বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস। ব্যক্তিগত জীবন, অভিনয় থেকে খানিক বিরতি, সন্তান, শাকিবের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ, এইসব ঘটনা নিয়ে চর্চার তুঙ্গে ছিলেন। কিন্তু তার থেকেও বেশি চর্চার বিষয় হল তাঁর চেহারার নতুন ‘ট্রান্সফর্মেশন’। তিনি যেভাবে ওজন কমিয়ে আবার ছিপছিপে হয়েছেন, সেটা অনেকের কাছেই শিক্ষার বিষয় হয়ে উঠেছে।
বিশ্বাস রেখেছেন জিমে
অপুর ওজন হয়ে গিয়েছিল প্রায় ৯৫ কেজি মতো। সেখান থেকে ওজন কমিয়েছেন উনি প্রায় ৩৫ কেজি মতো। ভাবুন, এটা কিন্তু কোনও গল্প নয়, এক্কেবারে সত্যি। এরপরেও উনি আবার আট থেকে দশ কিলো কমিয়ে আবার ওনার পুরনো ছিপছিপে চেহারায়। কিন্তু এই যে এভাবে ওজন কমিয়ে আনা, সেটা কি কোনও ম্যাজিক? একদমই না। এর পিছনে আছে পরিশ্রম আর নিষ্ঠা। ওজন কম করার ক্ষেত্রে অপু একেবারেই বিশ্বাস রেখেছিলেন নিজের জিমের ওপর। উনি মূলত সকালে, বলা ভাল ভোরে জিমে যান। সেখানে গিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা মতো উনি জিম করেন। এই জিম করাই ওনাকে এতোটা ফিট করেছে আবার। জিম ছাড়া এতো তাড়াতাড়ি এই ওজন কমিয়ে আনা সম্ভব ছিল না।
কড়া ডায়েট
জিম করার পাশাপাশি অপু মেনে চলেন কড়া ডায়েটের নিয়ম। ডায়েটিশিয়ান ঠিক যেমন যেমন ভাবে ওনাকে বলে দিয়েছেন খেতে ঠিক সেই সেই ভাবেই উনি খান। আর ডায়েটে অবশ্যই কার্বোহাইড্রেট অনেকটা কম করে প্রোটিনের মাত্রা বাড়িয়েছেন। ভাত বা কার্বোহাইড্রেট খাওয়া প্রায় বন্ধই করে দিয়েছেন অপু। এর বদলে শাক-সবজি, ফল, ফলের রসের ওপরেই বেশি আছেন অপু। আর সব সময়ে যে এক রকম ডায়েট মেনে চলেন অপু তা নয়। ওজন কম-বেশি হওয়া দেখে ডায়েটিশিয়ান ওনাকে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে বলেন। এই সবই এতো তাড়াতাড়ি ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সাহায্য করেছে অপুকে।
নিয়ম মানা
ছবি করতে ফিরতে হবে, নিজের পরিচিত লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন শুনতে হবে, আর তার জন্য নিয়ম করে চলতে হবে—এই হল অপুর জীবনের মূল মন্ত্র। ফিট থাকার জন্য, নিজেকে আগের রূপে ফিরিয়ে আনার জন্য তাই ডিসিপ্লিন খুব বেশি মেনে চলছেন অপু। একদম ডায়েটের বাইরে খাবার অপু খান না। ঠিক সময় মতো রোজ জিমে যান। একদিনও বাদ দেন না। জিমে যেতে না পারলে ঘরেই করে নেন খানিক এক্সারসাইজ। আর এই নিয়ম করে চলাই আজ অপুকে আবার আগের জায়গায় নিয়ে এসেছে।
ঠিক করে ঘুম
চিকিৎসকরা বলেন, ঠিক করে ঘুম না হলে কিন্তু ওজন বাড়বেই। যতই আপনি কম খান না কেন, আপনার ওজন বাড়তে বাধ্য। তাই অপু ঘুমের দিকে খুব ভাল নজর দেন। ঠিক সময়ে নিয়ম করে ঘুমিয়ে পড়া, ঠিক সময়ে ঘুম থেকে ওঠা অপুর জীবনের অন্যতম অঙ্গ। অপু কিন্তু ভোর ছ’টার সময়ে জিমে চলে যান। সুতরাং বুঝতেই পারছেন। এটাও কিন্তু ওনার শরীর ভাল রাখার অন্যতম দিক।
স্ট্রেস না নেওয়া
স্ট্রেস আমাদের এখন নিত্য সঙ্গী। অপুও কিন্তু জীবনের একটা বড় সময়ে এই স্ট্রেসের মধ্যে দিয়ে গেছেন। অভিনেত্রী বলে যে স্ট্রেস থাকবে না তা তো হয় না। শাকিবের সঙ্গে বিচ্ছেদ অন্যতম বড় দিক এই স্ট্রেসের। এই স্ট্রেসই হয়তো ওনার ওজন অতিরিক্ত বাড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়া সন্তান হওয়ার পর স্বাভাবিক ওজন বাড়া তো থাকেই।
এখন কিন্তু অপু কাজের মধ্যে এসে স্ট্রেস থেকে অনেক দূরে। অপুর মতে, ওজন কমিয়ে সুস্থ থাকতে হলে দুশ্চিন্তা কমিয়ে মন খুলে হাসতে হবে। আর নিজের দিকে খেয়াল অবশ্যই দিতে হবে। তাহলেই ওজন ঠিক থাকবে। অপু নিজের জীবনেও এই দিক অবলম্বন করেই আজ এতো সুন্দর ভাবে নিজেকে ‘শুকিয়ে’ ফেলেছেন।
তাহলে বন্ধুরা, অপুর এই ওজন কমিয়ে ফেলা কি আপনাদের কাছে কোনও রহস্য মনে হল? আমার তো একেবারেই মনে হল না। বরং নিয়ম মেনে দৃঢ় হয়ে কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যায়, কোনও কিছুই যে অসম্ভব নয় তা প্রমাণ করলেন অপু। ৯৫ কেজি ওজন এখন উল্টে দিয়ে ৫৯ এর থেকেও যে অনেক কম করা যায় তা কিন্তু অপু করে দেখিয়েছেন।
মন্তব্য করুন