করোনার জন্য এখন আমাদের বাইরে গেলেই মাস্ক পরতে হচ্ছে। কিন্তু সব সময়ে তো আমরা মাস্ক পরে থাকি না। আমরা যখন অফিসে থাকি বা রেস্টুরেন্টে খাই তখন মাস্ক খুলতেই হয়। তাই লিপস্টিক তো পরতেই হবে। এখন সমস্যা হল লিপস্টিক হয় মাস্কে ঘষা লেগে ঘেঁটে যায়, আর না হলে ঘেমে গিয়ে গলতে শুরু করে। তবে বিশেষ কিছু ভাল লিপস্টিক আছে যা ব্যবহার করলে লিপস্টিক আর মাস্কের বন্ধুত্ব হতে বাধ্য।
১. স্টিলা স্টে অল ডে লিকুইড লিপস্টিক – প্যাটিনা
এই লিপস্টিকের সবচেয়ে ভাল দিক হল এটি খুব হাল্কা। তাই এই গরমেও এটি অনায়াসে ব্যবহার করতে পারেন। সারাদিন পরে থাকার পরেও এবং এর ওপর মাস্ক পরা সত্ত্বেও এটি ঘষা লেগে উঠে যাবে না। এর মধ্যে আছে ভিটামিন ই আর অ্যাভোকাডো অয়েল। এর ফলে আপনার ঠোঁট নরম আর হাইড্রেটেড থাকে। ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়ার কোনও চিন্তা থাকে না।
ভাল দিক
- এটি আপনি ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারেন।
- এটি ফুল কভারেজ দেবে।
- সারাদিন ব্যবহারের পরেও কালার ফেড হবে না।
- ঠোঁটের ময়েশ্চার ধরে রাখবে।
খেয়াল রাখবেন
এটি একটু দামি।
২. রিমেল প্রোভোকালিপ্স ১৬ আওয়ার কিসপ্রুফ লিপ কালার- কিস মি ইউ ফুল
এই লিপস্টিক এখন মার্কেটে খুব ইন। এর সবচেয়ে ভাল দিক হল কালার পে-অফ। কালার একদম ঠিক থাকে, ফেড হয় না। এর টু স্টেপ লক-ইন প্রসেস এটি ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত সতেজ রাখে। এটি ট্রান্সফার প্রুফ আর ঠোঁটে সমান ভাবে মিশে যায়। হাল্কা বলে ঠোঁটের ওপরে ভারী কিছুর প্রলেপ আছে বলে মনে হয় না।
ভাল দিক
- এটি ফুড-প্রুফ
- এটি লাইট ওয়েট
- খুব ভাল ঠোঁট ময়েশ্চার করে।
- অয়েল বেসড মেকআপ রিমুভার দিয়ে সহজেই পরিষ্কার করা যায়।
- এটি বাজেট ফ্রেন্ডলি মানে খুব দামি নয়।
খেয়াল রাখবেন
এর মধ্যে প্যারাবিন আছে।
৩. মাইনেনা ডিপ রেড ম্যেটেল লিপস্টিক –অ্যালে
এটি লং-লাস্টিং ওয়াটার প্রুফ লিপস্টিক। এক কোটেই এটি নন-স্টিকি ভেলভেটের মতো টেক্সচার দেয়। এটি ঠোঁটের ময়েশ্চার ধরে রাখবে আর ঠোঁট ড্রাই হতে দেবে না। এতে আছে ভিটামিন ই, নন টক্সিক মিনারেলস আর সুন্দর ভ্যানিলা সেন্ট। এটি তাই আরও ভাল লাগে ব্যবহার করলে।
ভাল দিক
- ফুল কভারেজ।
- নন ড্রাইং।
- জি.এম.পি সার্টিফায়েড।
- এটি ভেগান।
খেয়াল রাখবেন
আপনার ঠোঁট যদি ফাটা হয় তাহলে কিন্তু এই লিপস্টিক ব্যবহার করলে খুব একটা ভাল লাগবে না।
৪. লরিয়েল প্যারিস ইনফ্যালিবল লে রাগ লিপস্টিক – র্যাভিসিং রেড
একটা লিপস্টিক যা দশ ঘণ্টা থাকবে আর দেবে স্টানিং কালার- লরিয়েল এটাই আপনাকে আশ্বাস দেয়। এতে আছে ভিটামিন ই। আপনার ঠোঁট যদি ফাটা হয় বা ড্রাই থাকে, তাও এই লিপস্টিক ব্যবহার করলে সঙ্গে সঙ্গেই তা কভার হয়ে যাবে। আর মাস্কের ভিতর মুখ থাকলেও আর মুখ ঘেমে গেলেও এতে লিপস্টিকের কোনও ক্ষতি হবে না।
ভাল দিক
- এর আছে একটি সুন্দর ক্রিমি টেক্সচার।
- এটি ইন্টেন্স কালার পে-অফ বজায় রাখে।
- দশ ঘণ্টা পর্যন্ত কোনও চিন্তা নেই।
- সহজে রিমুভ করা যায়।
খেয়াল রাখবেন
এটি মনে হয় ফুড-প্রুফ নয়।
৫. আর.কে বাই কিস ম্যাটেল লিপস্টিক – স্পাইসি ব্রাউন
লাক্সারিয়াস শভমওাট ফিনিশ আর তার সঙ্গে হাইড্রেটেড সফট লিপ- একসঙ্গে পাবেন এই লিপস্টিকের মধ্যে। এটি আপনি ড্রাই লিপের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করতে পারবেন। ড্রাই লিপ হলে লিপস্টিকের ওপর লিপজেল লাগিয়ে নিন। সারাদিন মানে প্রায় আট থেকে দশ ঘণ্টার জন্য আপনি নিশ্চিন্ত।
ভালো দিক
- এটি নানারকম শেডে পাওয়া যায়।
- এটি লং লাস্টিং আর নন-ড্রাই।
- স্মুদ অ্যাপ্লিকেশন।
মনে রাখবেন
এতে প্যারাবিন আছে।
৬. লিপস্টেইনস গোল্ড অল ইন ওয়ান লিপস্টিক – ব্লসম
এই স্মাজ-প্রুফ লঙ লাস্টিং ম্যাট লিপস্টিক আপনার ঠোট উজ্জ্বল রাখবে। এতে আছে ওয়াটার প্রুফ আর ময়েশ্চারাইজিং ফর্মুলা। সঙ্গে আছে ক্যাস্টর সিড অয়েল আর ভিটামিন ই যা আপনার ঠোঁট ভাল রাখে, সফট রাখে। এটি ঠোঁটের ড্রাইনেস বা টাইটনেস আসতে দেয় না। এটি একবার ব্যবহার করলেই অনেক সময় ধরে ঠিক থাকে, টাচ-আপের দরকার হয় না।
ভালো দিক
- ইনটেন্স ময়েশ্চারাইজিং।
- সহজে লাগিয়ে নেওয়া যায় আর রিমুভ করা যায়।
খেয়াল রাখবেন
এতে অ্যালকোহল থাকে।
৭. মেবিলিন সুপারস্টে ২৪ লিকুইড লিপস্টিক – মোর অ্যানড মোর মোচা
মাইক্রোফ্লেক্স পদ্ধতিতে তৈরি এই লিপস্টিক একটি টু-স্টেপ লঙ লাস্টিং লিপস্টিক। এখানে একসঙ্গে লিপবাম আর লিকুইড কালার পাওয়া যায়। সবচেয়ে ভাল দিক হল, অনেক ঘণ্টা পরেও এটি উঠে যায় না। জল লাগলেই এটি থেকে যায়। সুতরাং মাস্ক পরে ঘেমে গেলে লিপস্টিক নষ্ট হবে সেই ভয় নেই। সঙ্গে সারাদিন দেয় একটি গ্লসি ভাব। এছাড়াও আপনার ঠোঁটের ময়েশ্চার ধরে রাখে।
ভালো দিক
- এটি খুব স্মুদ, হাল্কা।
- সারাদিন হাইড্রেশন থাকে।
- এটি নন-ড্রাইং, নন-স্টিকি।
খেয়াল রাখবেন
এটি ডিপ কোট করে ব্যবহার করতে গেলে কিন্তু স্টিকি হতে পারে।
৮. মেলো লঙ লাস্টিং ম্যাটেল লিপস্টিক – পশ
যদি আপনি একটা মাত্র কিছু ব্যবহার করে পার্টি-রেডি হতে চান তাহলে এটি ব্যবহার করুন। রিচ, লঙ লাস্টিং পদ্ধতিতে তৈরি এই লিপস্টিক স্মাজ-প্রুফ আর ফুড-প্রুফ। এটির একটি ক্রিমি, ভেলভেটের মতো টেক্সচার আছে। এটি সারাদিন আপনার ঠোঁটের ময়েশ্চার ধরে রাখে।
ভালো দিক
- এতে ভিটামিন ই আছে।
- এটি ভেগান।
- খুব একটা টাচ-আপ লাগে না।
- প্যারাবিন আর কেমিক্যাল ফ্রি।
খেয়াল রাখবেন
খুব ফাটা ঠোঁটে ব্যবহার করবেন না।
৯. কিউ.আই.এন – ও.কে.সি শিমার লিকুইড লিপস্টিক গ্লস – লাভার
এই লিপস্টিক ঠোঁটের ওপর একটা গ্লিটারিং এফেক্ট রাখে। তার সঙ্গে এটি ওয়াটার প্রুফও। এটি অনেক ক্ষণ ঠোঁটের ওপরে থাকে আর স্মাজ-প্রুফ। মোটামুটি ১৬ ঘণ্টা মতো কোনও পরিশ্রম ছাড়াই, টাচ-আপ ছাড়াই আপনি একটি স্মুদ লিপ পাবেন।
ভালো দিক
- ক্রিমি ম্যাট টেক্সচার।
- নন-ইরিটেটিং।
- রিমুভ করা যায় সহজে।
- মাইল্ড ফ্রেগন্যান্স।
খেয়াল রাখবেন
ফুড প্রুফ নাও হতে পারে।
১০. মার্ক জ্যাকবস লে মার্ক লিপ ক্রিম – কিস কিস ব্যাং ব্যাং
এই লিপস্টিক আপনার পাউট সেলফি রাখবে সবার ওপরে। গরম হোক কি শীত, যে কোনও অনুষ্ঠানেও এটি সমানভাবে চলে যায়। এর আছে স্টানিং কালার। এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আলট্রা ক্রিমি ফর্মুলা ঠোঁটের হাইড্রেটিং বজায় রাখে। এতে আছে সিবেরি, পেপটাইপ, মেরান্টি, কোকোয়া বাটার- এই সব উপাদান মিলে আপনার ঠোঁট থাকবে হাইড্রেটেড।
ভালো দিক
- দশ ঘণ্টা আপনার সঙ্গে থাকবে।
- ম্যাট ফিনিশ।
- ময়েশ্চারাইজার বেনিফিট।
খেয়াল রাখবেন
সামান্য দামি।
১১. ডব্লিউ সেভেন স্কিনি লিপিং ম্যাট লিকুইড লিপস্টিক ড্যানি বয়
স্মাজিং ফ্রি, ফ্যাডিং ফ্রি একটি অলরাউন্ডার লিপস্টিক। তাই মাস্ক পরলেও কোনও অসুবিধা নেই। এর লঙ লাস্টিং ক্রিমি ফর্মুলা ঠোঁট স্মুদ রাখে। একবার ব্যবহার করলেই হবে, টাচ-আপ খুব একটা লাগে না। এটি খুবই হাল্কা।
ভালো দিক
- ভেগান।
- নন-ইরিটেটিং।
- সব স্কিনের জন্য চলবে।
খেয়াল রাখবেন
খুব একটা বেশি শেডে পাওয়া যায় না।
এই বেস্ট ১১টি লিপস্টিক ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করুন। মাস্কের সঙ্গে লিপস্টিকের শত্রুতা এবার বন্ধ হল বলে।
মন্তব্য করুন