শ্যামবাজারের পাঁচমাথার মোড়ে গোলবাড়ির কষা মাংস খেতে অনেকেই নিশ্চয় ভিড় জমিয়েছেন কখনও না কখনও। কিন্তু বাড়ির হেঁশেলে কি এমন স্বাদ-গন্ধ-বর্ণ আনা সম্ভব? অবশ্যই সম্ভব।
আর তার জন্য আজ আপনাদের জন্য রইল গোলবাড়ির স্পেশাল মটন কষার রেসিপি।
উপকরণ:
খাসির মাংস – ৫০০ গ্রাম
ম্যারিনেশনের জন্য:
- কাঁচা পেঁপের রস – ২ চামচ
- আদা-রসুন -শুকনো লঙ্কা বাটা – ১ টেবিল চামচ
- সর্ষের তেল – দেড় টেবিল চামচ
দইয়ের মিশ্রণ:
- দই (২ টেবিল চামচ)
- ধনে গুঁড়ো ১ চা-চামচ
- হলুদ গুঁড়ো আধ চা চামচ
- কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো ১ চা-চামচ
- ভাজা পেঁয়াজ (বেরেস্তা)
- ২টি ছোট পেঁয়াজ
রান্নার জন্য:
- পেঁয়াজ বাটা ১ কাপ
- আদা-রসুন-কাঁচা লঙ্কা বাটা- ১/২ টেবিল চামচ
- দইয়ের মিশ্রণ
- মশলার মিশ্রণ- ১ টেবিল চামচ
- ভাজা পেঁয়াজ বাটা- ৩/৪ টেবিল চামচ
- ম্যারিনেট করা খাসির মাংস
- নুন- স্বাদমতো
- চিনি – ১/২ চা-চামচ বা স্বাদ অনুসারে
- চায়ের লিকার- ১ টেবিল চামচ (২ টেবিল চামচ জল এবং ১/২ টেবিল চামচ চা দিয়ে লিকারটা প্রস্তুত করে নিন)
- ঘি/মাখন – ১/২ চা-চামচ
- রান্নার জন্য সর্ষের তেল
মশলার মিশ্রণ বানাতে লাগবে:
- শুকনো লঙ্কা ৩ বা ৪টি
- স্টার অ্যানিস ২
- ছোট এলাচ ৪/৫টি
- বড় এলাচ ১ টি
- লবঙ্গ ৮ থেকে ১০টি
- দারচিনি ২ মিডিয়াম স্টিক
- জৈত্রী ১টি পাপড়ি থেকে ১টি স্ট্রান্ড
- জায়ফল পুরোটার ১/৪ অংশ
- তেজপাতা ২-৩টি
- গোলমরিচ ৯-১০টি
প্রণালী
প্রথমে খাসির মাংসটি ভালো করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিতে হবে। আপনারা খাসির মাংসটি মাঝারি মাপের করে কাটিয়ে আনবেন। এবার মাংসটা ম্যারিনেশনের জন্য একটি বোলে মাংস নিয়ে, তার মধ্যে একে একে পেঁপের রস, আদা-রসুন-শুকনো লঙ্কা বাটা এবং সর্ষের তেল দিয়ে হাতের সাহায্যে ভালো করে মাংসটাকে ম্যারিনেট করে নিন, যাতে সবজায়গায় মশলা ভালোভাবে লাগে। এবার বোলের মুখটা কিচেন ব়্যাপ বা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দিয়ে ঢেকে ৩-৪ ঘণ্টার জন্য ফ্রিজে রেখে দিন।
এবার অন্যদিকে মশলা তৈরির সমস্ত উপকরণগুলি একটি শুকনো তাওয়ায় ড্রাই রোএস্ট করে গুঁড়ো করে নিন। বেশি ভাজবেন না। হালকা গন্ধ বেরলেই নামিয়ে মিক্সিতে গুঁড়ো করে নিন। তবে গোলবাড়িক কষা মাংস যারা টেস্ট করেছেন তারা জানেন এর গ্রেভিটা একটু দানা দানা থাকে। এরকম টেক্সচার আনার জন্য আপনারা দারচিনি, ছোট এলাচ এবং তেজপাতাটাকে একটু আলাদা করে শিলে পিষে নিন। তবে আপনাদের হাতে সময় কম থাকলে আপনারা সব মশলা একসঙ্গেও গুঁড়ো করে নিতে পারেন।
এবার অন্য একটি পাত্রে দই নিয়ে তার মধ্যে একে একে ধনে গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে দইটা ফেটিয়ে নিন, যাতে দিতে কোনও লাম্প না থাকে।
বেরেস্তা বানানোর জন্য একটা কড়াইয়ে সর্ষের তেল গরম করে তার মধ্যে পেঁয়াজ কুচিটা দিয়ে গোল্ডেন ব্রাউন করে ভেজে নিন। খেয়াল, রাখবেন পেঁয়াজ যেন পুড়ে না যায়। পেঁয়াজ ভাজার পর তা ঠান্ডা করে বেটে নিন। এই বেরেস্তার ব্যবহারটা আবশ্যিক, এর জন্যই কিন্তু কষা মাংসের মঙ গাঢ় বাদামী রঙের হবে।
আঁচ একদম কমিয়ে এই তেলের মধ্যে দিয়ে দিন পেঁয়াজ বাটা। এবার পেঁয়াজটা কষিয়ে নিন ৩-৪মিনিটের জন্য। এবার এর মধ্যে আদা, রসুন, কাঁচা লঙ্কা বাটা দিয়ে আরও ২মিনিট মতো কষিয়ে নিন। যাতে এর কাঁচা ভাবটা চলে যায়। এবার এর মধ্যে দিয়ে দিন আগে থেকে বানিয়ে রাখা ফেটানো টক দইয়ের মিশ্রণটা এবং তাতে দিয়ে দিন খানিকটা জল। এই সময় আঁচ একদম বাড়াবেন না এবং টানা খুন্তি দিয়ে নাড়তে থাকুন, যাতে দইটা মশলার সঙ্গে মিশে যায়। মিশিয়ে নেওয়ার পর এর মধ্যে দিয়ে দিন আগে থেকে গুঁড়ো করে রাখা মশলাটা এবং বেটে রাখা বেরেস্তাটা। এবার গোটা মিশ্রণটি ভালো করে কষিয়ে নিতে হবে, যা এই রান্নার জন্য বিশেষভাবে জরুরি। এর জন্য ধৈর্য ধরে কম আঁচে মশলাটা ভালোভাবে কষাতে থাকুন, যতক্ষণ না মশলা থেকে তেল বেরচ্ছে এবং একটা গাঢ় বাদামী রঙ আসছে।
যদি মনে হয় মশলাটা ড্রাই হয়ে যাচ্ছে তাহলে একটু করে জলের ছিটে দিয়ে কষিয়ে নিন। এবার মশলা থেকে তেল ছাড়তে শুরু করলে এর মধ্যে ম্যারিনেট করা মাংসটা দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার ফ্লেমটা হাই করে ঢাকা দিয়ে কিছুক্ষণ রান্না হতে দিন, তবে দেখবেন তা যেন পুড়ে না যায়। এরপর মাংসটা আরও একটু নাড়াচাড়া করে ১০-১৫ মিনিটের জন্য আবার লো ফ্লেমে ঢাকা দিয়ে রান্না করে নিন।
এরপর মটন থেকে একটু জল বের হলে এর মধ্যে দিয়ে দিন স্বাদমতো নুন ও চিনি। এরপর ফের ঢাকা দিয়ে ৩০-৪০ মিনিট মতো দমে রান্না করে নিতে হবে। মনে রাখতে হবে এই রান্নাটা কিন্তু লো ফ্লেমে সময় নিয়ে রান্না করলেই একদম গোলবাড়ির মতো চেক্সচার আসবে। এরপর মটন যখন ৮০ শতাংশ সেদ্ধ হয়ে যাবে তখন এর মধ্যে দিয়ে দিন চায়ের লিকার। এবার আবারও লো ফ্লেমে রেখে ১০ মিনিটের জন্য ঢাকা দিয়ে রান্না হতে দিন।
মটন শেদ্ধ হয়ে আসার পর শেষবার গ্যাসের আঁচটা এক মিনিট মতো বাড়িয়ে দিন। এবার গ্যাস বন্ধ করে এর মধ্যে দিয়ে দিন ঘি। এরপর গ্যাসের ওপরেই ঢাকা দিয়ে রেখে দিন মিনিট সাতেক। আপনার গোল বাড়ি স্টাইল কষা মাংস রেডি। পরিবেশন করতে পারেন পরোটা বা রুটির সঙ্গে।
Pintu Mohan Kundu
Good &easy process.
সুদর্শন দাস
দারুণ ব্যাপার, বালুরঘাট এর তরুণরা ম্যানেজার যখন ছিল তখন প্রায় যেতাম। কষা মাংস মানে গোলাবাড়ি যে খেয়েছে সে বার বার যাবে।এখন আর যাওয়া হয় না।
চৈতালী রায়
করে দেখবো।
TANU DAS
Khub miss korchi like this
Harsha Dasgupta
রান্নার আগে স্বাদ বুঝেছি