চুড়ি এমন একটি অলংকার যা আমরা সকলেই হাতে পড়তে ভালোবেসে থাকি। হাতকে সুন্দর রাখার জন্য আমরা সাধারণত চুড়ি পরে থাকি। বাঙালি বিবাহিত মহিলারা হাতে পলা পড়ে থাকেন। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে নানা ধরণের এবং নানা রঙের চুড়ি পড়ার প্রথাও আছে।
আচ্ছা, আমরা কোনোদিন কি ভেবে দেখেছি যে চুড়ি পড়া শুধু মাত্রই একটি প্রথা কিনা? না চুড়ির পরার পিছনে কিছু গভীর বৈজ্ঞানিক কারণ লুকিয়ে আছে। তাহলে আজ জেনে নেওয়া যাক সেই বৈজ্ঞানিক কারণগুলি যা চুড়ি পড়ার পিছনে লুকিয়ে আছে।
রক্তের চলাচলকে স্বাভাবিক রাখে
আগেকার দিনের বেশির ভাগ মহিলারা বাড়িতে থাকতেন এবং বাড়িতে থেকে কঠোর পরিশ্রম করতেন। তাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুব জরুরি ছিল রক্তের সঠিক চলাচল। চুড়ি কিন্তু আমাদের রক্তের সঠিক চলাচলকে বজায় রাখে।
চুড়ির সাথে আমাদের হাতের কব্জির ঘর্ষণ ঘটে এবং তার ফলে আমাদের রক্তের চলাচল বেড়ে ওঠে। রক্তের চলাচল বেড়ে ওঠার সাথে সাথে আমাদের স্বাস্থ্যের বিকাশও ঘটে।
চুরির মধুর ধ্বনি গর্ভবতি মা এবং তার সন্তানের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়
ভারতের বহু অঞ্চলে গর্ভবতী মহিলাদের সাধের সময় তাদের চুড়ি দেওয়া হয়। চুড়ির মধুর ধ্বনি গর্ভবতী মায়ের চিন্তা,চাপ,উদ্বেগ ইত্যাদি দূর করে তোলে। চুড়ির আওয়াজ ওষুধের মতো কাজ করে এবং তার ফলে মা এবং তার শিশু দুজনেরই স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। চুড়ির শব্দ ভ্রূণের শ্রবণশক্তি ও সৃষ্টি করে তোলে। তাই বলাই যায় যে চুড়ির শব্দ মা এবং তার বাচ্চার জন্য খুবই উপকারী।
অশুভ শক্তিকে দূরে রাখে
কাঁচের চুড়ি পরিবেশের শুদ্ধতা এবং শুভ শক্তি নিয়ে সেইটা শরীরের মধ্যে প্রবেশ করায়। চুড়ির আওয়াজ একটা শান্তির আবহাওয়া তৈরি করে এবং তার ফল স্বরূপ আমাদের মনের অশুভ ভাবনা দূর হয়। তাই এরজন্য আমরা বলি যে চুড়ি অশুভ শক্তিকেও দূর করে। মনে পজেটিভ ভাইব কাজ করে।
মানসিক ভারসাম্যকে বজায় রাখতে সাহায্য করে
গবেষণার মাধ্যমে জানা গিয়েছে যে যেই সব মহিলারা হাতে চুড়ি পরেন তাদের মানসিক স্বাস্থ্য বেশি ভালো হয়। মানা হয় যে কাঁচের চুড়ি আমাদের মনের প্রচন্ড রাগ বা মানসিক আবেগকে কমিয়ে তা স্বাভাবিক করে তুলতে সাহায্য করে। দেখা যায় যে যারা হাতে চুড়ি পরেন তাদের ধৈর্য শক্তি বেশি হয় সেইসব মহিলাদের থেকে যারা চুড়ি পড়েন না।
মেয়েদের হাতের হাড়কে শক্ত করে তোলে
আগেকার দিনে মানা হত এবং এখনও মানা হয় যে মেয়েদের হাড় ছেলেদের তুলনায় দুর্বল হয়। সোনা এবং রুপো দিয়ে বানানো চুড়ি আমাদের শরীরের শক্তির সঞ্চলন করে যা আমাদের মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য খুবই দরকারী। বলা হয় যে হাতের সাথে সোনা বা রুপোর চুড়ির ঘর্ষণের ফলে,আমাদের শরীর অতি অল্প পরিমানের সোনা বা রূপোকে শোষণ করে নেয়। সোনা এবং রুপো আমাদের শরীরকে আরোগ্য প্রদান করে এবং তার ফলে আমরা সুস্থ্য থাকি এবং বিভিন্ন সুফল পাই।
তাহলে আজ আমরা চুড়ি পড়ার কয়েকটি বৈজ্ঞানিক কারণের সম্বন্ধে জানতে পারলাম। আগেকার দিনের মহিলারা পর পুরুষদের সামনে বেরোতেন না। যদিও বা ভুল করে অন্য পুরুষদের সামনে চলে আসতেন,পর পুরুষরা মহিলাদের চুড়ির আওয়াজ শুনে সামনে থেকে চলে যেতেন। এইভাবে নিয়ম রক্ষা করা হত আগেকার দিনে।
আর কোনো কোনো জায়গাতে এই কারণের জন্যই মহিলারা চুরি পড়তেন। কিন্তু তারপর চুড়ি পরার বৈজ্ঞানিক কারণ জানা যায় এখন। এরপর থেকে মহিলাদের মধ্যে চুড়ি পড়ার প্রবণতাও বেড়ে ওঠে। বছরের পর বছর পার হওয়ার সাথে সাথে চুড়ি পড়া একটা সাজ সজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু তাও চুড়ির বৈজ্ঞানিক কারণকে ভুলে গেলে চলবে না।
মন্তব্য করুন