আমরা অনেকেই চোখের সৌন্দর্য্য বাড়িয়ে তোলার জন্য লেন্স ব্যবহার করে থাকি। চোখ দুটিকে মোহময়ী করে তোলার চেষ্টায় অনেকেই ভিন্ন রঙের লেন্স ব্যবহার করে। কেউ কেউ আবার চশমার একঘেয়েমি কাটিয়ে তোলার জন্য ও লেন্স ব্যবহার করে থাকে। আজকাল বাজারে খুব সহজেই নানা রঙের কন্ট্যাক্ট লেন্স পাওয়া যায়, তাই অনেকেই নিজের চোখ দুটিকে মোহময় করে তোলার জন্য এর ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন কি এই লেন্স আদৌ আমাদের চোখ দুটির জন্য ভালো না খারাপ! আসুন জেনে নি কন্ট্যাক্ট লেন্স চোখের কি কি ক্ষতি করতে পারে।
কন্ট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার ভালো না
চোখের জন্য চশমা ভালো না কন্ট্যাক্ট লেন্স। এই বিতর্কের কোনো শেষ নেই। সবসময় সব রকম সাজগোজের সাথে চশমা জিনিস তা ঠিক মানায় না। এই কারণেও অনেকে কন্ট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করে থাকেন। তবে চশমা বলুন আর কন্টাক্ট লেন্স দুটি জিনিসের কিছু খারাপ ভালো গুন আছে। তাই জেনে নেওয়া ভালো লেন্স থেকে কি ধরণের ক্ষতি হতে পারে।
কন্ট্যাক্টটি পড়ার একটি বিশেষ প্রক্রিয়া থাকে, যা অনেক সময় আয়ত্ত করতে কিছু দিন সময় লেগে যায়। এমত অবস্থায় কন্ট্যাক্ট লেন্স খোলা বা পড়ার সময় আমাদের চোখে আঘাত লাগার সম্ভাবনা থাকে। অনেক সময় এই আঘাত গুরুতর হতে পারে।
কি কি সমস্যা হতে পারে
কন্ট্যাক্ট লেন্স নানা রকম হতে পারে যেমন ডেইলি ডিপোসিবল বা মান্থলি ডিসপোসিবল ,যেমনি হোক না কেন লেন্সকে আমাদের তার নির্দিষ্ট সলিউশন এ পরিষ্কার করতে হয় ব্যবহার করার আগে ও পরে। তা যদি না করা হয় তাহলে প্রতিদিন যে ধুলো বালি আমাদের চোখে লাগে লেন্সটিতে থেকে যায় এবং তা আবার না পরিষ্কার করে ব্যবহার করলে আমাদের চোখে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
তাই প্রতিদিন কন্টাক্ট লেন্সকে পরিষ্কার করা দরকার। সলিউশনের নির্বাচন ও সঠিক হওয়া দরকার। এক্ষেত্রে চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো সলিউশনটি বাছুন।
লেন্স পড়ার পর আমাদের চোখের কিছুটা অংশ ঢাকা থাকে। ফলত এই নির্দিষ্ট অঞ্চলটিতে ঠিক মতো অক্সিজেন চলা ফেরা করতে পারেনা। এর ফলে চোখে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
অনেকেই রাতে শোয়ার সময় ভুল করে লেন্স না খুলেই শুয়ে পরে। ফলত লেন্স এ আটকে থাকার ফলে চোখের ওই অংশটি সারারাত অক্সিজেন পায়না। এমত অবস্থাতেও চোখে যন্ত্রনা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া বা ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়
স্নান করার সময় বা সাঁতার কাটার সময় অনেকেই লেন্স ভুল বসত বা ইচ্ছে করে ব্যবহার করে থাকেন। এর ফলাফল অনেক সময় চোখের জন্য ক্ষতিকারক হয়।
সাধারণত জলের মধ্যেই এমন কিছু পদার্থ থাকে যার সংস্পশে লেন্সটি আসলে তার আকার সম্পূর্ণ বদলে যাই। এর পরিনাম মারাত্মক হতে পারে। চোখে ব্যাথা বা ইনফেকশন এর সাথে সাথে আমাদের দৃষ্টি শক্তি চলে যেতে পারে।
অনেকেই নিৰ্দিষ্ট সলিউশনের পরিবর্তে কলের জল দিয়ে লেন্স পরিষ্কার করে। এই জলে সাধারণত নানা ধরণের ব্যাক্টেরিয়া থাকে যা লেন্সের মাধ্যমে চোখে যায়। এর ফলে কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্থ হয় যার ফল চোখের পক্ষে অন্ত্যত ক্ষতিকারক। প্রত্যেকটি লেন্স ব্যবহারের একটি নিৰ্দিষ্ট সময় সীমা থাকে।
অনেকে সেটি অতিক্রান্ত হওয়ার পরও লেন্স ব্যবহার করে থাকেন। লেন্স বেশিদিন পুরোনো হয়ে গেলে তার মধ্যে বিভিন্ন ক্ষতিকারক জীবাণু ,ব্যাকটেরিয়া জমে একটি পরত তৈরী করে, যার ফলে আমাদের যেমন দেখতে অসুবিধা হয়। সেরকমই লেন্সটি পড়ার সময় ও অসুবিধে হয়। এছাড়া ইনফেকশন এর ভয় ও থেকে যায়।
কন্ট্যাক্ট লেন্সের সাথে সাথে লেন্সের আধারটির ও যত্নের প্রয়োজন। দীর্ঘদিন ধরে একই আধার ব্যবহার করলে তার মধ্যে ব্যাকটেরিয়া জমে যা কন্ট্যাক্ট লেন্সকেও সংক্রামিত করে। যার ফলে চোখ ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। তাই প্রতি একমাস অন্তর আপনার কন্ট্যাক্ট লেন্সের আধারটি বদলে ফেলুন
নিয়ম মেনে চললে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়
কন্ট্যাক্ট লেন্সটি খোলার পর ভালো করে চোখে জল দিন।রান্না করার সময় বা বাজি পোড়ানোর সময় কন্ট্যাক্ট লেন্স না ব্যবহার করা উচিত।চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতোই লেন্স ও তার সলিউশনটি বেঁচে নিন।মান্থলি ডিসপোসিবল লেন্স ব্যবহার করলে লেন্স ও এটার আধার দুটি কেই নিয়মিত পরিষ্কার করুন।
মন্তব্য করুন