সারা সপ্তাহ জুড়ে কাজ আর কলেজ-অফিসের ফাঁকে প্রেম করার সময় তো হয় না মোটে!বাড়িতে যে গার্লফ্রেন্ডের সাথে সুস্থির হয়ে বসে কথা বলবেন দু’দন্ড—সে গুড়েও বালি!আর বাড়িতে সক্কলের সামনে বসে সারাক্ষণ ধরে ফোনে গদগদ প্রেমের কথা বলা একদম ভালো দেখায় না! তাছাড়া বাবা-মা’ই বা বলবেন কি!তাই আপনি উইকএন্ডে দিব্যি সুন্দর একটা প্ল্যান করলেন প্রেম করার,মনে লাড্ডুও ফোটাতে লাগলেন সেই ভেবে যে,উফফ!ক’দ্দিন পর চুটিয়ে প্রেমটা করবেন—শুধু আপনি আর আপনার ‘সে’।কিন্তু হায় পোড়া কপাল!নিরিবিলিতে বসে কথা বলবেন কি! লোকজনের ক্যালোর-ব্যালোরে শান্তিতে কথাই বলতে পারলেন না!প্রেমের একশ আট,আর সেইসাথে গোটা দিনটাই ফ্রি-তে মাটি হওয়া।না বন্ধু না! সামনেই গোটা শীতকাল,ক্রিস্টমাস ডে সব পড়ে আছে।প্রেমের সেরা মরশুম যাকে বলে।আর আপনি ঘরে বসে আঙুল চুষবেন,এ তো হতে পারে না।আর তাই আপনার জন্য আজ নিয়ে এসেছি কলকাতা শহরের সেরা পাঁচ পাঁচটি প্রেমের জায়গা!
১.প্রিন্সেপ ঘাট
একে গঙ্গা,তায় প্রিন্সেপ ঘাট।আর গঙ্গার ঘাটে বসে প্রেম করার মজা যে না বুঝেছে,তাকে বোঝানো বেকার!ভাবুন তো,ভরা বিকেল গড়িয়ে আস্তে আস্তে সূর্যাস্ত হচ্ছে,চারপাশে পাখির ডাক শুনতে পাচ্ছেন,সামনে গঙ্গা, পড়ন্ত সূর্যের আলোয় চকচক করছে,আর এই বিউটিফুল ফটোজেনিক ফ্রেমে আপনি আর তিনি!একা!চোখে চোখ,হাতে হাত,নিরালায়।যত খুশি কথা বলুন,আর যত খুশি কাছে আসুন।কেউ কিচ্ছুটি বলবে না।তবে হ্যাঁ, জায়গাটা এমনিতেই খুব শুনশান।গাড়ি-ঘোড়ার কিন্তু বড্ড অভাব।আর ফোনের টাওয়ারও ঠিক থাকে না।তাই সাবধানে থাকবেন।আর যত রোমান্সই প্রাণে জাগুক না কেন,সন্ধের পর প্রিন্সেপ ঘাটে কিন্তু খবরদার না!
২.রবীন্দ্র সরোবর
আপনি যদি ফিটনেস ফ্রিক হন,তাহলে আপনার বেস্ট চয়েস হতে পারে রবীন্দ্র সরোবর।কিন্তু আপনি যদি রোমান্স ফ্রিক হন?তাহলেও কিন্তু আপনার জন্য বেস্ট অপশন হতে পারে রবীন্দ্র সরোবর!খাস কলকাতা শহরের বুকে যে এমন টলটলে জলওয়ালা ‘লেক’ এক্সিস্ট করতে পারে,তা আপনি এখানে না এলে বিশ্বাসই করতে পারবেন না।জলের দিকে তাকিয়ে পাখি আর প্রকৃতি দেখতে দেখতে যত ইচ্ছে প্রেম করুন।কেউ ডিস্টার্ব করার নেই।তবে সন্ধে হয়ে গেলে অ্যাভয়েড করাই ভালো।আর হ্যাঁ,প্রেম করতে গিয়ে যদি টাকাপয়সা বেড়িয়ে যায়,তাহলে কিন্তু আমাদের দোষ দেবেন না!
৩.ইকো পার্ক
‘এক শাম,সিরফ হাম দোনো কে নাম’!নাহ,শাম কাটানোর বদলে গোটা একটা দিন আপনি আপনার পার্টনারের সঙ্গে কাটাবেন,এই যদি আপনার প্ল্যান হয় এই উইকএন্ডের,তাহলে কিন্তু ইকো পার্ক যেতেই পারেন।ভাবুন তো দিব্যি নিরিবিলি জায়গা,ভিড়ের ঠেলাঠেলি থেকে অনেক দূরে।কেউ বিরক্ত করবারও নেই।সাথে শীতের মিষ্টি রোদ ফ্রি।গার্লফ্রেন্ডের হাত ধরে হেঁটে বেড়ান,আর সারাদিন গল্প করুন।ইচ্ছে হলে বোটিং-ও করতে পারেন। তবে জায়গাটা রাজারহাট,ফলে বুঝতেই পারছেন,যানবাহনের অভাব!তাই সন্ধের আগেই বেড়িয়ে পড়ার চেষ্টা করুন।বেশী রাত হলে যদি ‘ওলা’ বা ‘উবের’ না পান,তখন কিন্তু গার্লফ্রেন্ডের কাছে বকা খাওয়া থেকে আমরা আপনাকে একদম বাঁচাতে পারব না!
৪.ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল
প্রেম করছেন খাস কলকাতায় বসে,অথচ একবারও ভিক্টোরিয়া যাননি,এ হতেই পারে না!ভাবুন তো,গাছপালা আর অমন একটা রাজকীয় আর্কিটেকচারের কাছে এলে মনটা এমনিতেই রোম্যান্টিক হয়ে যায়।আর সাথে যদি মিষ্টি গার্লফ্রেন্ড থাকে,তাহলে তো কথাই নেই।হেঁটে বেড়ান খানিক,তারপর পছন্দ মতো একটা নিরিবিলি জায়গায় বসে যত রাজ্যের জমানো প্রেম ছিল,সব একদিনে করে ফেলুন।তবে হ্যাঁ,ভিক্টোরিয়া বলেই বলছি,মনে রাখবেন,ওখানে তো আপনি একা প্রেম করতে যাননি,চারপাশে তাকিয়ে দেখুন,অনেক কাচ্চা-বাচ্ছাকেও পাবেন তাদের পরিবার সমেত। তাই বুঝে কাজ করুন।আর বিশ্বাস করুন,গোটা দিনটার শেষে আপনার প্রতি আপনার পার্টনারের ভালোবাসা যদি না উথলে ওঠে,তাহলে না হয় আমাদেরই দোষ দেবেন।
৫.যে কোনো রুফটপ ক্যাফে
হুঁহুঁ বাবা!এতক্ষণ ধরে তো শুধু রাজ্যের পার্কের নামই বলে গেলাম।কিন্তু শুধু পেটে কি আর প্রেম জমে বলুন?তাই এই শীতে যদি জমিয়ে প্রেম করতে চান, আর ‘এক শাম’ যদি সত্যিই আপনাদের দু’জনের নাম করতে চান,তাহলে রুফটপ ক্যাফে কিন্তু বেস্ট অপশন। ‘জোম্যাটো’ খুললে আরামসে পেয়ে যাবেন।মলের ভিড় থেকে হাজার গুণ দূরে একটা টেবিলে, মুখোমুখি টেবিলে বসে জমিয়ে আড্ডা শুরু করুন কফির কাপ হাতে।শুধু দুজনেই!হালকা শীতে গরম কফি—এমনিতেই জমে ক্ষীর হয়ে যাবে। আপনি না হয় আরও কিছু এক্সট্রা মসালা অ্যাড করে দেবেন।আর তারপর দেখবেন,বাড়ি গিয়ে আপনার পার্টনার আপনাকে নেক্সট ডেটের কথা বলে বলে পাগল করে দিচ্ছেন!
কি,এখনও ভাবছেন নাকি কোথায় যাবেন?দেরী না করে এই উইকএন্ডেই প্ল্যান করে ফেলুন আপনার প্রিয় মানুষটির সাথে।আর কাজ থেকে ছুটি নিয়ে তাঁকে সময় দিন।দেখবেন সারাদিন একসাথে কাটানোও হবে,আর নিরিবিলিতে রাজ্যির কথা বলে মাখো মাখো প্রেমটাও করা যাবে।দিনের শেষে দিলও খুশ, আর আপ দোনো ভি খুশ!
মন্তব্য করুন