রোদে পুরে ঘেমে নেয়ে যখন বাইরে ঘুরছেন, তখন যদি ডাবের জল পাওয়া যায়— এক ধাপে শরীরের কষ্ট অনেকটাই কিন্তু কমে যায়! এর কারণ হলো ডাবের জল ন্যাচারাল এনার্জি ড্রিংক| কিন্তু শুধু এইটুকুই নয়! ডাবের জলের কিন্তু আরো অনেক উপকারিতা আছে যা হয়ত আমরা সকলে জানি না| আমাদের শরীরের এমন অনেক রোগ আছে যা ডাবের জলের সাহায্যে আমরা প্রতিরোধ করতে পারি| আজকের লেখা পড়ুন আর জেনে নিন এমন ৫ টি সমস্যার কথা যা ডাবের জল নিয়মিত পান করলে আপনার থেকে শতহস্ত দুরে থাকবে|
১. ব্লাড প্রেশার কন্ট্রোল করে
১০০ জন মানুষের মধ্যে সাধারণত ৪০ জনই কিন্তু লো ব্লাড প্রেশারের বা হাই ব্লাড প্রেশারের শিকার হন| অনিয়মিত খাওয়াদাওয়া, অতিরিক্ত পরিশ্রম, স্ট্রেস, অনিদ্রা বা জিনগত কারণে প্রেশার হাই বা লো হয়ে যায়| সাধারণত বয়স বাড়ার সাথে সাথেই ব্লাড প্রেশার হাই হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়| ডাবের জল কিন্তু আপনার প্রেশার নর্মাল রাখতে সাহায্য করে| এতে বর্তমান পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম আপনার প্রেশারকে কন্ট্রোলে রাখে| বিশেষ করে প্রেশার বেড়ে গেলে তাকে কমাতে সাহায্য করে| তাই যারা হাই বা লো ব্লাড প্রেশারের রোগী তাঁদের কিন্তু নিয়মিত ডাবের জল খাওয়া অত্যন্ত জরুরী|
২. মাথা ব্যথা
মাথা ব্যথা কিন্তু আজকাল সকলকেই অল্প বিস্তর ভোগায়| কেউ কেউ আবার মাইগ্রেন নামক রোগেরও শিকার হন| কোনো কারণে একটু চিন্তা বা স্ট্রেস বা কাজের চাপ বেড়ে গেলেই এই মাথা ব্যথা নামক অতিথির আগমন একেবারে পাকা| এই মাথা ব্যথা, বিশেষ করে মাইগ্রেনের ব্যথা কিন্তু ডিহাইড্রেশনের জন্যও হয়ে থাকে|
যদি আপনি এই মাথা ব্যথা নামক বস্তুটি থেকে দুরে থাকতে চান তাহলে ডাবের জল কিন্তু আপনার রক্ষাকর্তা| যে ম্যাগনেশিয়ামের অভাবের জন্য ঘন ঘন মাইগ্রেন অ্যাটাক হয় তা ডাবের জলে প্রচুর পরিমাণে থাকে। আবার ডাবের জল শরীরকে রিহাইড্রেট করতেও সাহায্য করে| তাই ডাবের জল কিন্তু আপনাকে নিয়মিত খেতেই হবে মাথা ব্যথা দূর করতে|
৩. বডি রিহাইড্রেটর
আপনি রাস্তায় বেরিয়েই দেখছেন আপনার মাথা ঘুরছে, বমি পাচ্ছে বা আপনার সারা গা ঘেমে গিয়েছে আর গলা শুকিয়ে গিয়েছে! এই গুলি যদি মাঝে মাঝেই আপনার সাথে ঘটে থাকে তাহলে বুঝবেন আপনার শরীর ডিহাইড্রেশনের শিকার| এই ধরনের সমস্যা যাতে শরীরে বাসা না বাঁধতে পারে তার জন্য কিন্তু আপনাকে ডাবের জল পান করতে হবে অন্তত দিনে একবার করে নিয়মিত| কারণ এতে বর্তমান ইলেক্ট্রোলাইট উপাদান আমাদের শরীরকে রিহাইড্রেট করতে সাহায্য করে। শরীরকে ঠান্ডা রাখে| এই একই কারণে ডায়েরিয়া হলে কিন্তু ডাবের জল পান করা উচিত|
৪. হার্ট টনিক
বুড়ো বয়সে হার্টের রোগের শিকার হয়ে যদি কড়া কড়া ওষুধ না খেতে চান, তাহলে কিন্তু এখন থেকেই নিয়ম করে ডাবের জল খাওয়া শুরু করুন| কারণ এটি ন্যাচারাল হার্ট টনিক| প্রথমত এটি একেবারে ফ্যাট ফ্রি, দ্বিতীয়ত এতে বর্তমান উপাদান খারাপ কোলেস্টেরলকে কম করে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে, যা হার্টের রোগ থেকে আপনাকে রক্ষা করে|
৫. ত্বকের রক্ষাকর্তা
আপনি যদি বয়সের আগেই বুড়িয়ে যেতে না চান তাহলে কিন্তু এক গ্লাস করে ডাবের জল আপনার নিয়মিত সঙ্গী হতেই হবে! এটি আমাদের ত্বকের রুক্ষতাকে দূর করে ত্বককে ভেতর থেকে রেজুভিনেট করে| এছাড়া মুখে যদি কোনো দাগ-ছোপ বা ইনফেকশন বা অ্যালার্জি থাকে তারও কিন্তু রাম বাণ এই ডাবের জল| ডাবের জলকে আপনার সঙ্গী করলে কিন্তু আপনার ত্বকে বয়সের ছাপ কখনই পড়বে না|
তাহলে দেখছেন তো, এক গ্লাস ডাবের জলে কত কিছু লুকিয়ে ছিল একেবারে ম্যাজিক বক্সের মত? সুস্থ থাকার এমন ম্যাজিক জানার পর আশা করছি আপনি এর প্রয়োগ নিশ্চয়ই করবেন! তাই নিজে এবং পরিবারের সকলকে ডাবের জলের উপকারিতা সম্পর্কে অবগত করুন এবং একে আপনার ডায়েট চার্টের সঙ্গী করে সুস্থ থাকুন|
মন্তব্য করুন