কয়েকদিন ধরেই বেশ জ্বর জ্বর লাগছে।চোখ ফোলা বা নাক দিয়ে জল পড়ছে অনবরত।অথবা টাইফয়েড বা জন্ডিসের মতো মারাত্মক দীর্ঘমেয়াদী কোনো রোগ থেকে ভুগে উঠলেন।সামনেই বিয়েবাড়ি।সেজেগুজে তো যেতেই হবে!আর যদি বিয়েবাড়ি বা কোনো পার্টি নাই থাকে,রাস্তায় তো আপনাকে বেরোতেই হয়।ভাবুন তো,রাস্তাঘাটে লোকজন যদি আপনাকে অসুস্থ ভেবে আপনার দিকে হাঁ করে তাকিয়ে থাকে,তাহলে মুড অফ হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক।তার থেকে আসুন আজ ‘দাশবাস’স্পেশাল মেকআপ টিপস জেনে নেওয়া যাক,যা আপনার অসুস্থতা লুকোতে সাহায্য করবে।
অসুখের পরে কেন বিশেষ মেকআপ
সাধারণত কোনো অসুখ হলে বা দীর্ঘমেয়াদী কোনো রোগ থেকে সেরে উঠলে আমাদের চোখ মুখ এমনিতেই শুকনো লাগে।অসুখের ছাপ আর ধকল তখন চেহারায় স্পষ্ট বোঝা যায়।তাই সকলের মাঝখানে যাতে আপনাকে অসুস্থ,রুগ্ন না লাগে,তার জন্য বিশেষ কিছু মেকআপ করা দরকার,যার ফলে আপনার অসুখের লক্ষণগুলিও ঢেকে যাবে,আর আপনাকে আগের মতোই বেশ ফ্রেশ লাগবে।
ভালো করে ময়েশ্চারাইজ করছেন তো
আজ্ঞে মুখকে,আর আপনাকে ফ্রেশ লাগানোর জন্য এই অংশটি কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।সকাল-বিকেল ভালো করে ময়েশ্চারাইজার লাগান,দেখবেন মুখের শুকনো ভাব অনেকটাই কেটে যাচ্ছে। হিমালয়ার ময়েশ্চারাইজার লাগাতে পারেন। খুব ভালো কাজ দেয়। দাম খুব কম।
দাম মাত্র ৯০/-
বেস মেকআপ
বেস মেকআপের জন্য আপনি হালকা শেডের ফাউন্ডেশন বাছুন।আর মুখ যদি খুব শুকনো লাগে,তাহলে আপনার পছন্দের শেডের ফাউন্ডেশনের সাথে অল্প ময়েশ্চারাইজার নিয়ে মিশিয়ে মুখে লাগান।দেখবেন মুখের আর্দ্র ভাব আবার ফিরে এসেছে আর মুখকে স্বাভাবিক লাগছে।আর যদি মনে হয় ফাউন্ডেশন আপনার মুখের সাথে ভালো করে মিশছে না,বা ফ্যাকাশে লাগছে,তাহলে চাপ নেবেন না।বি.বি. ক্রিম ব্যবহার করুন।দেখবেন বি.বি. ক্রিম আপনার ত্বকের টোনের সাথে ভালো করে মিশেও গেছে আর মুখকে উজ্জ্বলও লাগছে।এবার হালকা করে ফেস পাওডার বুলিয়ে নিন।হালকা ব্লাশও দিতে পারেন।আর সর্দি লেগে যদি নাক লাল হয়ে যায়,তাহলে নাকেও কনসিলার লাগিয়ে মিশিয়ে নিন।
দাম মাত্র ৭৫/-
চোখের মেকআপ
বুঝতেই পারছি অসুখে ভুগে আপনার চোখের এক্কেবারে বারোটা বেজে গেছে।চোখের নীচে কালি তো পড়েইছে,তার সাথে চোখের তলাও নিশ্চয়ই ফুলে গেছে?চোখের নীচের ফোলাভাব কমাতে সকালে ১টা টি ব্যাগ ঠাণ্ডা জলে ডুবিয়ে রেখে সেটা নিয়ে চোখের নীচের ফোলা অংশে অন্তত মিনিট ১৫-২০রাখুন।দেখবেন কয়েকদিনেই আই ব্যাগ ভ্যানিশ হয়ে যাচ্ছে।আর ডার্ক সার্কেল যদি ঢাকতে চান,তাহলে আপনাকে কনসিলারের শরণাপন্ন হতেই হবে।তবে দেখবেন কনসিলার যেন ক্রিমি হয় আর স্কিন টোনের সাথে ভালো করে মিশে যায়।আর কাজল বেশী মোটা করে দেবেন না।কাজল মোটা করে দিলে চোখকে ছোট লাগে,ওতে আপনাকে আরও অসুস্থ মনে হয়।তার থেকে হালকা করে কাজল আর লাইনার পরুন।উজ্জ্বল শেডের আই শ্যাডো লাগান।মাস্কারা লাগান।ওতেই আপনাকে সুন্দর আর মিষ্টি লাগবে।
ঠোঁটের মেকআপ
অসুখের সময় ঠোঁট এমনিতেই শুকনো হয়ে যায়।তাই ঘন ঘন ময়েশ্চারাইজড করুন ঠোঁটকে।আর লিপস্টিক লাগানোর আগে ঠোঁটে ভেসলিন জাতীয় কিছু লাগিয়ে নিন।আর উজ্জ্বল টোনের লিপস্টিক বাছুন,যাতে ঠোঁটকে ফ্যাকাশে না লাগে।ম্যাট ফিনিশ লিপস্টিক আপনার যত পছন্দই হোক না কেন,অসুস্থতার পর না পরাই ভালো।কারণ ওই ম্যাট ফিনিশড লিপস্টিক আপনার ঠোঁটকে আরও শুকনো করে দেয়।
ঝলমলে থাকুন
মুখের মেকআপের শেড দেখার সময় খেয়াল রাখবেন যে শেডগুলো যেন উজ্জ্বল আর ওয়ার্ম হয়।লাল,লালের শেড এরকম কিছু বাছার চেষ্টা করুন,যাতে আপনাকে আরও বেশী ঝলমলে,‘লাইভলি’ লাগে।নীল ঘেঁষা কোনো শেড ব্যবহার না করাই ভালো।কারণ নীল ডার্ক রঙ,আর অসুখে ভুগে আপনি যদি ডার্ক রঙের কিছু শেড মেকআপে ব্যবহার করেন,তাহলে তা আপনার মুখকে উজ্জ্বল দেখানোর বদলে রঙকে আরও চাপা করে দেবে।
ঠিকঠাক পোজ
অসুস্থতার পর সাধারণত আমরা দুর্বল হয়ে পড়ি।তাই কুঁজো হয়ে পড়ি।ভাবুন তো,সক্কলের মাঝখানে আপনার একটা কুঁজো হয়ে নুইয়ে পড়া ছবি উঠলে ব্যাপারটা মোটেই ভালো হবে না।সবসময় সোজা হয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন।দেখবেন আপনাকে কেমন এনারজেটিক লাগছে!
আগের লাইফ স্টাইল
আর হ্যাঁ,যতই মেকআপ করুন,অসুস্থতাকে যদি এক্কেবারে টাটা বলতে চান,তাহলে কিন্তু বেশী করে জল আর হেলদি খাবার খেয়ে নিজেকে ‘পথে’ ফিরিয়ে আনতেই হবে।নয়তো হাজার রঙচঙে মেকআপেও আপনাকে ম্যাড়মেড়ে অসুস্থই লাগবে।
তাহলে এবার অসুখ হলেও টেনশন ফ্রি থাকুন।নিশ্চিন্তে মেকআপ করুন।দেখবেন পার্টির রাতে কেউ আপনাকে দেখে বুঝতেই পারবে না যে আপনার কোনো অসুখ হয়েছিল!হাজার হোক,নিজের অসুস্থতার কথা লোককে জাহির করে বেড়ানোর মধ্যে তো আর কোনো বাহাদুরি নেই।কি বলেন?
মন্তব্য করুন