নীলা গ্রহরত্নটি শনি গ্রহের রত্ন। শনি খুবই শক্তিশালি গ্রহ এবং তার প্রকোপ এবং বক্র দৃষ্টি থেকে বাঁচতে আমরা নীলা রত্ন ব্যবহার করে থাকি। শনি ঠাকুর কিন্তু আমাদের জীবনে ভালো এবং খারাপ দুই রকমেরই ফল এনে দেয়।তাই সঠিক ভাবে জ্যোতিষীর পরামর্শ নিয়ে তারপর নীলা গ্রহণ করা উচিত। নীলা গ্রহ রত্নটি শনিঠাকুরের শক্তি বহন করে পৃথিবীতে। আগেও যেমন লিখেছি যে শনি আমাদের জন্য সুফল এবং কুফল দুটোই আনে তাই ভেবে চিন্তে নীলা পড়া অত্যন্ত জরুরী। নীলা গ্রহ রত্নটি ঠিক পদ্ধতিতে গ্রহণ করা খুবই জরুরী নাহলে কিন্তু নীলা আমাদের পক্ষে খারাপ ফলও নিয়ে আসতে পারে। আবার নীলা আমাদের জন্য খুবই ভালো ভাগ্য নিয়ে আসতে পারে। তাই আজ নীলা গ্রহণ করার কিছু পদ্ধতিগুলির উপর আলোকপাত করবো আমরা।
সর্বপ্রথমে সঠিক নীলা কেনা দরকার যা আমাদের উপকারে আসবে। একটি প্রসিদ্ধ দোকান থেকে উচ্চমানের নীলা কেনা অত্যন্ত দরকারী। নীলার প্রকৃতি বা শ্রেণীর উপর নির্ভর করছে যে নীলাটি আমাদের জন্য কতটা কার্যকরী হবে। তাই আমাদের সঠিক নীলা নির্বাচন করা খুবই প্রয়োজনী।
প্রথমেই বলা দরকার যে নীলা গ্রহণ করার আগে বেশ কয়েক দিন নীলাটি আপনাদের রাতের ঘুমানোর বালিশের তলায় রেখে দিতে হবে। যদি সেই কয়েকদিন আপনাদের কোনো অসুবিধা অনুভব না হয় তাহলে নীলাটি গ্রহণ করা যেতে পারে। কিন্তু নীলাটি রাতের বালিশের তলায় রাখার পর যদি রাতে বাজে ,ভয়ানক স্বপ্ন দেখেন বা কোনো অঘটন ঘটে বা হঠাৎ অপ্রীতিকর কোনো সমস্যাতে পরে যান তাহলে সেই নীলাটি আপনার গ্রহণ করার উপযোগী হবে না।
নীলা ধারণ করার পদ্ধতিগুলো
এইবার তাহলে আমরা শরীরে নীলা ধারণ করার পদ্ধতিগুলো জেনে নিই।নীলা কেনার পর উচিত আমাদের জ্যোতিষীর থেকে পরামর্শ নেওয়া যে সঠিক নীলা নেওয়া হয়েছে কিনা ,আমাদের জীবনে এই নীলা কতটা উপকার করতে পারে এবং কিভাবে ধারণ করতে হবে নীলাটি ইত্যাদি।
তারপর নীলার শুদ্ধিকরণের জন্য নীলাটি কাঁচা দুধ,মধু এবং শুদ্ধ জলের একটি মিশ্রনের সাথে মেশাতে হবে। এই ভাবে নীলাটি প্রায় ২০ মিনিট থেকে আধ ঘন্টা রেখে দিতে হবে সেই মিশ্রনে। তারপর সময় হয় গেলে নীলাটি তুলে নিতে হবে।
আগের পদ্ধতির পরে একটা দিন নির্ধারণ করতে হবে যেইদিন নীলাটি গ্রহণ করতে পারি। শনিবার শনি ঠাকুরের দিন তাই শনিবার আপনারা নীলা প্রথম শরীরে গ্রহণ করতে পারেন। এছাড়াও আরো কয়েকটি দিন আছে যে দিনগুলিতে আপনি নীলা গ্রহণ করতে পারেন। যেমন শুক্ল পক্ষের রাত ইত্যাদি। এইসব ব্যাপারে আপনাদের জ্যোতিষির সাথে আলোচনা করে নেওয়ার দরকার।
দিন নির্ণয় হয়ে গেলে সেই নির্ধারিত দিনে ৫টি ধুপকাঠি জ্বালিয়ে শনি দেবতাকে উৎসর্গ করতে হবে। যে তাঁরই কারনে আমরা সেই নীলাটি গ্রহণ করতে চলেছি আর তিঁনি যেন আমাদের উপর কৃপার দৃষ্টি বজায় রাখেন।
তারপর নীলা পাথর দিয়ে তৈরি আংটি মিশ্রণ থেকে তুলে তা ওই ধুপাঠির চারদিকে ৫ বার বা ১১ বার ঘোরাতে হবে এবং “ওম শান শনি শারানায় নমঃ” বলে যেতে হবে।এরপর আমরা নীলাটি শনি ঠাকুরের মন্ত্র বলতে বলতে আমাদের ডান হাতের মধ্য আঙুলে পড়তে পারি।নীলাটি গ্রহণ করার পর যদি সম্ভব হয় তাহলে গরিবদের মধ্যে মুসুর ডাল ,নুন, সর্ষের তেল,চা ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে। আরো ভালো পরিণাম পেতে চান তাহলে শিব লিঙ্গের মাথার উপর দুধ ,বেল পাতা দেওয়া যেতে পারে।
নীলা গ্রহণ করার পর পরই নীলার গুণের অনুভব করতে পারি। কারন নীলা অত্যন্ত কার্যকরী এবং শক্তিশালী একটি গ্রহরত্ন। ৪ বছরের কম বেশি সময় নীলা কাজ দিয়ে থাকে তাই জ্যোতিষীর পরামর্শ নিয়ে তার কিছুদিন আগে বা পরে নীলাটি পাল্টে ফেলা অতন্ত জরুরি।
যদি নীলাটি আপনার জন্য যথার্থ হয় তাহলে খেয়াল রাখতে হবে যে নীলাটি যেন আমাদের শরীরের সঙ্গে লেগে থাকে। যদি নীলাটি আলগা ভাবে পরা হয় তাহলে কিন্তু কোনো লাভই হবে না। কোনোভাবেই উপকৃত হবেন না। তাই সব সময় খেয়াল রাখতে হবে যে নীলাটি যেন আমাদের গায়ের সঙ্গে লেগে থাকে না হলে নীলার সুফল থেকে আমরা কিন্তু বঞ্চিত হব এবং নীলা পড়ার কোনো লাভই হবে না।
বলা হয় নীলা আমাদের ভাগ্যে রাজযোগ নিয়ে আসে। আমাদের জীবনে রাজযোগ এলে আমরা আমাদের ভবিষ্যত বুঝে উঠতে পারবো এবং ভবিষ্যতের কিছু সঠিক নির্ণয়ও নিতে পারবো। জ্যোতিষীর থেকে পরামর্শ নিয়ে তারপরই নীলা পড়া উচিত না হলে নীলা কিন্তু খুবই সাংঘাতিক একটি গ্রহরত্ন। যদি ভুল লোক বা ভুল পদ্ধতিতে নীলা গ্রহণ করেন, তাহলে নীলা কিন্তু সাংঘাতিক ভাবে ক্ষতি এনে দিতে পারে আপনার জীবনে।
আরেকটি জিনিস মাথায় রাখা উচিত যে নীলা কিন্তু শনি ঠাকুরের গ্রহ রত্ন এবং শনি ঠাকুর কিন্তু যারা কঠোর পরিশ্রম করে তাদেরই সুফল দেন। তাই যদি আমরা কঠোর পরিশ্রম করে ফলে পেতে আগ্রহী হই তাহলেই কিন্তু নীলা আমাদের জন্য কার্যকর হবে। তাই সবসময় জ্যোতিষীর পরামর্শ নিয়ে নীলা গ্রহণ করা উচিত।
মন্তব্য করুন