স্কিন সুন্দর রাখতে কে না চায়! স্কিন টোন যেমনই থাকুক সবাই চায় স্কিনে দাগটা না থাকুক, ব্রণটা না উঠুক, একটু কোমল হোক। এরকম স্কিন তো শুধু চাইলেই হবে না, নিতে হবে স্কিনের প্রোপার যত্নটাও।
নায়িকাদের মতন গ্ল্যামারাস, লাবণ্যময় ও ঝকঝকে স্কিন পেতে স্কিনের যত্নে নেবার রুটিনটাও হওয়া চাই তাদের মতই। অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করেছেন তার রূপের গোপন রহস্য মর্নিং স্কিন কেয়ার টিপস স্টেপ বাই স্টেপ। চলুন জেনে নেই কি বললেন তিনি –
স্টেপ ওয়ানঃ ফোমিং ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন
ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুতে ব্যবহার করুন ফোমিং ফেসওয়াশ। সাধারণ ফেসওয়াশের তুলনায় ফোমিং ফেসওয়াশ বেশি কার্যকর। ব্রণ রোধ করতে, স্কিনের গভীর থেকে ময়লা তুলে আনতে, স্কিনের ডালনেস কমিয়ে উজ্জ্বলতা বাড়াতে ফোমিং ফেসওয়াশের জুড়ি নেই। খুব সামান্য পরিমান ফোমিং ফেসওয়াশ হাতে নিয়ে ফেসে আলতোভাবে ম্যাসাজ করুন। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কখনোই খুব গরম বা খুব ঠান্ডা পানিতে মুখ ধোবেন না।
স্টেপ টুঃ আইস ফেস বাথ
ফেস পরিষ্কার করার পর কিছুক্ষন ফেসে বরফ ঘষুন। বরফ স্কিন ঠিক রাখতে খুবই উপকারী। চোখ-মুখের ফোলা ভাব, ডার্ক সার্কেল কমিয়ে আনতে বরফ কাজ করে। বরফ ঘষার ফলে ফেসের স্কিনে ব্লাড সার্কুলেশন বেড়ে যায় যা ত্বকের অনেক রকম সমস্যা দূর করে।
বরফ স্কিনের অয়েলি ভাব এবং ড্রাইনেস কমায়। এছাড়াও পোরস টাইট রাখে, ঠোঁটকে নরম রাখে, স্কিন এক্সোফোলিয়েট করে এবং সূর্যের ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্নি থেকে স্কিনকে রক্ষা করে। স্কিনের বলিরেখা, রোদে পোড়া ভাব কমাতে এবং ব্রণের হাত থেকে স্কিনকে মুক্তি দিতেও বরফের জুড়ি নেই।
স্টেপ থ্রিঃ এসেনশিয়াল অয়েল ও সিরাম
স্কিনের পরিচর্যায় এসেনশিয়াল অয়েল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্কিনের ব্রণ, ক্ষত, রোদে পোড়া ভাব, বলিরেখা সবই দূর করা সম্ভব অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল ও অ্যান্টি ফাঙ্গাল এসেনশিয়াল অয়েলের প্রোপার ইউজের মাধ্যমে। স্কিনটোনের ব্যালান্স, অ্যান্টি এজিং, একজিমার দাগ সারাতে খুব ভালো কাজ করে এসেনশিয়াল অয়েল। এর সাথে সিরামের ব্যবহার স্কিনের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে খুব ভালো কাজ করে। স্কিনের বয়স কমিয়ে দেয় এবং ঝকঝকে ও মোলায়েম ভাব নিয়ে আসে। এ কারনেই তো নুসরাত ফারিয়া রোজ সকালের স্কিন রুটিনে এসেনশিয়াল অয়েল ও সিরাম একসাথে মিশিয়ে ইউজ করেন।
স্টেপ ফোরঃ ডে ক্রিম
এরপর স্কিনে লাগিয়ে নিন ময়েশ্চারাইজার জাতীয় ভালো মানের একটি ডে ক্রিম, অবশ্যই যেটা আপনার স্কিনে স্যুট করে। স্কিনের ধরণ অনুযায়ী ডে ক্রিম সিলেক্ট করুন। কেননা ডে ক্রিম আপনার স্কিনের সাথে একদম মিশে গিয়ে স্কিনকে রক্ষা করবে বাইরের ধুলোবালি থেকে। তাই এমন একটি ডে ক্রিম সিলেক্ট করুন যেটি সানস্ক্রিন সমৃদ্ধ, উচ্চ এসপিএফ (SPF), অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ময়েশ্চারাইজার যুক্ত। যেমনটি নুসরাত ফারিয়া সিলেক্ট করেছেন নিজের জন্য।
স্টেপ ফাইভঃ আই সিরাম
স্কিনের যত্নের পাশাপাশি চোখের জন্য সামান্য বাড়তি কিছু যত্ন নিতে হয়। সে কাজটাই করে আই সিরাম। একটি ভালো আই সিরাম চোখের আশেপাশের ডার্ক সার্কেল ও ফাইন লাইনস কমিয়ে আনে, চোখের ফোলা ভাবটাও কমায়। এছাড়া চোখের আশেপাশের বলিরেখাগুলো দূর করে। সেই সাথে চোখের আশেপাশের স্কিনের কালচে ভাব দূর করে ব্রাইটনেস আনতে এবং চোখের উপরের ভাঁজ কমাতেও সহায়তা করে। তাই স্কিন কেয়ার রুটিনে আই সিরাম রাখাটা অবশ্যই জরুরি।
স্টেপ সিক্সঃ ফেস ম্যাসাজ
ম্যাসাজ স্কিনের জন্য খুবই উপকারী। স্কিনের ডার্ক স্পটস, রিঙ্কেলেস, পিগমেন্টেশনস, ফাইন লাইনস কমাতে ফেস ম্যাসাজ কাজ করে। ফেস ম্যাসাজ ফলে স্কিন সুন্দর ও মসৃণ হয়, ফেসের পেশীগুলো কিছু সময়ের জন্য রিল্যাক্স হতে পারে। ফলে স্কিন থেকে বার্ধ্যকের ভাব দূর হয়, স্কিন ঝুলে যাবার আশংকা হ্রাস পায় ও স্কিন হয়ে ওঠে সতেজ। ম্যাসাজের ফলে স্কিনে কোলাজেন তৈরি হয় যা স্কিনে ব্রণের আগমন কমিয়ে দেয়। ঘরে বসে সহজেই ফেস ম্যাসাজের জন্য ফেসিয়াল ম্যাসাজ মেশিন কিনে নিতে পারেন। নুসরাত ফারিয়া প্রতি সপ্তাহে একবার ফেস ম্যাসাজ করেন।
স্টেপ সেভেনঃ আইব্রো অয়েল
আইব্রো ঘন ও সুন্দর করতে নিয়মিত আইব্রো অয়েল ব্যবহারের বিকল্প নেই। আইব্রো অয়েল ভ্রু এর রোম উঠে যাওয়া রোধ করে এবং ভ্রু এর গোড়ার স্কিন আর্দ্র রেখে আইব্রোকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে সাহায্য করে। এটি রোমের ফলিকলগুলোকে মজবুত ও শক্ত করে, কালো ও উজ্জ্বল দেখায়।
স্টেপ এইটঃ সানস্ক্রিন
সানবার্ন ও ট্যানিং থেকে স্কিনকে বাঁচাতে সানস্ক্রিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গ্রীষ্ম-বর্ষা-শীত সবসময়ই সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। এছাড়াও এজিং, ব্লেনিশেজ, হাইপারপিগমেন্টেশনের হাত থেকে স্কিনকে সুরক্ষিত রাখতে সানস্ক্রিন স্কিনের রক্ষাকবচ হিসেবে ভূমিকা রাখে। এটি সূর্যের ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্নি ও স্কিনের মাঝে দেয়াল হয়ে থাকে। তাই স্কিনের সুরক্ষায় সানস্ক্রিন ব্যবহার জরুরি। ফেসের পাশাপাশি গলায় ও ঘাড়েও সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে বলেন নুসরাত ফারিয়া।
স্টেপ নাইনঃ লিপ ময়েশ্চারাইজার
মসৃণ গোলাপী সুন্দর ঠোঁট পেতে সবশেষে ঠোঁটে লাগিয়ে নিন পছন্দসই যে কোনো একটি লিপ ময়েশ্চারাইজার। এটি ঠোঁটের সানট্যান দূর করে আর্দ্রতা বজায় রাখে। কালচে দাগ বা মরা চামড়া দূর করে ঠোঁটকে আরো সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তোলে।
ব্যাস! এই হলো নুসরাত ফারিয়ার মর্নিং স্কিন কেয়ার রুটিন। আপনারাও ফলো করুন আর পেয়ে যান নুসরাত ফারিয়ার মতন গ্ল্যামারাস সুন্দর স্কিন।
মন্তব্য করুন