কোনো অনুষ্ঠান হোক বা বিয়ের বাড়ি, অথবা কোনও গেট টুগেদারে আপনি যদি ঘর ভর্তি লোকের মাঝে প্রাণ খুলে হাসতেই না পারেন তাহলে তো তা খুবই পীড়াদায়ক। কিন্তু কীই বা করবেন আপনার উঁচু হয়ে যাওয়া দাঁতের সারি যদি আপনাকে হাসতে বাধা দেয়! আপনি তো নিজের দেখতে ভালো লাগা নিয়ে যথেষ্টই সচেতন, তাই উঁচু দাঁত দেখা যাক তা আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন না। ডাক্তারের কাছে গেলে আপনাকে ধাতব পাত পরতে হবে, সেটিও দেখতে খুব একটা ভালো লাগে না। তাই ডেন্টিস্টের কাছে না গিয়ে ঘরোয়াভাবে আপনি যদি দাঁতকে সোজা রাখতে চান, তাহলে সত্যি কথা বলতে উঠে থাকা দাঁতের মাড়ি ও সারিকে শেপে আনার কোনও চট জলদি ঘরোয়া উপায় নেই। সবটাই সময়সাপেক্ষ। তবে ধৈর্য ধরে থাকলে আপনি কিছু ঘরোয়া উপায়েও এর সমাধান পাবেন। আসুন, জেনে নিই।
১. দাঁতের ওপর হালকা চাপ দিন
আপনার দাঁত যদি সামনের দিকে উঠে থাকে, তাহলে আপনি চাইবেন সেটি যাতে ভেতরের দিকের বাকি দাঁতের সারির সাথে সমানভাবে অবস্থান করে। তাই এ ক্ষেত্রে আপনি উঠে থাকা দাঁতটিকে ভেতরের দিকে ঠেলুন ঠোঁটের সাহায্যে। আপনি যদি ডাক্তারের পরামর্শে ধাতব ব্রেস পরতেন, তাতেও কিন্তু ক্রমাগত চাপের দ্বারাই আসলে দাঁতটিকে শেপে আনার চেষ্টা করা হত। এ ক্ষেত্রে আপনাকে তেমন কিছু না পরে নিজে থেকেই চাপ দিতে হচ্ছে। ওপরের ও নিচের ঠোঁটকে যদি আপনি চেপে ধরে বন্ধ করে রাখেন, তাহলে তার ফলে তৈরি হওয়া চাপের ফলে আপনার সামনের সারির ওপরের দিকে উঠে থাকা দাঁত ধীরে ধীরে শেপে চলে আসবে। তবে মাথায় রাখবেন এটি কিন্তু সময়সাপেক্ষ একটি প্রক্রিয়া। তাই নিয়মিত করলে দীর্ঘমেয়াদে ফল পাবেন।
➡ দাঁত সাদা করুন মাত্র এক সপ্তাহে।
২. ব্যবহার করুন ক্লিয়ার প্লাস্টিক অ্যালাইনার
এটিও কিনে ব্যবহার করতে পারেন। ব্রেসিং করার মত একই টেকনিক এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এটি আপনি রাত-দিন সব সময়েই পরে থাকতে পারেন, খাওয়ার সময়টুকু ছাড়া। একে মাউথ গার্ডও বলা হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে এটি বর্ণহীন হয়, যাতে আলাদা করে একে বাইরে থেকে চোখে পড়ে না।
৩. শোয়ার সময়ে উল্টো হয়ে শোন
রাতে বা দিনে যখনই শুতে যান না কেন, শোবার সময়ে উল্টো করে পেটের ওপর ভর দিয়ে শুতে চেষ্টা করুন। এতে আপনার মুখের ভেতরের অংশের দিকে চাপ পড়বে। দাঁতের ওপরেও চাপটা পড়বে বাইরের দিক থেকে ভেতরের দিকে। এর ফলে আপনার মুখের ভেতরের ওপর দিকে উঠে থাকা দাঁতের ওপর ঘুমিয়ে থাকাকালীন সময় ধরে দীর্ঘক্ষণ চাপ বহাল থাকবে। ফলে দিনের পর দিন এই অভ্যাসের ফলে আপনার দাঁত ধীরে ধীরে শেপে ফিরে আসবে।
৪. ব্যবহার করতে পারেন ইলাস্টিক ব্যান্ড
আপনি যদি ব্যবহার করেন ইলাস্টিক ব্যান্ড, তাহলে সেটি আপনার দাঁতের ওপরে ও পাশে চাপের দ্বারা আপনার দাঁতের সারিকে সমান রাখতে সাহায্য করে। আদতে টেকনিকটা একই, কিন্তু ডেন্টিস্টের কাছে না গিয়ে এটিও দাঁতের সারিকে সমান রাখার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য উপায়।
৫. ব্যবহার করুন টিথ রিটেইনার
টিথ রিটেইনারের দ্বরাও আপনি অ্যালাইনার বা ব্রেসিং এর মতই একটি চাপ প্রয়োগের কৌশলে দাঁতকে শেপে আনার চেষ্টা করতে পারেন। এটিও দোকানে সহজলভ্য। কিনে এনে দাঁতের ওপর ও নীচের দিকে একসাথে ক্লিপের মতো আটকে দিলেই থেকে যাবে। অবশ্যই খাওয়ার সময়ে খুলে রাখুন। অন্য সময়ে পরে থাকলে আপনার দাঁতের ওপরে ধারাবাহিকভাবে একটি চাপ বহাল থাকবে।
আসলে দাঁতের ওপর দিকে উঠে থাকা আপনার মুখের সৌন্দর্যকে যখন নষ্ট করে দেয়, তখনই আসলে আপনি এর সমাধানে তৎপর হয়ে ওঠেন। এ ক্ষেত্রে আপনাকে মনে রাখতে হবে প্রতিটি উপায়ই আসলে সময়সাপেক্ষ। তা ছাড়া ঘরে বসে সমাধান পেতে চাইলে এই উপায়গুলি কার্যকরী তখনই হবে, যদি আপনার সেই ধৈর্য থাকে। তবে আপনি যদি ডাক্তারের পরামর্শে এগোতে চান, তার বিকল্প আর কিছুই হতে পারে না। কেন না, আপনার কাছে দ্রুত সমাধানের আরও বেশ কিছু অপশন খুলে যাবে। এখন আপাতত কীভাবে আপনার উঁচু মাড়িকে শেপে আনবেন সেই চেষ্টাই করুন। প্রাণ খুলে হাসতে না পারার দুঃখ দ্রুত ভুলুন।
অ্যাকটিভেটেড চারকোল দিয়ে কিভাবে দাঁত পরিষ্কার করবেন জানুন বিস্তারিত
মন্তব্য করুন