শীত কিংবা গ্রীষ্ম- মরশুম যা-ই হোক না কেন সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মির হাত থেকে আপনার সতর্ক থাকা দরকার। একটু একটু করে গরম পড়তে শুরু করে, তবে এখনই সূর্যের যা তেজ তার জেরে ত্বকে ট্যান পড়াটা খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়।
বিশেষত টিনএজারদের এই সমস্যাটায় প্রায়শই ভুগতে হয়। তবে আর চিন্তা নেই। আজ আপনাদের বলব ঘরোয়া উপায় ট্যান দূর করার কিছু সহজ উপায়।
১. পেঁপে-মধু ফেস মাস্কঃ
মুখের জন্য ট্যান রিমুভার হিসাবে অন্যতম কার্যকরী যে উপদান তা হল পেঁপে এবং মধুর মিশ্রণ। পেঁপেতে উপস্থিত এনজাইমগুলি ত্বকের এক্সফোলিয়েশনে সাহায্য করে, পাশাপাশি মৃত ত্বকের কোষ অপসারণ করতে এবং আপনার স্কিনটোনকে হালকা করার জন্য দুর্দান্ত। মধু ত্বককে ময়শ্চারাইজ করতে এবং নরম রাখতে সহায়তা করে।
কীভাবে ব্যবহার করবেনঃ
একটি বাটিতে খানিকটা পেঁপে নিন এবং পেঁপেটাকে একটু ম্যাশ করে নিয়ে তার মধ্যে এক টেবিল চামট মধু মেশান। মিশ্রণটি সরাসরি আপনার ত্বকে লাগান এবং ৩০ মিনিট মত রেখে দিয়ে ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
২. দই এবং কমলালেবুর মাস্কঃ
ট্যান দূর করার জন্য কমলালেবু এবং দইয়ের সংমিশ্রণ ত্বকের ট্যান তুলতে বিশেষভাবে কার্যকরী। কমলালেবুতে উপস্থিত ভিটামিন সি ত্বকের দাগ দূর করতে, আপনার ত্বকের টানটানভাব বজায় রাখতে এবং অ্যান্টি-এজিং হিসাবে কাজ করে। পাশাপাশি দই একটি চমৎকার ব্লিচিং এজেন্ট, প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার এবং এটি ত্বককে ঠান্ডা করতে সাহায্য করে।
কীভাবে ব্যবহার করবেনঃ
এক কাঁচের বাটিতে এক চামচ দই নিয়ে তাতে স্বল্প পরিমাণে কমলা লেবুর রস মিশিয়ে আপনার মুখে লাগান। ৩০ মিনিটের পরে এটি জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৩. টমেটো, অ্যালোভেরা এবং মুসুর ডালের মাস্কঃ
টমেটো, অ্যালোভেরা এবং মুসুর ডাল- হল একটি প্রাকৃতিক সান ট্যান রিমুভার, যা একাধারে আপনার ত্বরকে ডিপ ক্লিনডিং করে, ত্বককে উজ্জ্বল দেখাতেও সাহায্য করে।
কীভাবে ব্যবহার করবেনঃ
১টেবিল চামচ মসুর ডাল ২০-৩০ মিনিট জলে ভিজিয়ে নিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিন। ১ টেবিল চামচ তাজা টমেটো পিউরি এবং অ্যালোভেরা জেল দিয়ে ভালোভাবে মেশান। এরপর আপনার মুখে অ্যাপ্লাই করুন, মাস্কটা মুখে ২০-৩০ মিনিটের জন্য রেখে দিন, এরপর ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন।
৪. লেবু এবং মধুর ফেস মাস্কঃ
লেবু ত্বকের সমস্যার যাবতীয় চিকিৎসা করার কাজে বিশেষভাবে কাজ করে। আর সেই সঙ্গে যদি মিশিয়ে দেওয়া যায় একটু মধু, তাহলে তো আর কথাই নেই। যুগ যুগ ধরে লেবু এবং মধুর মিশ্রণ ত্বকের ট্যান দূর করার কাজে ব্যবহার করা হয়ে আসছে। এই ফেস মাস্কের কোনও বাড়তি কসরত করার প্রয়োজন নেই। কেবল ফেস প্যাকটি তৈরি করে মুখে অ্যাপ্লাই করে নেওয়ার পরই দেখবেন আপনার ত্বকের ওপর একটা ঝলমলে এফেক্ট দেবে।
কীভাবে ব্যবহার করবেনঃ
একটি বাটিতে তাজা লেবুর রস নিন এবং তাতে মধু যোগ করুন এবং মিশ্রণটি ভালো করে মেশান এবং এই মাস্কটি আপনার মুখে লাগান। এটি প্রায় আধ ঘন্টা অপেক্ষা করুন এবং তারপর মুখ ধুয়ে ফেলুন।
৫. নারকেল দুধঃ
নারকেল দুধ ত্বকের জন্য অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং হাইড্রেটিং। এটি আপনার ত্বকের হারানো আর্দ্রতা পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করে। এতে উপস্থিত ভিটামিন সি এবং মৃদু অ্যাসিড উপাদানগুলি ঘরে বসে ট্যান তুলে ফেলতে সহায়তা করে।
কীভাবে ব্যবহার করবেনঃ
একটি তুলার বলকে করে তাজা এবং জৈব নারকেলের দুধে ভিজিয়ে রাখুন বেশ কিছুক্ষণ এরপর এটি আপনারা সারা মুখে মেখে নিন। যতক্ষণ না এটি ত্বকে শুষে যাচ্ছে বা পুরো শুকিয়ে যায় ততক্ষণ পর্যন্ত এটি ত্বকে রেখে দিন। তারপর হালকা ক্লিনজার দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৬. দুধ এবং কেশরের মিশ্রণঃ
জাফরান বা কেশার হ’ল একটি সুপ্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী সৌন্দর্য উপাদান যা ভারতীয় পরিবারে বহুকাল থেকে ব্যবহার করা হয়ে আসছে। ঝলমলে প্রাকৃতিক ত্বক পেতে জাফরান ব্যবহার করা খুবই ভালো। এটি ত্বককে উন্নত করতে, পিগমেন্টেশন, ডার্ক সার্কেল, পিম্পলস এবং ব্রণর মতো সমস্যাগুলি দূর করতে এবং সর্বপরি ত্বকের ট্যান তুলে ফেলতে বিশেষভাবে কার্যকরী।
কীভাবে ব্যবহার করবেনঃ
কিছুটা পরিমাণ জাফরান দুধে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। এবার সেই দুধটা ট্যানের ওপর কটন বলে করে নিয়ে লাগান। তবে ত্বকে আরও আর্দ্রতা সরবরাহ করতে, দুধের পরিবর্তে ক্রিমে জাফরান ভেজাতে পারেন।
মন্তব্য করুন