করোনা কালে শরীর নিয়ে সচেতন হয়েছেন অনেকেই। নিত্য ফাস্টফুডের বদলে ঘরে ঘরে জেয়গা করে নিয়েছে হেলদি ডায়েট ও শরীরচর্চা। শরীর খারাপ হলেই আমরা বেশ সচেতন ছুটে যাই ডাক্তারের কাছে, কিন্তু মন খারাপ হলে?
‘রাবেয়া’ ওরফে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়
শরীরের অসুখ করলে আমরা যতটা সচেতন, মন খারাপ বা মনের অসুখ করলে আমরা কী ততটাই সচেতন? ভাবি কখনো? বেশীরভাগ মানুষের কাছেই উত্তরটা না। ডিজিটাল দুনিয়ার ব্যস্ত জীবনে মন নিয়ে ভাবার সময় কই, আর এই বিষয়টিই প্রত্যেককে মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন, ‘চরিত্রহীন ৩’ এর ‘রাবেয়া’ ওরফে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনিও হারিয়েছেন অনেক প্রিয় মানুষকে। হারিয়েছেন বাবাকে। যাদের হারিয়ে ফেলার পর তিনি নিজেও যথেষ্ট আবেগবিহ্বল হয়ে পড়েছিলেন। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় অভিনীত ওয়েব সিরিজ ‘চরিত্রহীন ৩’। আর সেখানেই তিনি অভিনয় করছেন একজন মনবিদের চরিত্রে। এই চরিত্রে অভিনয় করতে করতেই কী উপলব্ধি করলেন যে , ‘সবার দরকার এমন একজনকে যে মনের কথা শুনবে’।
এর আগে দীপিকা পাড়ুকোনকে দেখা গেছে, মানসিক অবসাদ নিয়ে সরব হতে। বিশেষ করে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর, বলিউডের অনেকেই মানসিক অবসাদ নিয়ে শেয়ার করেছিলেন তাদের মনের কথা । এবং মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখার ক্ষেত্রে বিশেষ জোর দিতে দেখা গিয়েছিল সবাইকেই। এবার টলিউডেও এগিয়ে এলেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়।
হইচই’এ তরফ থেকে প্রকাশ করা হয়েছে ‘চরিত্রহীন ৩’

সম্প্রতি হইচই এর তরফ থেকে প্রকাশ করা হয়েছিল ‘চরিত্রহীন ৩‘ এর প্রমোশনাল ভিডিও আর সেখানেই স্বস্তিকা জানিয়েছেন, সোশ্যাল অ্যাংজাইটিতে ভুগে যেসব ছেলেমেয়েরা ক্লাসের এককোণে বসে থাকে , তাদের কাছে কোন সহানুভূতির হাত তো পৌছয়ই না , বরং তাদের স্বীকার হতে হয় চরম হাঁসি ঠাট্টার। অন্যদিকে গৃহবধূদের ক্ষেত্রে তারা সারাদিন সংসার সামলাতে গিয়ে ভুলেই যান তারা কে। তাদেরও একটা আলাদা জীবন আছে, আলাদা ইচ্ছা আছে এবং আলাদা একটা পরিচয়ও আছে। আবার বিভিন্নভাবে নির্যাতিত মেয়েরা শিক্ষা পায় হাঁসি মুখে সবটা সহ্য করে নেবার। সমাজ তাদের একটা মেকি হাঁসি দিয়ে সবটা লুকিয়ে রাখার শিক্ষা দেয়। কিন্তু তাদের মনের কোণে জমা কালশিটে গুলোর দায়িত্ব কাদের? সেই দায় কি আমাদের সবার নয়?
অবাঞ্ছিত প্রশ্ন না করে তার কথা শুনতে শিখুন
স্বস্তিকার মতে, মানসিক অসুস্থতা যে একটা রোগ সেটা অনেকেই বুঝতেই চান না। আর সামাজিক চাপ সহ্য করতে না পেরে অনেকেই বেঁছে নেন চরম রাস্তা। আমরা তখনও তাদের নিয়ে সমালোচনা করতে থাকি। সেটা না করে তাদের পাশে থাকা উচিৎ। কারণ সব রোগের মত এক্ষেত্রেও পরিবার, বন্ধু, আত্মীয়স্বজনের সহযোগিতা একান্ত দরকার। তার মতে, কারুর হাতে কোন আঘাতের দাগ দেখলে তাকে অবাঞ্ছিত প্রশ্ন না করে তার কথা শুনতে শিখুন। এইটুকু অনুভূতিশীল তো আমরা হতেই পারি।
কারণ, “মানুষের শরীরও একটা। মন ও একটা। শরীরের যেমন দিন খারাপ যায়, তেমনই মনেরও দিন খারাপ যায়। অন্যভাবে বলতে গেলে মনেরও শরীর খারাপ হয়“ তাই যে মানুষটার দিনটা একটু খারাপ যাচ্ছে কিংবা প্রিয়জনকে হারিয়ে সামাজিক চাপে একা হয়ে যাওয়া আপনার বন্ধু, আত্মীয় বা পরিচিত মানুষটির পাশে দাঁড়ানোর কথা আরও একবার আমাদের মনে করিয়ে দিলেন রাবেয়া।
মন্তব্য করুন