করোনা পরিস্থিতিতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে রোজকার ডায়েটে ডিমের উপস্থিতি অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। কিন্তু বেশ কয়েকবছর ধরেই চাইনিজ প্লাস্টিক ডিম বাজারে বিক্রি হবার অভিযোগ উঠে এসেছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা ডিমকে হাতিয়ার করেছেন ভেজাল কারবার জমিয়ে তোলবার জন্য।
ক্যালসিয়াম কার্বনেট, জেলাটিন, প্যারাফিন ওয়াক্স ও সোডিয়াম এলগিনেট দিয়ে তৈরি করা এই ডিমে কোন খাদ্যগুণ তো দুরস্থান বরং স্নায়ু, লিভার ও ফুসফুসের ক্যান্সারসহ নানা ক্ষতিকর রোগের আশঙ্কা তৈরির সমূহ সম্ভাবনা মজুত রয়েছে। তাই স্বাস্থ্যের খাতিরে সচেতনভাবে কৃত্রিম ডিম ও আসল ডিমের ফারাক করুন নিজেই মাত্র কয়েক মিনিটে আমাদের বলে দেওয়া এই পদ্ধতিগুলি ফলো করে।
১) ভঙ্গুরতাঃ
প্লাস্টিক ডিমের খোল খুবই ঠুনকো হয় তাই হাতে নিয়ে অল্প চাপ দেবার সাথে সাথেই ভেঙে টুকরো হয়ে যায়। অপরদিকে আসল ডিমের খোল তুলনামূলক শক্ত হয়।
২) দর্শনধারীঃ
নকল ডিম চেনার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো তার লুক। ডিমের খোলা বেশ ঝকঝকে দেখতে হবে। আসল ডিমের ক্ষেত্রে কিন্তু এতটা উজ্জ্বলতা আপনি কখনই দেখতে পাবেন না। আসল ডিম হাতে নিয়ে আঙ্গুল চালালেও বুঝবেন সেটার গা মসৃন হবে না তুলনায় একটু এবড়ো খেবড়ো হবে। তাছাড়া নকল ডিম একটু বড় সাইজের ও লম্বাটে আকারের হয়ে থাকে।
৩) শেক টেস্টঃ
নাড়ানোর পরীক্ষা ডিম চেনার কার্যকরী সমাধান। ডিম হাতে নিয়ে কানের একদম কাছে এনে নাড়িয়ে আওয়াজ শোনার চেষ্টা করুন। যদি লিকুইড এর শব্দ শোনেন তবে সেটা নকল। নকল ডিমের ভেতরের তরল উপাদান জমাট হয় না। আসলের মতো তাই নাড়ালে শব্দ হয়।
৪) ভেঙে দেখুনঃ
ডিম ভেঙে একটা প্লেটে ঢেলে দেখুন। যদি কুসুম ও সাদা অংশ আলাদা হয়ে যায় তবে বুঝবেন ডাল মে কুছ কালা আছে। অরিজিনাল ডিমে কুসুম ও সাদা অংশের সান্দ্রতা একই থাকে।
৫) ফায়ার টেস্টঃ
এই টেস্টটি করার জন্য আপনাকে ডিমের খোলা নিয়ে আগুনে পোড়াতে হবে। যদি দেখেন খোলায় তৎক্ষণাৎ আগুন ধরে যায় তবে সেটা অবশ্যই প্লাস্টিক ডিম। এছাড়া প্লাস্টিক পোড়ার গন্ধ আপনার নাকে এসে লাগবে।
৬) গন্ধঃ
সাধারণত ডিমের মধ্যে একটা আঁশটে গন্ধ বিদ্যমান থাকে। কিন্তু নকল ডিমের মধ্যে আপনি সেইরকম কোনো গন্ধ পাবেন না। উপরন্তু ওই ডিম ফাটিয়ে রেখে দিলেও পিঁপড়ে বা পোকামাকড় আসবে না কারণ রাসায়নিক ওদের আকৃষ্ট করে না। রান্না করলেও কটু গন্ধে চারিদিক ভরে যাবে।
৭) সেদ্ধ করে দেখুনঃ
সেদ্ধ ডিমের কুসুমের রঙ ঈষৎ হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে। কিন্তু প্লাস্টিক ডিমের ক্ষেত্রে আপনি দেখবেন কুসুম বর্ণহীন হবে তখনই আপনি ধরে ফেলতে পারবেন যে এটি ভেজাল।
৮) জলের পরীক্ষাঃ
জলের পরীক্ষায় নকল ডিম চট করে ধরা পড়ে যায়। এটা করার জন্য ডিমটা সেদ্ধ করে একটা জলভর্তি বালতিতে ছেড়ে দিন। যদি ডুবে যায় তবে জানবেন সেটা আসল তবে কৃত্রিম ডিম জলে ভাসতে পারে।
৯) শব্দঃ
আসল ডিম ভাঙলে মড়মড় করে একটা আওয়াজ পাবেন কিন্তু নকল ডিমে সেটা পাবেন না। জানেন কেন? কারণ এই ডিমের খোলস এর মধ্যে রাবারের মতো পর্দা দেখতে পাবেন যেটা সহজে ভাঙতে চায়না এবং ক্রানচি শব্দ ও উৎপন্ন করেনা।
১০) আনুষঙ্গিক হিসাবে ডিমঃ
ডিম তো আমরা শুধু সেদ্ধ বা অমলেটে খাই না অন্যান্য ডিশের সাথে আনুষঙ্গিক উপকরণ হিসেবেও ডিম ব্যবহৃত হয়। পুডিং বা কেক এ ডিম ব্যবহার করে দেখুন। যদি নকল হয়ে থাকে তবে কেক এর বেস মোটেই জমাট বাঁধবে না ও টেক্সচার ছেঁড়া ছেঁড়া হবে। পুডিং ও ফেটে যাবে।
মন্তব্য করুন