সেলফি নিতে খুব ভালো লাগে? সময় পেলেই সেলফিতে ব্যাস্ত হয়ে যান? কিন্তু জানেন কি আপনি যদি অতিরিক্ত সেলফি পাগল হন তাহলে আপনি একটি রোগের দ্বারা আক্রান্ত। রোগের নাম ‘সেলফাইটিস’। ভাবছেন নিজের ছবি তুললেও রোগ? হ্যাঁ এটি একটি মানসিক রোগ। এর ভাইরাস কিন্তু বাইরে থেকে আসে না। এর জন্য চাই আপনার স্মার্ট ফোন নামক যন্ত্রটি। যেটি একমাত্র এই রোগের জন্য দায়ি। অবশ্যই তাতে কিন্তু ক্যামেরা থাকতে হবে।
সেলফি একধরনের রোগ
আজকাল এরকম মানুষ পাওয়া মুশকিল যে সেলফি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন না। কিন্তু আপনার যদি স্মার্ট ফোন থাকে তাও যদি আপনি সেলফি তুলে আপনার ফেসবুকে পোস্ট না করেন তাহলে বুজতে হবে, আপনি সত্যি অন্যরকম। কারণ এই রোগ শুধু আপনার নয়, সবার একটু আধটু আছে। সে কোন নামি ব্যক্তিত্ব হোক বা সেলিব্রেটি সবাই এটি ভালবাসে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এই রোগ সারা বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
এখন সবাই ফোন কিনতে গেলে আগে দেখেন ফোনের ক্যামেরাটি ভালো আছে কিনা। যদি ক্যামেরা ভালো না হয়, তাহলে সেই ফোন সঙ্গে সঙ্গে বাতিল। তাই এখন ফোন কোম্পানিগুলি এই বিষয়ে যথেষ্ট মনোযোগ দিচ্ছেন। এই সেলফি আস্তে আস্তে এতই জনপ্রিয় হতে থাকে যে, ২০১৩ সালে এই সেলফি শব্দটিকে অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারিতে যোগ করা হয়।
সেলফির জনপ্রিয়তার জন্য, যাতে অনেক দূর থেকেও আপনি ছবি তুলতে পারেন সবাইকে নিয়ে তার জন্য এসে গেছে সেলফি স্টিক। শুধু সেলফি স্টিক নয়, এখন ভালো সেলফির জন্য এসে গেছে বিভিন্ন অ্যাপ। বর্তমানে বিশেষজ্ঞরা বলছেন সেলফি তোলা অবশ্যই একটি মানসিক রোগ। যদি দিনে ৫ থেকে ৬ বারের বেশি আপনি সেলফি তোলেন, তাহলে বুঝতে হবে আপনি এই রোগে আক্রান্ত।
মানসিক অবসাদ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেলফি তুলে শুধু ফোনে রেখে দেওয়া নয়, সেটিকে সকলকে দেখানোর একটা ব্যাপক প্রবনতা কাজ করে মানুষের মধ্যে। সকলেই চায় তার সেই ছবি যেন অনেকজন পছন্দ করে। এবং তাতে মন্তব্য করে। সেই মন্তব্যকে মানুষ অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়। অন্যের মন্তব্যে নিজেকে যাচাই করার একটি প্রবনতা বলা যেতে পারে। নিজস্ব অবস্থানটা তারা অন্যের মন্তবের ওপর ঠিক করে। যেটি অত্যন্ত ক্ষতিকারক। এর ফলে মানসিক অবসাদ বাড়তে থাকে। এই অবসাদ অনেক সময় ভয়াবহ আকার ধারন করে। এতে মানুষ এত বিভোর হয়ে যান, এর জন্য মানুষ অন্য যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতেও ভুলে যান।
মূলত অল্প বয়সি তরুণ তরুণীরা এই রোগে আক্রান্ত। যাকে বলে ‘সেলফাইটিস’। বর্তমানে মানুষ কোন পরিস্থিতিকেই পরোয়া না করেই সেলফি তুলতে এতই ব্যাস্ত হয়ে যান যে, মারাত্মক বিপদ হয়। অনেক সময় প্রানও চলে যায় অকালে এর জন্য। কিন্তু তাও মানুষ সচেতন হচ্ছেন না। কখনও চলন্ত রেল লাইনের ধারে, কখনও বাসে, কখনও বা বিষধর সাপের সঙ্গেও সেলফি তুলতে চান। এবং আপলোড করতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েন।
এই রোগ থেকে বেরনোর জন্য কোন চিকিৎসা বা ওষুধ আজও আবিষ্কৃত হয়নি। এটি বন্ধ করার জন্য কিছু আইন প্রণয়নের ব্যাবস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু তাও তেমন লাভ হচ্ছে না। এর জন্য প্রশাসনকে আরও কড়া হতে হবে। এবং সবথেকে আগে দরকার নিজস্ব সচেতনতা। এটি না থাকলে কোন লাভই হবেনা। তাই সচেতন হন। নাহলে অকালে আপনার জীবন পর্যন্ত যেতে পারে।
মন্তব্য করুন