এখন করোনার মধ্যে আমাদের বাইরে যাওয়া মানা। নতুন করে আবার লকডাউন হচ্ছে দু’দিনের জন্য। তা সব মিলিয়ে আমরা কিন্তু বাইরে গিয়ে মজা করার প্ল্যান মন খুলে করতে পারছি না। কিন্তু তাই বলে কি ছুটির দিন মানে রবিবার গোটা দিন মুখ ব্যাজার করে বসে থাকবো ঘরে? একদমই না। দেখুন তো আমার আজকের বলা রবিবারের প্ল্যান আপনাদের বাড়িতে বসিয়েই মন ভালো করে দেয় কিনা!
সকালের রান্না থেকে বড়দের রেহাই
আপনি আর আপনার কত্তা দু’জনেই ওয়ার্ক ফ্রম হোম করেন সারা সপ্তাহ। রবিবার একদিন যখন ছুটি পেলেনই তখন সকালটা মা’কে একটু ছুটি দিন। তিনি সকালটা একটু নিশ্চিন্তে পুজো নিয়ে বা নিজের কোনও কাজ নিয়ে বরং কাটান। আপনি চা টা করে ফেলুন দেখি সকালে। আর মনে মনে ভেবে ফেলুন সকালের খাবারে কী বানাবেন!
দেখুন, আপনি যদি ভাবেন যে লুচি, আলুর তরকারি এই সব করার দিকে এখন যাবেন না তাহলে নাই বা গেলেন। কম সময়ে আর কম পরিশ্রমে ভালো খাবার কিন্তু বানিয়ে নেওয়াই যায়। সাবুর খিচুড়ি বানিয়ে ফেলতেই পারেন। আপনার কত্তাকে বলুন সাবুটা ভিজিয়ে রাখতে। আর তার সঙ্গে লঙ্কা কুঁচিয়ে, আদা অল্প থেঁতো করে রেখে দিতে। সঙ্গে অল্প আলু ছোট ছোট ডুমো করে কেটে খানিক ভেজে রাখতেও পারবেন উনি।
আপনি খালি গিয়ে শুকনো কড়াইতে মুগডাল অল্প ভেজে নেবেন। তারপর কড়াইতে তেল দিয়ে জিরে, লঙ্কা, আদা আর সামান্য জিরে গুঁড়ো কষিয়ে সব উপকরণ দিয়ে অল্প নেড়ে জল দিয়ে দিন। সেদ্ধ হলে নুন মিষ্টি দেখে ঘি গরমমশলা দিয়ে নামিয়ে নিন। এতে বাড়ির বড়রা বেশ খুশি হবেন।
এবার খানিক নিজের জন্য সময়
বাড়ির সকলের জন্য সকালের খাবার করে আপনি সবার মন খুশ করেছেন। এবার নিজের জন্য একটু সময়। সকলে বলেন, গাছ, সবুজ, প্রকৃতি এর মধ্যে থাকলে মন ভালো থাকে, চাপ কমে। আপনি ছাদে যে বাগান করছেন রোজ তো তাতে জল দেওয়া হয় না। এখন বৃষ্টির সময়ে টবে খানিক আগাছাও হয়।
এবার একটু গাছের পরিচর্যার সময়। আগাছা তুলে ফেলুন, টবে জল জমে থাকলে সেটা ফেলুন, গাছের গোঁড়ায় একটু মাটি নাড়িয়ে সার দিন অল্প। এখন তো শ্রাবণ মাস, গাছ কিন্তু ভালো বাড়বে। তাই এই সময় গাছের সঙ্গে সময় কাটান। দেখবেন সবুজ সতেজ গাছ আপনার মন ভালো করে দেবে।
দুপুরের রান্নায় সাহায্য
আপনি ছাদ থেকে নিচে এসে স্নান করে দেখলেন বাড়িতে রান্নার কাজ শুরু। রবিবার মানে করোনার মধ্যেও কিন্তু আমরা মাটন খেতে ভুলিনি। সেই মাটনের প্রস্তুতি আপনাদের আনন্দ যে বাড়াবে তা তো বলাই যায়। আপনি বরং মাটনের দায়িত্বটা নিজের কাঁধে নিয়ে নিন। অন্যদের একটু আলু কাটতে, মশলা বাটতে এইসব করে দিতে বলুন।
আর যেহেতু মাটন করতে সময় লাগে, তাই রান্না করতে করতে জমিয়ে এক প্রস্থ গল্প করে নিন সকলের সঙ্গে। এভাবে কিন্তু রান্নার সময়ে অনেক কথা বলতেন আগেকার মানুষেরা। প্লিজ, ঘরে কেউ এই সময়ে বসে থাকবেন না। সারা সপ্তাহ তো সকাল ১০টা থেকে রাত ৭ বা ৮টা অবধি থাকেন নিজের ঘরে নিজের কাজ নিয়ে। আজ শুধু খাওয়া আর গল্প।
এবার দ্বিপ্রাহরিক বিশ্রাম
না, না বিশ্রাম মানে আপনি ঘুমোবেন তা বলছি না। অন্যদের খানিক শুতে দিন। আপনি এই সময়ে একটু নিজের মতো করে নিজেকে এন্টারটেইন করুন। আচ্ছা সেই দু’সপ্তাহ আগে ভেবেছিলেন পাতাললোক দেখবেন, দেখেছেন?
পঞ্চায়েত ওয়েব সিরিজ তো এখনও শুনছেন অন্যের মুখেই। আজ দুপুরে নিশ্চিন্তে হেডফোন কানে লাগিয়ে দেখতে শুরু করুন। আচ্ছা খুব একটা ইচ্ছে করছে না? মজার কিছু দেখবেন? আমাদের দাশবাসের সাইটে একটা আর্টিকেল বেরিয়েছিল কয়েক দিন আগে, বাংলা সিনেমার সেরা দশটি কমিক মুভি। লিস্ট দেখে সেগুলো দেখে নিতে পারেন ইউটিউবে।
শকুন্তলা দেবী রিলিজ করল আমাজন প্রাইমে, সেটাও দেখতে পারেন। দিল বেচারাও দেখতে পারেন আপনার কত্তার সঙ্গে। দুপুরটা কিন্তু ভালো ভাবে কেটে যাবে।
বৃষ্টির দিনে পকোরা মাস্ট
বৃষ্টি পড়ছে আর বাঙালি বাড়িতে পকোরা হচ্ছে না, এমন হয় নাকি! সাধারণ পেঁয়াজি, আলুর চপ থেকে শুরু করে নতুন রকমের ভাজাভুজি যা চাইবেন সবই আপনি খাওয়াতে পারেন বাড়ির মানুষদের। তবে রান্না করতে পাঠিয়ে দিন আপনার কত্তাকে। রেসিপি দেখিয়ে দিন ওনাকে, আর আপনি হেল্প করুন। দাশবাসের সাইটেও আপনি অনেক অনেক এমন রেসিপি পেয়ে যাবেন। পকোরা, চা বা কফি খেতে খেতে বিকেলটা কিন্তু জমে যাবে।
সন্ধ্যের মস্তি
সন্ধ্যেবেলা এবার একদম ফেমিলি টাইম। বাড়ির সকলে ক্যারাম খেলতে পারেন, আপনারা চাইলে গান করতে পারেন। আপনি যদি নাচতে পারেন তাহলে সকলকে নাচ দেখিয়ে তাক লাগিয়ে দিন। আরেকটা ভালো কাজ হল হাল্কা ঘর গুছানো। সবার মধ্যে গুছানোর কাজ ভাগ করে দিন। আর বাচ্চা থাকলে তাকে নিয়ে খেলা করতে পারেন।
দেখলেন তো, বাড়ির সকলকে নিয়ে সময়টা কি সুন্দর কেটে গেল! আসলে সকলে একসঙ্গে যেখানে থাকবে সেখানেই মজা করা যায়। বাইরে না যাওয়ার মন খারাপ আর থাকে না।
মন্তব্য করুন