বাড়িতে ঠাকুমা দিদিমাদের কৃপায় ছোটো বেলায় মাঝে মাঝেই নিশ্চয়ই চুলের সেই আলটিমেট কাট, মানে ন্যাড়া হতে হয়েছে মোটামুটি আমাদের সকলকেই। কারণ এতে নাকি চুলের গোছ বাড়ে! মানে মাথায় যাতে অনেক বেশী করে চুল গজায় তাই ৩-৪ বার মাথা ভর্তি চুলের স্যাক্রিফাইস আমরা সকলেই করেছি।
চুলের সমস্যায় হেয়ার কাট
এখনো কিন্তু চুল পড়া শুরু হলে বা চুলের কোনো সমস্যা হলে সবার আগে হেয়ার কাট ব্যাপারটা সকলেই সাপোর্ট করে থাকেন। তবে এই বয়সে এসে তো আর চুল ভালো করার জন্য ন্যাড়া হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু নিয়মিত হেয়ার কাট খুব জরুরী। আপনার মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন জাগছে, যে কতদিন অন্তর চুল কাটা উচিত? আপনার এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে পড়ে ফেলুন আজকের বিশেষ নিবেদন।
চুল নিয়মিত কেন কাটবো
হেয়ার কাট সাধারণত চুলের ধরণের ওপর নির্ভর করে। এছাড়া চুল তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠার জন্যও কিন্তু চুল নিয়মিত কাটা প্রয়োজন। আমরা অনেকেই চুল বড় করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চুল কাটি না। এর ফল কিন্তু হয় উল্টো। সাধারণত চুল বেশী লম্বা হয়ে গেলে চুলের ডগা ফেটে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং এর ফলে চুল পড়া শুরু হয়। নিয়মিত চুল কাটলে কিন্তু চুল তাড়াতাড়ি লম্বা হয় এবং অনেক বেশী সুন্দর এবং ভালো থাকে।
চুলের ধরণ অনুযায়ী হেয়ার কাট
আর আপনি কতবার চুল কাটবেন তা কিন্তু আপনার চুলের স্টাইলের ওপরেও নির্ভর করে। লম্বা চুল, ছোটো চুল, মাঝারি লম্বা চুল, কালার করা চুল, প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে কিন্তু আলাদা আলাদা সময়ে হেয়ার কাট প্রয়োজন। সুতরাং জেনে নেওয়া দরকার ঠিক কতদিন অন্তর আমাদের চুল কাটা উচিত।
১. লম্বা চুল
আমাদের মধ্যে অনেকেই লম্বা চুল রাখা পছন্দ করে থাকি। লম্বা চুলের ক্ষেত্রে কিন্তু নিয়মিত চুল কাটা বা ট্রিম করা খুব বেশী প্রয়োজন। কারণ চুল বেশী লম্বা হয়ে গেলে নীচের অংশটি ফেটে যায় এবং চুল পাতলাও হয়ে যায়। ফলে আপনার চুল যেমন দেখতে বাজে লাগে, তেমনই তা দুর্বল হয়ে পড়ে।
এক্ষেত্রে প্রতি ৩ মাস বা ৪ মাস অন্তর কিন্তু আপনার চুল কাটা প্রয়োজন। আমাদের চুল সাধারণত মাসে ১/২ ইঞ্চি করে বাড়ে। সুতরাং আপনি প্রতি ২-৩ মাস অন্তর ১/২ ইঞ্চি বা ১ ইঞ্চি করে চুল কাটলে কিন্তু আপনার চুল অনেক বেশী স্বাস্থ্যকর থাকে। এতে আপনার চুলের ডগাগুলি ফাটতে পারে না ফলত চুল পাতলাও দেখায় না।
২. মাঝারি লম্বা চুল
যারা বেশী লম্বা চুল রাখা পছন্দ করেন না, যাদের চুল মিডিয়াম লেংথের, তাঁদের কিন্তু নিয়মিত হেয়ার কাট প্রয়োজন। কারণ প্রথমত এতে আপনার হেয়ার স্টাইলটি সুন্দর থাকে। এছাড়া চুল লম্বা হতে শুরু করার সাথে সাথে কিন্তু স্প্লিট এন্ড বা চুলের ডগা ফাটতে শুরু করে যা আপনার চুলকে পাতলা এবং দুর্বল করে দেয়। ফলে তা যেমন দেখতে খারাপ লাগে, তেমনি তা আপনার চুল পড়ার কারণ হয়ে ওঠে।
তাই সেক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট লেংথ মেনটেন করুন এবং প্রতি ২ মাস বা ৩ মাস অন্তর অবশ্যই বাড়তি খারাপ হয়ে যাওয়া চুলগুলি কেটে ফেলুন।
৩. ছোটো চুল
সবথেকে বেশী নিয়মিত হেয়ার কাট এই ধরণের চুলের ক্ষেত্রে প্রয়োজন। কারণ শর্ট হেয়ার কাট বা আপনার শর্ট হেয়ার স্টাইল কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এছাড়া ছোটো চুলের ডগা যদি কোনো কারণে ফেটে যায় তাহলে তা অত্যন্ত খারাপ দেখতে লাগে। তাই আপনার চুলের স্টাইলটি মেনটেন করার জন্য প্রতি ২ মাস অন্তর কিন্তু হেয়ার কাট মাস্ট।
৪. কেমিকালি ট্রিটেড হেয়ার
আপনার চুল যদি কালার করা থাকে বা স্ট্রেটনিং করা থাকে সেক্ষেত্রে চুল খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশী থাকে। কারণ এক্ষেত্রে চুলে নানা রকম কেমিকাল প্রয়োগ করা হয়ে থাকে যার ফলে চুলে ড্রাই হওয়া যাওয়া বা স্প্লিট এন্ডের সমস্যা দেখা যায়। ফলত এক্ষেত্রে ২ মাস অন্তর কিন্তু অবশ্যই চুল কাটা প্রয়োজন।
তাই দিদিমা-ঠাকুমাদের কথা কিন্তু পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। চুল ন্যাড়া করার ফলে কত জনের চুল ঘন হয়েছে জানি না, তবে আপনার চুল ভালো রাখার জন্য এবং চুল যাতে ঠিকমতো বাড়ে, তার জন্য কিন্তু নিয়মিত হেয়ার কাট ঠিক সময়ে করা উচিত। আর তাই এতদিন যদি নিয়মিত চুল না কেটে থাকেন তাহলে এখন থেকে নিজের চুলের ধরণ অনুযায়ী ঠিক সময় মত হেয়ার কাটকে থাম্বস আপ বলুন।
Soumi jana
Amar chul akdam e lamba hayna,ki korbo