ওয়্যাক্সিং করার পর বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় আমাদের। সমস্যা আরও বাড়ে যখন সেই সমস্যার কোনও সমাধান আমরা জানি না। আজকের আর্টিকেলে তাই বলব কী কী সমস্যা সাধারণত হয় আপনাদের ওয়্যাক্সিং করতে গেলে আর তার কী সমাধান ঘরে বসেই আপনারা করতে পারেন।
১. অতিরিক্ত ওয়্যাক্স পড়ে গেলে
অনেক সময়ে ঘরে ওয়্যাক্স করতে গেলে অতিরিক্ত লিকুইড ওয়্যাক্স গায়ে পড়ে যায়। আর সেটা অনেক সময়ে এমন জায়গায় পড়ে যেখানে আমরা চাইনি ওয়্যাক্সিং করতে। কিন্তু তাড়াতাড়ি লিকুইড ওয়্যাক্স না সরালে তো ওই জায়গার লোম উঠে আসবে। এতে আপনাকে দেখতে খারাপ লাগতে পারবেন।
এই সময়ে দুশ্চিন্তা না করে সহজ একটি কাজ করুন। যে জায়গায় অতিরিক্ত লিকুইড ওয়্যাক্স পড়েছে, সেই জায়গায় কয়েক ফোঁটা তেল দিয়ে রাখুন। এবার হয় আপনি একটা পরিষ্কার পেপার স্ট্রিপ দিয়ে অতিরিক্ত লিকুইড ওয়্যাক্স মুছে নিন, সেটা সহজে উঠে যাবে। আর নয়তো দুই আঙুলের মাঝে ওই জায়গায় লোম তুলে ধরুন যাতে লিকুইড ওয়্যাক্স আলগা হয়ে যায়। এভাবে এই সমস্যার সমাধান সহজেই হয়ে যায়।
২. ওয়্যাক্স যখন লেগে থাকে
পেপার স্ট্রিপ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও অনেক সময়ে ওয়্যাক্স লেগে আছে দেখা যায়। ঠিক ভাবে সবটা হয়তো ওঠে না। বেশ কিছু কারণে এটা হয়। হয় আপনার স্কিন বা ত্বকের তাপমাত্রা বেশ ঠাণ্ডার দিকে যে খুব তাড়াতাড়ি ওয়্যাক্স শুকিয়ে গেছে।
আর নয়তো আপনি খুব মোটা করে ওয়্যাক্স লাগিয়েছিলেন, যা একবারের পেপার স্ট্রিপের টানে ওঠেনি। বা আপনার স্কিন যদি খুব ড্রাই হয়, তাহলেও ওয়্যাক্স তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায় বা স্কিন টেনে নেয়। তো এই অবস্থায় কী করবেন! লিকুইড ওয়্যাক্স পাতলা করে লাগান স্কিনে যাতে একবারের টানে সেটা উঠে যায়।
যদি ড্রাই স্কিনের জন্য এই সমস্যা হয় তাহলে আগে কয়েক ফোঁটা তেল দিয়ে নিন ওই অংশে। আর সবও সময়ে মনে রাখবেন, ওয়্যাক্সিং করার সময়ে চামড়া টানটান রাখবেন। নয়তো এই সমস্যা বারবার হবে।
৩. ওয়্যাক্স যদি ঠিক মতো না শুকায়
অনেক সময়ে দেখা যায় আপনার লিকুইড ওয়্যাক্স ঠিক ভাবে লোমের ওপর বসছে না। মানে ঠিক সেট হচ্ছে না লোমের ওপর। বর্ষাকালে বা শীতকালে অনেক সময়ে এই সমস্যা হতে পারে। শুকোতে দেরী হতে পারে। তখন আপনি কী করবেন?
একটা পাতলা কাপড় নেবেন। সেটা ঠাণ্ডা জলে চুবিয়ে নেবেন। যদি পারেন বরফ ভেজানো জলেও চুবিয়ে নিতে পারেন। এবার ভালো করে চিপে ওই ওয়্যাক্স লাগানো জায়গার ওপর দিয়ে দিন। এতে গরম লিকুইড ওয়্যাক্স তাড়াতাড়ি ঠাণ্ডা হয়ে শুকিয়ে আসবে।
৪. ছোট লোম তুলতে যত ঝক্কি
বড় বড় লোম তো সহজেই উঠে যায়। কিন্তু অনেক সময়ে আপনি দেখেন, লিকুইড ওয়্যাক্স তোলার পরেও কিছু ছোট লোম ওঠেনি। এই সমস্যা খুবই কমন। এই ছোট লোমগুলোর ঠিক ওপরে ওপরে অল্প অল্প করে লিকুইড ওয়্যাক্স দিন। শুকিয়ে গেলে চামড়া ধরে টানটান করে তারপর তুলুন এই ছোট লোম। এতে হয়তো খানিক লাগবে, কিন্তু ওই ছোট লোম উঠে আসবে।
৫. লাল দাগ আর জ্বালা
ওয়্যাক্সিং করার পর এই সমস্যা সবাইকে খুব ভোগায়। ওয়্যাক্সিং করতে গেলেই ভয় লাগে এই জন্য। কিন্তু তা বলে তো ওয়্যাক্সিং বন্ধ রাখা যায় না! বাড়িতে অ্যালোভেরা গাছ থাকলে সেই গাছের একটি পাতা ছিঁড়ে নিন। সে পাতা থেকে রস বের করে লাল হওয়া জায়গায় দিন। অ্যালোভেরার ঠাণ্ডা রস লাল হওয়া কমাবে, সঙ্গে জ্বালাও। কিন্তু দোকান থেকে কেনা অ্যালোভেরা জেল এখানে দিলে হবে না। অ্যালোভেরা গাছ না থাকলে কোনও সমস্যা নেই। দোকান থেকে টি ট্রি এসেনশিয়াল অয়েল কিনে আনুন। এই তেল ওয়্যাক্সিং হয়ে গেলেই কয়েক ফোঁটা দিয়ে দিন ওই অংশে। খানিক অপেক্ষা করলেই বুঝবেন কতটা ঠাণ্ডা অনুভব হচ্ছে। আপনি বেশ আরাম পাবেন এতে।
অ্যাপেল সিডার ভিনিগারের প্রয়োগ
এটি আমাদের অনেকের বাড়িতেই আজকাল থাকে। অ্যাপেল সিডার ভিনিগারও কিন্তু ওয়্যাক্সিং করার পরের র্যাশ, জ্বালা এ সব থেকে মুক্তি দেয়। এটি আসলে ন্যাচারাল অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে।
উপকরণ:
কয়েকটি তুলোর বল, পরিমাণ মতো অ্যাপেল সিডার ভিনিগার
পদ্ধতি:
ওয়্যাক্সিং করার পর তুলোর বলে কয়েক ফোঁটা অ্যাপেল সিডার ভিনিগার নিয়ে নিন। ওয়্যাক্সিং করা জায়গার ওপর থুপে থুপে দিয়ে দিন। ঘষে ঘষে লাগাবেন না। এটা রেখে দিন, তুলতে হবে না। লাগাবার খানিক পরই দেখবেন আরাম পাচ্ছেন।
এবার তাহলে ওয়্যাক্সিং করার সাধারণ সমস্যাগুলো আপনাকে আর চিন্তায় ফেলবে না আশা করি। নিশ্চিন্তে ওয়্যাক্সিং করুন আর সুন্দর দেখতে হয়ে উঠুন।
Shreyoshi Sneha
I have a hair problem