তেল তো ব্যবহার করেছেন কতকিছুই, কিন্তু কখনও রেড়ির তেল ব্যবহার করে দেখেছেন? ‘রেড়ির তেল’ শুনেই কেমন যেন কাঠখোট্টা ধরনের শব্দ বলে মনে হচ্ছে তাই না? কিন্তু আমি যদি এখন বলি, এই রেড়ির তেলই হচ্ছে, ক্যাস্টর ওয়েল, তাহলে নিশ্চয়ই তা আর অপরিচিত বলে মনে হবে না! এই ক্যাস্টর ওয়েল বা রেড়ির তেলের আছে নানা গুণাগুণ। আসুন আজ আমরা জেনে নেই রেড়ির তেলের কী কী উপকারিতা রয়েছে, আর কিভাবেই বা এই তেল ব্যবহার করতে হয়।
শুষ্ক ত্বককে মসৃণ করে তোলে রেড়ির তেল
রেড়ির তেল বা ক্যাস্টর ওয়েল আপনার শুষ্ক ত্বকে পুষ্টি দান করে করে তুলবে মসৃণ। সমপরিমাণ ক্যাস্টর ওয়েল এবং নারকেল তেল একসাথে মিশিয়ে হাতে পায়ে মাখুন। দেখবেন, কিছুদিনের মধ্যে ত্বক হয়ে উঠবে মসৃণ ও উজ্জ্বল।
ত্বকের বলিরেখা দূর করবে এই তেল
বয়স বেড়ে যাওয়ার আগেই ত্বকে বলিরেখা পড়েছে? কেমন যেন বুড়িয়ে গেছেন বয়স হওয়ার আগেই? চিন্তা নেই! আপনার ত্বকের বলিরেখা দূর করতে আছে রেড়ির তেল। রাতে ঘুমাবার আগে মুখ ফেসওয়াস দিয়ে পরিষ্কার করে কয়েক ফোঁটা ক্যাস্টর ওয়েল মুখে আঙুলের সাহায্যে ম্যাসাজ করুন। বলিরেখা উধাও হয়ে আপনার ত্বককে টানটান আর কচিভাব এনে দিতে এই তেলের জুড়ি নেই।
ক্যাস্টর ওয়েল সাহায্য করে চুলের বৃদ্ধিতে
চুলকে দ্রুত বড় করতে এবং চুল পড়া বন্ধ করতে পারে ক্যাস্টর ওয়েল বা রেড়ির তেল। নারকেল তেল, আমন্ড তেল বা অলিভ ওয়েলের সাথে সমপরিমাণে ক্যাস্টর ওয়েল মিশিয়ে নিয়ে একটুখানি গরম করে কুসুম গরম তেল আস্তে আস্তে ভালো করে মালিশ করুন আপনার মাথার ত্বকে। মাত্র ১০ দিনের মধ্যেই আপনার চুল পড়া বন্ধ তো হবেই, চুলকেও করে তুলবে আরও বেশি দীর্ঘ। এছাড়া শুষ্ক চুলের জন্য নারিকেল দুধের সাথে ক্যাস্টর ওয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করলেও পাবেন সুন্দর, সিল্কি, ঘন চুল।
আইভ্রু ও চোখের পাপড়ি বড় করুন ক্যাস্টর ওয়েল দিয়ে
শুধু চুলকেই দীর্ঘ করে তাই নয়, বরং ক্যাস্টর ওয়েল আপনার আইভ্রু ও আইল্যাশ বা চোখের পাপড়িকেও দীর্ঘ করতে সাহায্য করে। রাতে ঘুমাবার আগে আইভ্রু ও চোখের পাপড়িতে সামান্য দু’এক ফোঁটা ক্যাস্টর ওয়েল আঙুলে নিয়ে লাগিয়ে রাখুন। কিছুদিনের মধ্যেই আপনি পাবেন ঘন ও দীর্ঘ আইভ্রু ও আইল্যাশ।
রেড়ির তেল দিয়ে ত্বকে ময়েশ্চার করুন
যে কোনো ধরনের শেভিং বা ওয়াক্সিং করার পর ত্বকে রেড়ির তেল লাগান। এতে আপনার ত্বক পাবে প্রাকৃতিক ময়েশ্চার।
ফাটা পা সারিয়ে তুলুন
আপনার পা যদি ফেটে থাকে তাহলে রাতে ভ্যাসিলিন জেলের সাথে সামান্য ক্যাস্টর ওয়েল মিশিয়ে এক জোড়া মুজা পরে ঘুমাতে যান নিশ্চিন্ত মনে। মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই আপনার ফেটে যাওয়া পা সেরে গিয়ে হয়ে উঠবে মসৃণ।
ঠোঁট ফাটা রোধ করুন
ফাঁটা ঠোট দেখতে বা সেখান থেকে রক্ত পড়লে সত্যিই খুব খারাপ লাগে। আপনার ফাটা ঠোঁট সারিয়ে তুলতেও রেড়ির তেলের কোনো জুড়ি নেই। সামান্য রেড়ির তেল কয়েক ফোঁটা আঙুলে করে নিয়ে দিনে তিন থেকে চার বার লাগান আপনার ঠোঁটে। আর রাতে ঘুমানোর আগে লাগিয়ে রাখুন। মাত্র ৬/৭ দিনের মধ্যেই আপনার ঠোঁট ফাটা দূর হয়ে গোলাপি বর্ণ ধারণ করবে!
এখন জেনে গেলেন তো- রেড়ির তেল বা ক্যাস্টর ওয়েল কতভাবে আপনার উপকার করতে পারে! সেই সাথে আপনি এটাও জেনে গেলেন যে এসব উপকার পেতে গেলে আপনাকে কী কী করতে হবে। তাহলে রেড়ির তেল ব্যবহার করে নিয়ে নিন নিজের ত্বক আর চুলের যত্ন!
মন্তব্য করুন