একে তো শীতকাল, তার ওপর আবার আসছে পৌষ মাস! আর পৌষ মাস মানেই বাঙালির ‘বারো মাসে মাসে তেরো পার্বণে’র মধ্যে, সবচেয়ে সুস্বাদু পার্বণটির চলে আসা! যাকে বলে ভোগ পার্বণ। যেটা থেকে আমরা কেউই বঞ্চিত হতে চাই না। মালপোয়া, পিঠে, পাটিসাপটা আরও কত কি! উফ! জিভে জল চলে আসছে তো? আর এই জল আরও বাড়িয়ে দিতে, মায়ের রান্না ঘরে ‘দাশবাস’ আনছে ছয় ধরণের সুস্বাদু পিঠে পুলির রেসিপি। এবার মায়ের আগে আপনিই বানিয়ে, মাকে তাক লাগিয়ে দিন!
১. পাটিসাপটা
উপকরণ
২ কাপ চালের গুঁড়ো, সুজি ২ থেকে ৩ চামচ, চিনি পরিমাণ মতো, ক্ষীর ১/২ কাপ, দুধ ২ কাপ, সামান্য নুন, গুড় ১ ১/২ কাপ, নারকেল কোরা ১ কাপ, কন্ডেন্সড মিল্ক ১/২ কাপ, ও একটু দারুচিনি।
পদ্ধতি
জানি এটা বাড়ির সবচেয়ে প্রিয় রেসিপি। এর জন্য প্রথমে পুর রেডি করতে হবে। তার জন্য নারকেল, কন্ডেন্সড মিল্ক, ক্ষীর, গুড়, দারুচিনি সব মিশিয়ে নিন। দারুচিনি গুঁড়ো করে নিতে হবে। সব উপকরণগুলি ভালো করে মিশিয়ে, কড়ায় একটু নাড়তে হবে। মিশ্রণটা একটু আঁটো আঁটো মত হবে। মিশ্রণটা একটু আঁটো মত হলে নামিয়ে নিন। এবার একটা পাত্রে চালের গুঁড়ো, ময়দা, দুধ, সুজি, গুড়, একটু চিনি ও সামান্য নুন দিয়ে জল দিয়ে গুলে নিতে হবে। ঘন মিশ্রণ হবে। এবার চাটুতে তেল দিন। তারপর হাতায় করে, মিশ্রণ তুলে চাটুতে দিন। হাতা দিয়ে গোল করে চারিদিকে ছড়িয়ে দিন। রুটির মত হবে। এবার এর মধ্যে পুরটা দিন। দিয়ে রুটিটা ডান ও বাঁদিক দিয়ে মুড়ুন। এ পিঠ, ও পিঠ করে ভেজে তুলে নিন।
২. গোকুল পিঠে
উপকরণ
মণ্ড তৈরি করার জন্য
২ থেকে ৩ কাপ ক্ষীর, ১/২ কাপ গুড়, ও ১ চামচ এলাচ।
ব্যাটার তৈরি করার জন্য
২ কাপ ময়দা, ৪ চামচ সুজি, ২ চামচ দই, একটু ঘি।
রস তৈরি করার জন্য
২ কাপ চিনি বা গুড়।
পদ্ধতি
প্রথমে মণ্ড তৈরি করে নিন। কড়ায় মণ্ড তৈরি করার উপকরণগুলি মিশিয়ে। মণ্ড তৈরি করুন। এবার হাতে একটু ঘি লাগিয়ে নিন। এবার মণ্ড থেকে একটু একটু করে নিয়ে, গোল গোল করে মণ্ড তৈরি করুন। ব্যাটার তৈরি করার সমস্ত উপকরণগুলি মেশান। বেশ ঘন মিশ্রণ তৈরি হবে। এবার কড়ায় ঘি গরম করুন। মণ্ডগুলি ওই মিশ্রণে ডুবিয়ে তেলে ভাজুন। ভেজে তুলে নিন। তারপর একটা জায়গায় চিনির বা গুড়ের রস তৈরি করুন ঘন করে। এবার ওই মণ্ডগুলি ওই চিনির বা গুড়ের রসে ডুবিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট। তারপর তুলে নিন। ব্যাস রেডি গোকুল পিঠে।
৩. ঝাল পিঠে
উপকরণ
চালের গুঁড়ো ২ কাপ, ময়দা ১ কাপ, ডিম ১ টা, পেঁয়াজ কুচি ২ টো, কাঁচা লঙ্কা কুঁচি ১ চামচ, ধনেপাতা কুচি ৩ চামচ, নুন পরিমাণ মতো, চিনি ১/২ চামচ , বেকিং পাওডার ১/২ চামচ ও একটু গরম জল।
পদ্ধতি
প্রথমে ময়দা, চালের গুঁড়ো, বেকিং পাওডার মিশিয়ে নিন। এবার এতে বাকি উপকরণগুলো মেশান। ভালো করে সব উপকরণগুলো মিশিয়ে নিন। একটা ঘন মিশ্রণ তৈরি হবে। এবার কড়ায় তেল দিন। এবার ওই মিশ্রণ তুলে ছাঁকা তেলে ভাজুন। দু’দিক ভালো করে ভেজে নিন। হয়ে গেলে মাঝখানে কাঠি দিয়ে একটু ফুটো করে দিন। যাতে ভেতরের গরম ভাপ বেরিয়ে যায়। এবার টম্যাটো বা চিলি সসের সাথে গরম গরম পরিবেশন করুন ঝাল পিঠে।
৪. চিঁড়ের পিঠে
উপকরণ
চিঁড়ে ২ থেকে ৩ কাপ, ময়দা ১ কাপ, নারকেল কোরা ১ কাপের একটু বেশী, গুড় ২ কাপ ও ঘি।
পদ্ধতি
কড়ায় নারকেল ও গুড় দিন। ভালো করে নেড়ে নিন। এবার একটা আলাদা জায়গায় চিনির রস করে রাখুন। এবার একটা পাত্রে চিঁড়ে ধুয়ে নিন। একটু গরম জলে, চিঁড়ে মেখে নিন। এবার এই চিঁড়ের মণ্ড গোল গোল করে, তাতে নারকেল পুর ভরে দিন। কড়ায় ঘি দিন। ওই মণ্ডগুলো ঘিতে ভেজে নিন। তারপর চিনির রসে ডুবিয়ে রাখুন ১০ থেকে ১৫ মিনিট। ব্যাস, রস থেকে তুলে নিলেই রেডি চিড়ের পিঠে।
৫. চুষির পায়েস
উপকরণ
চালের গুঁড়ো ২ থেকে ৩ কাপ, দুধ ১ লিটার, চিনি ২ কাপের একটু বেশী ও একটু জল।
পদ্ধতি
প্রথমে গরম জল দিয়ে চালের গুঁড়ো মেখে নিতে হবে। তারপর ওই মণ্ড থেকে, একটু একটু করে লেচি নিয়ে লম্বা লম্বা করে চুষি বানিয়ে নিন। এবার একটা পাত্রে, দুধ ও গুড় মিশিয়ে ফোটান। দুধে একটু দারুচিনি গুঁড়ো দিন। দুধ একটু ঘন হলে এতে চুষিগুলো দিয়ে দিন। চুষিগুলো দিয়ে ভালো করে ফোটান। চাইলে এতে একটু কন্ডেন্সড মিল্কও দিতে পারেন। আরও ভালো স্বাদের জন্য। এবার দুধ ঘন হলে নামিয়ে নিন। রেডি চুষির পায়েস।
৬. নারকেলের পুলি
উপকরণ
নারকেল কোরা ২ কাপের একটু বেশী, গুড় ২ থেকে ৩ কাপ , তিলের গুঁড়ো ৩ থেকে ৪ চামচ, চালের গুঁড়ো ৩ কাপ, একটু দারুচিনি গুঁড়ো ও তেল।
পদ্ধতি
প্রথমে পুর রেডি করে নিন। কড়ায় নারকেল ও গুড় মিশিয়ে নিন। এবার এতে তিল, চালের গুঁড়ো ও একটু সামান্য দারুচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। ভালো করে সব উপকরণগুলো মেশান। একটু শক্ত হয়ে এলে নামিয়ে নিন। এবার একটা জায়গায় চালের গুঁড়ো গরম জলে মেখে নিন। মণ্ড তৈরি করুন। এবার ছোট ছোট লেচি করুন। পিঠের আকারে গড়ে, তার মধ্যে পুর দিন। ভালো করে পুর দিয়ে আটকে দিন। এবার কড়ায় তেল দিন। ছাঁকা তেলে ভেজে নিন ভালো করে। ব্যাস তৈরি নারকেল পুলি। এটা অনেকদিন পর্যন্ত ঠিক থাকে। তাই অনায়াসে করে রেখে দিতে পারেন।
আজ কিন্তু অনেক পিঠে তৈরি শিখিয়ে দিলাম। এবার ঝটপট রান্না করে বাড়ির সবাইকে তাক লাগিয়ে দাও দেখি।
Samar Basak
rannar resipi ta valo Moto bujhte parlam na.aktu Details a bolle valo hoto.
নন্দিনী মুখার্জ্জী
উপকরন যা যা নিতে বলা হয়েছে তা ভালো করে স্টেপ বাই স্টেপ ফলো করুন। আর বাকি বানানো টা যেমন ভাবে পিঠে বানায় সেই ভাবে বানাবেন। যদি অসুবিধা হয় আমায় জানাবেন আমি নতুন করে একটা লেখা আপনাকে লিখে দেব।