঠ
অনেকসময় এমন হয়, সবরকম প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কর্মক্ষেত্রে খুব একটা কিছু করে উঠতে পারছেন না, সেক্ষেত্রে কর্মক্ষেত্রে যদি সাফল্য নিয়ে আসতে চান, তাহলে আপনাকে নিয়ম করে হনুমান চল্লিশা পাঠ করতে হবে, তাহলেই দেখবেন সৌভাগ্য নিজে আসবে আপনার জীবনে। তবে এরজন্য প্রতি মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনিবার রাতে হাত-মুখ ধুয়ে হনুমান চল্লিশা পাঠ করুন।
৪) পাপবোধ হলে হনুমান চল্লিশা পাঠ করুন
জ্ঞানে হোক বা অজ্ঞানে সকলেই কমবেশি পাপ করে থাকেন। তবে খুব কম মানুষই এমন রয়েছেন যাঁদের এই পাপবোধ হয়ে থাকে। তবে পাপের ক্ষমা চাইবেন কার কাছে? সেক্ষেত্রে হনুমান মন্ত্রই হতে পারে আপনার ক্ষমা চাওয়ার একমাত্র পথ। যদি কোনও দিনও মনে হয় যে, জীবনে কোনও পাপ করেছেন আর তার জন্য আপনি অনুতপ্ত। তাহলে প্রতিদিন রাতে আটবার করে হনুমান চল্লিশার প্রথম স্তবটি পাঠ করুন।
৫) দুরাত্মাকে বিতাড়িত করতে হনুমান চল্লিশা পাঠ
অনেকসময়ে দুরাত্মার কারণ সংসারে নেমে আসে অন্ধকারের কালো ছায়া। প্রথমেই বলেছি যে, যা কিছু কু, যা কিছু পাপ, যা কিছু দুরাত্মা তার বিনাশ করতে পারে হনুমান মন্ত্র। প্রতিদিন স্নান করে উঠে হনুমান চল্লিশা পাঠ করলে পাপের বিনাশ সম্ভব, সেইসঙ্গে দুরাত্মাকে বিতাড়িত করা সম্ভব।
৬) ইতিবাচক শক্তির প্রভাব বাড়াতে হনুমান চল্লিশা পাঠ
বলা হয়, হনুমান চল্লিশা পাঠ করলে আপনার চারিপাশে একটা ইতিবাচক প্রভাব বিরাজ করে। হনুমান মন্ত্র পাঠ করলে আপনার আশেপাশের যাবতীয় নেতিবাচক প্রভাব দূর হয়। সেইসঙ্গে আপনার জীবনেও একটা পজেটিভ ভাউব সর্বক্ষণ কাজ করে। তাছাড়া বলা হয়, ভক্তিভরে হনুমানজীকে ডাকলে তিনি তাঁর কোনও ভক্তকেই নিরাশ করেনা।
মন্তব্য করুন