আবার নীল তিমির শিকার হল কলকাতার ১৫ বছরের একটি ছেলে। আপনার বাচ্চা নিরাপদ তো! ভেবেছেন কী যদি আপনি কখনো আপনার ছেলে বা মেয়ের হাতে F 57 লেখাটা দেখেন! ভাবুন তো একবার আপনার বারো-তেরো বছরের ছেলে বা মেয়েটা যদি হঠাৎ এই পৃথিবী থেকে চলে যায়! কী ভেবে পাচ্ছেন না তো? তাহলে আজই আপনার বাচ্ছা ব্লু-হোয়েল খেলছে কিনা সে বিষয়ে দেখুন। গেম খেলতে আমরা কে না ভালোবাসি! কিন্তু, এর আগে বোধহয় আমরা এমন গেমের নাম শুনিনি যা মৃত্যুর কারণ হতে পারে। কিন্তু আজ এটাই সত্যি।
ভার্চুয়াল জগৎ তৈরি করে নীল তিমি
আসলে এই খেলায় এখনও যারা মারা গেছে তারা সবাই ১৭ বছরের নিচে। কতটুকুই বা তাদের বিচারবোধ। তাই তাদের টার্গেট করা হয়। এই ৫০ দিনে গেমারকে বোঝানো হয় পৃথিবীর নেতিবাচক দিক নিয়ে। জীবনে বেঁচে যে কোনো লাভ নেই এটা তাদের মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। আর বলা হয় মুক্তি পেতে শেষ হয়ে যাও। ১৩১ জন মতো এখনও মারা গেছে। সংখ্যাটা তার বেশীও হতে পারে। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, বর্তমানে ভারতেও ছড়িয়ে গেছে এই খেলা। আসলে একটা ভার্চুয়াল জগতকে সামনে আনা হয় বাস্তব জগতের বিকল্প হিসাবে। সেই জগতেই বাচ্চাদের পাঠাতে চায় কিউরেটর। বাস্তবের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন করে দেয় তাদের, শেষে মৃত্যু। এমনই কয়েকটা মৃত্যুর কথা শুনুন।
মুম্বাই, দিল্লী, কলকাতা সহ গোটা ভারত নীল তিমির শিকার
মুম্বাইয়ের আন্ধেরি ইস্টে ২৯ জুলাই তারিখে ১৪ বছরের এক ছেলে সাততলা থেকে ঝাঁপ দেয়। সে এই কাজ করার আগে নিয়ম অনুযায়ী ছাদের কিনারায় বসে ছবি তোলে, হয়তো কিউরেটরকে পাঠানোর জন্য। এটাই হয়ত ভারতে প্রথম মৃত্যু। দিল্লীর অশোক বিহার অঞ্চলে ১৬ বছরের এক ছেলে চারতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে মারা যায়। দিল্লীতেই ১২ আগস্ট ১৯ বছরের এক ছেলে, সে আবার মণিপুরের প্রাক্তন কোন মন্ত্রীর ছেলে, রেস্টুরেন্টের ছাদ থেকে ঝাঁপ দেয়। তার হাতেও যথারীতি ক্ষত চিহ্ন ছিল। মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে ১৪ বছরের এক ছেলে ১০ আগস্ট তার স্কুলের চারতলা থেকে ঝাঁপ দেয়। ক্লাস সেভেনে পড়ে সে। তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে ও তার থেকে বেশ কিছু তথ্য জানা সম্ভব হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে নীল তিমি
আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে ১২ আগস্ট পশ্চিম মেদিনীপুরের অঙ্কন দে গলায় তোয়ালে ও মুখে প্লাস্টিক দিয়ে আত্মহত্যা করে। যদিও এটা ব্লু-হোয়েলের দরুন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তবুও যদি তাই হয় তাহলে এটাই পশ্চিমবঙ্গে প্রথম মৃত্যু হবে। সে তার খাতায় একটা কবিতা লিখেছিল, যেটা কার কবিতা জানা যায় না ও সেটা সে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের দেখিয়েছিল। কবিতাটা ঘৃনা ও রাগে ভর্তি যা থেকে অঙ্কনের মানসিক অবসাদের কথা বোঝা যায়।
কিছুদিন আগেই পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতায় এক একাদশ শ্রেনীর ছাত্র, বয়স ১৭ এই খেলা খেলতে খেলতে ধরা পড়ে।, নাম রৌনক সিংহ। তার হাতে F57 লেখা দেখা গেছে। রৌনকের বাবা, দিদি এরা স্বীকার করেছেন যে রৌনক অবসাদে ভুগছিল।
দুনিয়াময় নীল তিমি
একটু অন্যরকমের ঘটনা দেখা গেছে কেরালায় ১৯ মে তে। কেরালার কুমার ডিস্ট্রিক্টে ২২ বছরের এক যুবক যে গ্র্যাজুয়েট সে এই কাজ করেছে। মানে এতদিন যে ধরা হত যে এটা শুধু টিন-এজারদেরই প্রভাবিত করে তা নয়, যুবকদেরও করছে। যে রাশিয়ায় এর জন্ম সেখানে নভেম্বর ২০১৫ থেকে এপ্রিল ২০১৬ র মধ্যে ১৩০ জন মারা যায় ও তাদের মধ্যে ৮০ জন ধরা হয় এই ব্লু-হোয়েল সূত্রে মারা যায়। ভাবুন খালি! এই মৃত্যুগুলো শুধু মৃত্যু নয় খালি, অনেক বড় সমস্যার বহিঃপ্রকাশ।
আপনি নিশ্চই চান না ওপরে যাদের নাম আছে তার সঙ্গে আপনার বাচ্ছার নামটাও জুড়ে যাক। একটু সতর্ক থাকুন। সবশেষে একটা প্রশ্ন সামনে রাখি। আচ্ছা এই যে বাচ্ছারা হাত কাটছে বা ঠোঁট কাটছে এগুলো বাবা মায়েরা দেখেন না? দেখবেন কী করে! দুজনেই তো চাকরী তে যান ও সন্তানকে রেখে যান আয়ার কাছে। আজকের দিনে দু’জনকেই অর্থ উপার্জন করতে হয়, তাতে কোনো ক্ষতি নেই। কিন্তু তার জন্য পরিবারে বিচ্ছিন্নতা আসবে কেন? বাবা মায়ের থেকে এই বিচ্ছিন্নতাই কী ঠেলে দিচ্ছে না এই মারণ খেলার দিকে! যাদের মৃত্যুর কথা বললাম তারা সবাই অবসাদে ভুগছিল। এইটুকু বয়সে অবসাদ আসবে কেন! আসলে সময় দেওয়ার বিকল্প কিছু নেই। টিনএজের সময়ে বাচ্ছাদের খুব যত্ন নিতে হয়। তাই বাবা মায়েদের বলবো একটু সময় দিন আপনার বাচ্ছাকে। ঘুরতে যান, খেতে যান, মজা করুন। একটু পাশে থাকার অঙ্গীকারই বোধহয় এই মারণ খেলার সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক হবে।
https://dusbus.com/bn/oral-sex-ki-apnar-jibone-deke-ante-pare-cancer-keno/
মন্তব্য করুন