সাইকোলজি বা মনস্তত্ত্ব।এক কথায় যাকে বলে মন নিয়ে চর্চা।আজ্ঞে হ্যাঁ।হিউম্যান সাইকোলজি বা মানুষের মন নিয়ে কৌতূহল কিন্তু মানুষের বহুদিনের।আর সেই চর্চা থেকেই যাত্রা শুরু হিউম্যান সাইকোলজির।মানুষের মন,মানুষ কী ভাবে,মানুষের কাজ,তার চিন্তা-ভাবনা এসবই কিন্তু আদতে সাইকোলজির বিষয়বস্তু।
তবে এই সাইকোলজির চর্চা ঠিক কবে থেকে শুরু হয়েছিল জানা যায় না। আপনারা শুনে অবাক হবেন প্রাচীন মিশর,গ্রিস,চিন,পারস্য এমনকি ভারতেও সাইকোলজির দার্শনিক চর্চা রীতিমতো জনপ্রিয় ছিল।আর খ্রিস্টপূর্বাব্দ ৪০০০ অব্দে গ্রীক ফিজিশিয়ান হিপোক্রিটাস মানুষের মেন্টাল ডিসওর্ডার যে একটা শারীরিক কারণ,এর পেছনে কোনো দৈবী বা সুপার ন্যাচারাল পাওয়ারের হাত নেই তা ঘোষণা করেন।মোটকথা সাইকোলজির চর্চা সারা পৃথিবীতেই আস্তে আস্তে জনপ্রিয় হচ্ছিল।
সে যাই হোক,সাইকোলজির প্রাণপুরুষ যাকে বলা হয়,তিনি হলেন সিগমুন্ড ফ্রয়েড।ফ্রয়েডের মন,অবচেতন মনের তত্ত্ব আর এ সম্পর্কে তাঁর সম্পূর্ণ এক নতুন দিকের উন্মোচনই মানুষকে নতুন করে,নতুন ভাবে হিউম্যান সাইকোলজি নিয়ে ভাবতে শেখায়।হিউম্যান সাইকোলজির চর্চার ক্ষেত্রে আরও নানা দিক খুলে যেতে শুরু করে।বাড়তে থাকে এ বিষয়ে মানুষের আগ্রহও।বিভিন্ন কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নিয়ে পড়ানো শুরু হতে থাকে।সাইকোলজি নিয়ে পড়াশোনা,গবেষণা বা কাজের ক্ষেত্র কিন্তু আজকের দিনে প্রচুর।আজকের ব্যস্ত জটিল জীবনে মানুষের কাজের চাপ বাড়ছে। ফলে বাড়ছে মানুষের ব্যস্ততাও।আর কাজের সময় যত বাড়ছে,তত কমছে নিজের সময়।বাড়ছে মানুষে মানুষে দূরত্ব।সম্পর্ক আর নানা ক্ষেত্রে আসছে জটিলতা।
ফলে এই জটিল সময়ে মানুষের মন যে রীতিমতো একটা জনপ্রিয় চর্চার বিষয় হবে,এতে আর সন্দেহ কি!বিভিন্ন হসপিটালে আর সাইকোলজিস্টের চেম্বারেও তাই ভিড় বাড়ছে মানুষের।মনের অসুখের সমাধান সব্বাই চান।তাই আজকের দিনে দাঁড়িয়ে আপনি কিন্তু হিউম্যান সাইকোলজিকে আপনার পড়াশোনা বা গবেষণা বা কাজের জায়গা হিসেবে বেছে নিতেই পারেন।স্কোপ এখানে প্রচুর।তাই এখানে রইলো আপনাদের জন্য কিছু কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের খবর যেখানে সাইকোলজি পড়ানো হয়।
১. আশুতোষ কলেজ
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ এই কলেজে আপনি সাইকোলজি নিয়ে স্নাতক স্তরে পড়াশোনার সুযোগ পাবেন।কলকাতার অন্যতম নাম করা কলেজ এটি।তাছাড়া কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আরও অনেক কলেজেই সাইকোলজি পড়ানো হয় স্নাতক স্তরে।
২. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
পশ্চিমবঙ্গে যদি সাইকোলজি নিয়ে পড়াশোনা করতে চান,তাহলে বেস্ট চান্স কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।এখানকার ফ্যাকাল্টিও দারুণ।আর অ্যাপ্ল্যায়েড সাইকোলজি নিয়ে পড়াশোনার সুযোগও কিন্তু এখানে মিলবে।
এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের বাইরেও কিন্তু দিল্লির লেডি শ্রীরাম কলেজ,পুনের ফার্গুসন কলেজ,বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি ইত্যাদি নামীদামী বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়ার সুযোগ মিলবে।উচ্চশিক্ষা তাই আপনি চাইলে অনায়াসেই করে ফেলতে পারেন।আর পড়ার জন্য বিদেশ?সে তো রইলোই।বাইরে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি,লন্ডনের কিংস কলেজেও সাইকোলজি পড়ানো হয়।আর আমাদের দেশের থেকে বাইরে কিন্তু সাইকোলজির চর্চার ক্ষেত্র অনেক বেশী।তাই সুযোগও বেশী।
আর যদি জানতে চান সাইকোলজি পড়ে কাজের সুযোগ কেমন?তাহলে আমি বলবো,সাইকোলজির চর্চা এবং এ বিষয়ে মানুষের আগ্রহ কিন্তু দিন দিন বাড়ছে।কাউন্সেলিং-এর প্রতিও প্রবণতা বাড়ছে মানুষের।আজকাল অনেক ক্ষেত্রেই কাউন্সেলিংকে মাস্ট করে দেওয়া হয়েছে।তাই কাজের সুযোগ বেশ আছেই।বিভিন্ন হসপিটালে সাইকোলজিস্টের কাজ তো করতেই পারেন।পেশেন্টের ট্রিটমেন্ট করতে পারেন।তাছাড়া আলাদা চেম্বার খুলেও প্র্যাকটিস করতে পারেন।
আর যাই বলুন,হিউম্যান সাইকোলজি কিন্তু বেশ ইন্টারেস্টিং বিষয়।তাই এ নিয়ে আগ্রহ থাকলে পড়তেই পারেন।বেশ অন্যরকম পড়া হবে।
মন্তব্য করুন