অ্যাকটিভেটেড চারকোল একপ্রকার চারকোল যা বর্তমানে আমাদের ত্বকের যত্ন নিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। একে অ্যাকটিভেটেড বলার কারণ এটি অত্যন্ত হাই টেম্পারেচারে প্রসেসড করা হয়। ফলত এর অভ্যন্তরীণ গঠনে নানা ধরনের পরিবর্তন হওয়া থাকে, আর এই কারণেই এটি অনেক বেশী হালকা বা এয়ারী হয়। বর্তমানে এর ত্বক বা দাঁতের যত্ন নিতে এই অ্যাকটিভেটেড চারকোল বহুল পরিমাণে ব্যবহৃত হচ্ছে। আপনি নিজেই কিন্তু চাইলে বাড়িতেই আপনার ত্বকের যত্ন নিতে এই অ্যাকটিভেটেড চারকোল ব্যবহার করতে পারেন। তবে তার জন্য আপনাকে পড়ে ফেলতে হবে আজকের লেখাটি।
১. ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস দূর করতে
আপনার মুখের ব্ল্যাকহেডস বা হোয়াইটহেডস আপনার সৌন্দর্য্যের পথে বাধা তো হয়ই, তার সাথে অতিরিক্ত মাত্রায় এগুলি জমতে থাকলে নানা ধরণের স্কিন ইনফেকশনও হয়ে যেতে পারে। অ্যাকটিভেটেড চারকোল পাওডার ব্যবহার করলে কিন্তু আপনার এই সমস্ত সমস্যা একেবারে দূর হবে। এই পাওডার খুব সহজেই আপনার ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডসগুলিকে একেবারে গোড়া থেকে নির্মূল করে বা পরিষ্কার করে।
উপকরণ
অর্গানিক চারকোল পাওডার, জিলেটিন, গরম জল।
অর্গানিক চারকোল ও জিলেটিন দুটিই কিন্তু খুব সহজেই অনলাইনে আপনি পেয়ে যাবেন।
পদ্ধতি
একটি পাত্রে ১ চামচ চারকোল পাওডার, ২ চামচ জিলেটিন পাওডার ও ৪ চামচ গরম জল ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার একটি পাত্রে জল গরম করুন এবং ওই পাত্রে চারকোল মিশ্রণের পাত্রটি ডাবল বয়লার পদ্ধতিতে গরম করে নিন যাতে চারকোল পাউডার ভালো করে মিশে যায়। কিছুক্ষণ গরম করার পর মোটামুটি গরম অবস্থায় খুব সাবধানে আপনার নাকের দুপাশে, থুতনিতে, এছাড়া যেখানে যেখানে ব্ল্যাকহেডস বা হোয়াইটহেডস আছে, সে সমস্ত অঞ্চলে লাগিয়ে নিন। তবে আপনার মুখে যদি ব্রণ থাকে বা কোনো রকম স্কিন ইনফেকশন হয়ে তাকে তাহলে কিন্তু সেই অবস্থায় এটি ব্যবহার না করাই ভালো। ফেস মাস্কটি লাগানোর পর পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে খুব সাবধানে ধীরে ধীরে মুখ থেকে তুলে ফেলুন। এতে কিন্তু একটু ব্যথা লাগবে। মাসে ২ বার ব্যবহার করাই ভালো।
অ্যাকটিভেটেড চারকোল ফাইন পাওডার ফ্রম কোকোনাট শেল, ৭৫ গ্রাম
দাম ২০০/-
২. ত্বকের কালচে ছোপ দূর করতে
অ্যাকটিভেটেড চারকোল আমাদের ত্বক গভীর ভাবে পরিষ্কার করে এবং ত্বকের সমস্ত রকম কালচে ছোপ, দাগ একেবারে দূর করতে সক্ষম।
উপকরণ
চারকোল পাওডার ১ চামচ, মুলতানি মাটি ১ চামচ, মধু ১ চামচ।
পদ্ধতি
উপকরণগুলি পরিমাণ মত ভালো করে মিশিয়ে নিন। মধুর বদলে সমপরিমাণ অ্যালোভের জেলও কিন্তু ব্যবহার করা যেতে পারে। ভালো করে মিশ্রণ বানিয়ে মুখে মেখে নিন। পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে ভালো করে ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিন। এটি সপ্তাহে ১ বার করে ব্যবহার করলেই কিছুদিনের মধ্যেই আপনার ত্বকের কালো ছোপ দাগ সমস্ত দূর হয়ে যাবে।
৩. মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর করতে
অ্যাকটিভেটেড চারকোল অত্যন্ত কার্যকর আমাদের মুখের অবাঞ্চিত লোম দূর করতে। তাই পার্লারে না গিয়ে কিন্তু বাড়িতেই পিল অফ মাস্ক বানিয়ে আপনার ত্বকের সমস্ত অবাঞ্চিত লোম দূর করে ফেলুন।
উপকরণ
চারকোল পাওডার, হিমালয়া নিম পিল অফ মাস্ক, এই ফেস মাস্ক কিন্তু আপনি সহজেই অনলাইনে পেয়ে যাবেন।
পদ্ধতি
২ চামচ চারকোল পাওডার ও ১ বড় চামচ হিমালয়া নিম পিল অফ ফেস মাস্ক ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার এটি আপনার মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে তাতে লাগিয়ে নিন। মুখে লাগানোর সময় চোখের অংশটি কিন্তু বাদ দিয়ে লাগানো উচিত। পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে খুব ধীরে ধীরে এই মাস্কটি সাবধানে তুলে ফেলুন। এতে আপনার মুখের অবাঞ্ছিত লোমগুলি সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। সপ্তাহে একদিন এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
হিমালয়া পিউরিফাইং নিম পিল অফ মাস্ক, ১০০ গ্রাম
দাম ১৩০/-
এই তিনটি পদ্ধতিতে কিন্তু আপনি আপনার ত্বকের জন্য অ্যাকটিভেটেড চারকোল ব্যবহার করতে পারবেন। তবে আপনার ত্বক যদি অতিরিক্ত মাত্রায় সেন্সেটিভ হয় তাহলে কিন্তু এই প্রোডাক্ট না ব্যবহার করাই উচিত বা ব্যবহার করার আগে স্কিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এছাড়া নর্মাল স্কিন টাইপ হলে কোনো সমস্যা নেই। তবে ব্যবহার করার আগে প্রথমে হাতে একবার লাগিয়ে দেখে নেওয়া উচিত তা আপনার স্কিনকে সুট করছে কিনা। তারপর নিশ্চিন্তে ব্যবহার করুন।
মন্তব্য করুন