২৭ শে মার্চ আসতে আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। হ্যাঁ, ওই দিনই শুরু হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। এর আগে বোর্ডের বড় পরীক্ষা বলতে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার অভিজ্ঞতা তোমাদের হয়েছে। ফলে একবার অভিজ্ঞতা থাকলেও এবারের পরীক্ষার গুরুত্ব একেবারেই আলাদা। কারণ এবারের রেজাল্টের ওপরেই নির্ভর করছে তোমরা এরপর কোথায় কোন কলেজে পড়বে, কী নিয়ে পড়বে। ইতিমধ্যে হয়তো অনেকেই নিজেদের ভবিষ্যতের পড়ার বিষয় বেছে নিয়েছ। কিন্তু মাথায় রেখো পছন্দের বিষয় বাদেও মোট নম্বরটি কলেজে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে জেনারেল লাইনের ক্ষেত্রে। আজ কলা বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে যারা বিষয় হিসেবে বেছে নিয়েছ রাষ্ট্রবিজ্ঞান বা পলিটিক্যাল সাইন্সকে, আমাদের সাজেশন তাদের জন্য। কীভাবে একটু চেষ্টা করলেই এই বিষয়ে তোমরা ভালো স্কোর করতে পারো, শেষ মুহূর্তে সেই পরামর্শই আজ দেবো আমরা। এসো, দেখে নিই।
১. প্রশ্নপত্রের ধরণ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা তৈরি কর
প্রশ্নপত্র সম্পর্কে ধারণা বলতে কোন নম্বরের প্রশ্ন কটা লিখতে হবে, সেই বিষয়ে ধারণা করে নাও। এই ধারণা না থাকলে পরীক্ষার মোট সময়ের কতটা কোন নম্বরে দেবে, তা তোমাদের কাছে পরিষ্কার হবে না। তোমাদের ১০০ নম্বরের মধ্যে ৮০ নম্বরের পরীক্ষা দিতে হবে লিখিত ভাবে, বাকি ২০ নম্বর থাকবে প্রোজেক্টে। এই ৮০ নম্বরের উত্তর করতে তোমার হাতে থাকবে ৩ ঘন্টা সময়। এই ৮০ নম্বরকে পুরো প্রশ্নপত্রে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে – পার্ট এ এবং পার্ট বি’তে। দুটি অংশে মোট ৮০ নম্বরকে ৪০ করে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। পার্ট এ’তে থাকছে বর্ণনাধর্মী প্রশ্ন, যার প্রতিটির মান ৮। অর্থাৎ এই বিভাগে তোমাকে ৫টি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। আর পার্ট বি’তে থাকবে অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন, যার প্রতিটির মান ১। এই সব কটা প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য তোমাকে মোট সময় দেওয়া হবে ৩ ঘণ্টা। ফলে এই হিসেবটা মাথায় রাখা খুব দরকার, আর দরকার সেই মতো ঘরে বসে প্র্যাক্টিস।
➡ মাধ্যমিকে ইতিহাসে ভালো নম্বর তোলার টিপস।
২. সময় সম্পর্কে সচেতন থেকো
প্রথমত ৮ নম্বরের ৫ টি প্রশ্নের পেছনে সময় দিতে গিয়ে ১ নম্বরের প্রশ্নে যেন সময় কম না পড়ে সেই বিষয়ে সচেতন থেকো। কারণ প্রশ্নের মান ১ হলেও, প্রশ্ন সংখ্যা কিন্তু ৪০। ফলে, ছোট প্রশ্ন বলেই নম্বর পাওয়া ও নম্বর কাটা দুটোই খুব সহজ। আর তাই একটু ভেবে উত্তর দিতে হবে। ফলে কম করে হলেও ১ ঘন্টা সময় ১ নম্বরের প্রশ্নের জন্য হাতে রেখো। আর অবশ্যই শেষে দশ মিনিট বাড়তি সময় হিসেবে রেখে বাকি সময় ৮ নম্বরের প্রশ্নে দাও। এই হিসেবে পরীক্ষা দেওয়ার একটাই উপায়- যথেষ্ট প্র্যাক্টিস।
৩. ঠিক প্রশ্ন বেছে নাও
৮ ও ১ নম্বর উভয় প্রশ্নের ক্ষেত্রেই সঠিক প্রশ্নটি বেছে নেওয়া খুব জরুরী। ১ নম্বরের ক্ষেত্রে আন্দাজে ঢিল না মারাই ভালো। যে উত্তর নিয়ে তুমি কনফিডেন্ট, সেটাই লেখো। তার জন্য দরকার প্রশ্নপত্র ভালো মতো পড়া ও ভাবা। এই প্রশ্ন পড়ার জন্যই তোমাকে পরীক্ষার হলে ১৫ মিনিট আগে প্রশ্নপত্র দেওয়া হবে। ওই অতিরিক্ত ১৫ মিনিটের উপযুক্ত ব্যবহার করো। কোন বিষয়ে তোমার প্রস্তুতি ভালো, ৮ নম্বরের উত্তর লেখার সময়ে ভালো করে ভেবে বেছে নাও সেই বিষয়ের প্রশ্ন।
৪. প্রশ্নপত্র সমাধান করতে থাকো ঘরে বসে
এ ক্ষেত্রে প্রশ্নবিচিত্রা, টেস্ট পেপার আর আগের কয়েক বছরের প্রশ্নপত্র ঘরে ঘড়ি ধরে বসে সমাধানের কোনও বিকল্প নেই। অর্থাৎ কোন প্রশ্ন কত নম্বরের থাকবে ও তার জন্য বরাদ্দ সময় কত হবে এই হিসেব করাটাই সব নয়। বাড়িতে বারবার এই হিসেব মতো অনুশীলন না করলে পরীক্ষা দিতে গিয়ে এই হিসেবে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে না। আর এ ক্ষেত্রে বড় প্রশ্নের সাজেশন তৈরি করলেও ১ নম্বরের প্রশ্নের কিন্তু কোনও সাজেশন হয় না। অর্থাৎ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, বিভিন্ন ফরেন পলিসি, বিভিন্ন রাজনৈতিক মতবাদ– ইত্যাদি যে বিষয়গুলি এবারে তোমাদের পড়তে হচ্ছে, তার প্রতিটা তথ্যকে কেন্দ্র করে ১ নম্বরের প্রশ্ন আসতে পারে। আর তাই ১ নম্বরের প্রশ্নের জন্য টেক্সট বই ভালো মতো পড়ার বিকল্প কিছু নেই। আর শুধু পড়লে হবে না, তার সাথে দরকার প্রশ্নপত্র সমাধান করতে থাকা।
১১ই এপ্রিল তোমাদের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ। আর ওইদিনেই পলিটিক্যাল সাইন্সের পরীক্ষা। দীর্ঘ বেশ কয়েক দিনের পরীক্ষার শেষ দিনে অনেকেরই একটা উন্মাদনা কাজ করে। দেখো, যেন সেটা তোমার পরীক্ষার ক্ষতির কারণ না হয়। ফলে, লক্ষ্য স্থির রেখে প্রস্তুতি চালিয়ে যেতে থাকো। আগাম শুভেচ্ছা রইল সকলের জন্য।
মন্তব্য করুন